প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
গত এক দশক ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প চরম মন্দাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভাল মানের সিনেমার অভাবে দর্শক হলবিমুখ হয়ে পড়েছে। হল মালিকরা লোকসানের মুখে পড়ছে। অসংখ্য সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ১৫০০ সিনেমা হল থেকে ১৭৪ সিনেমা হলে এসে ঠেকেছে। এ অবস্থার মধ্যে ১২ এপ্রিল থেকে সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে হল মালিক সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। তাদের অন্যতম দাবী বিদেশি সিনেমা মুক্তি দেয়ার সহজ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা। এতে দর্শক হলমুখী হবে এবং সিনেমা হলগুলো বেঁচে থাকবে। এ নিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গণে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিতর্কটি বহুদিনের পুরনো হলেও হল বন্ধের ঘোষণায় নতুন করে তা চাঙা হয়ে উঠেছে। চলচ্চিত্রাঙ্গণের বিভিন্ন সংগঠন হল মালিকদের দাবীর বিরোধিতা করছেন। তাদের যুক্তি বিদেশি সিনেমা এনে হলে চালালে দেশের চলচ্চিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এ বিতর্ককের মধ্যে কথা বলেছেন, প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও মধুমিতা হলের মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা ভাবছেন বা বলছেন হল মালিকরাই সব খেয়ে ফেলছে তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখতে চাই, তাহলে দিন দিন হল সংখ্যা কমছে কেন? হল মালিকরা কেন বাধ্য হচ্ছেন ইজারা দিতে তাদের হল? তিনি বলেন, যাদের চিন্তা চেতনায় ভালো সিনেমার বদলে টেলিফিল্ম বানিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে চালানো তাদের ব্যাপারে আমার বা আমার সংগঠনের বক্তব্য নেই। শুধু এতটুকু বলবো, স্টাডির অভাবে ভালো সিনেমা ও নির্মাতা তৈরি হচ্ছে না। তবে কিছু নতুন মুখ ভালো ভালো সিনেমা বানিয়ে ফেলছেন। নাম-ধামও তাদের হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে পরিচালক সমিতিকে দেখেছি উন্নাসিক হতে। কেউতো তাদের পৃষ্টপোষকতা করছেন না। তাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করছে না। তাদের সুযোগ দিলে তারাই হয়তো একদিন- খান আতা, জহির রায়হান, কামাল আহমেদ, সুভাষ দত্ত, আমজাদ হোসেন, চাষী নজরুল কিংবা শেখ নিয়ামত আলীর মতো নির্মাতা হতে পারতেন। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তারা চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে পারছে না। ফলে ভালো গল্পের সিনেমার যেমন অভাব দেখা দিচ্ছে, তেমনি নির্মাতাও তৈরি হচ্ছে না। আবার এমনসব সিনেমা তৈরি হচ্ছে, যেগুলো দর্শক টানতে ব্যর্থ হচ্ছে। দর্শক উপযোগী সিনেমা নির্মাণ সংখ্যা বছরে এক-দুইটির বেশি হচ্ছে না। এ দিয়ে তো আর সিনেমা হল টিকিয়ে রাখা যায় না। এখন বড় পরিসরে সিনেমা নির্মিত হচ্ছে না। যে কয়েকটা হয়েছিল সেগুলোর সবগুলো প্রায় যৌথপ্রযোজনার। সেগুলো ব্যবসাও করেছে। কিন্তু যৌথপ্রযোজনায় যে নিয়ম তাতে অনেক প্রযোজক এখন আর যৌথপ্রযোজনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আমারও ইচ্ছা ছিল ২০১৯ সালে অন্তত বিগ বাজেটের যৌথ প্রযোজনার দুইটি সিনেমা নির্মাণের। কিন্তু যৌথপ্রযোজনার নিয়মের কারণে এগুতে পারছি না। আশায় আছি, যদি বিশ্বায়নের দিকে তাকিয়ে নীতিমালা সহজ করা হয় তখন হয়তো আঁটঘাট বেধে নামবো। নির্দিষ্টভাবে আপনি হিন্দি সিনেমা আমদানির কথা কেন বলছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নওশাদ বলেন, দেখুন, আমি জানতে পেরেছি পরিচালক সমিতির মধ্যে স্টার জলসা, স্টার, জি ম্যাক্স চালানো হয়, সেখানে কদাচিৎ ইংরেজি মুভি দেখেন আমাদের নির্মাতারা। যদি তারা ওখানে কলকাতার বাংলা নাটক (যা নিয়ে খোদ কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আপত্তি রয়েছে) হিন্দি সিনেমায় বুঁদ হয়ে থাকতে পারেন তবে ট্যাক্স দিয়ে এখানে হিন্দি সিনেমা চললে সমস্যা কোথায়? কলকাতার বাংলা সিনেমা চললে ক্ষতি কোথায়? ভুলে গেলে চলবে না আমাদের নির্মাতারাই কিন্তু কলতাকা, করাচি, বোম্বের (মুম্বাই) সঙ্গে টক্কর দিয়ে সিনেমা বানাতো। তখনও কিন্তু আমাদের দর্শক হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছে। এ কারণেই, খান আতা, এহতেশাম, জহির রায়হানদের নাম সোনালী হরফে লেখা। তারা চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছিলেন। প্রযোজকরাও সমানভাবে এগিয়ে এসেছিলেন। তবে সিনেমা আমদানির আনুপাতিক হার নিয়ে কথা হতে পারে। অন্যান্য ভাষার সিনেমাও আসতে পারে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, চলচ্চিত্রের বড় সংগঠন প্রযোজক সমিতি অকার্যকর হয়ে পড়ায় চলচ্চিত্র আজ চরম দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবারই পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকেছে। চলচ্ছিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন। আমরা তাদের সহায়ক হিসেব কাজ করতে পারি। পরিচালক বা শিল্পী সমিতিও সহায়ক হিসেবে ভ‚মিকা রাখতে পারে। চলচ্চিত্র শিল্পের সংকট নিয়ে তাদের উচিৎ সবার সঙ্গে বসা। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হয়। তারা সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারে। দেশে যদি মানসম্পন্ন সিনেমা হয় তবে বিদেশী সিনেমা দর্শকই এক সময় বিদায় করে দেবে। চলচ্চিত্রের আরেক বড় সমস্যা শিল্পী সংকট। এ সংকট উত্তরণে নওশাদ ‘নতুন মুখের সন্ধান’ কার্যক্রমের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, নতুন মুখের সন্ধানে থেকেই অনেক বড় বড় তারকার জন্ম হয়েছে। ভাল গল্প ও নির্মাণের সঙ্গে প্রতিভাধর নতুন শিল্পীও দরকার। ই-টিকিটিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই ই-টিকিটিং চালু হোক। প্রযোজকরা চাইলেই সরকার দ্রুত এসবের ব্যবস্থা করতে পারে। ই-টিকিটিং হলে প্রযোজকও যেমন লাভবান হবেন তেমনি হল মালিকরাও হবেন। ১২ এপ্রিল থেকে হল বন্ধ হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন, কষ্টটা আমাদেরও কম না। আমরাও ইন্ডাস্ট্রির অংশ। এটাকে কেবল ব্যবসা হিসেবে দেখলে অন্যভাবেও কোটি কোটি টাকা আয় করা যায়। কিন্তু ফিল্মের প্রতি আত্মার টানকে তো আর অস্বীকার করতে পারি না। আমরা আমাদের দাবী তুলে ধরেছি এখন প্রযোজক বা সরকারিভাবে কোন পক্ষ যদি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় তবে আমরা সাড়া দেব। আলোচনা থেকেই প্রকৃত সমাধান আসবে বলে বিশ্বাস করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।