Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধন ছাড়া মাছের খামার করা যাবে না

নিউজিল্যান্ডে হামলা : মন্ত্রিসভার শোক প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ বাংলাদেশিসহ ৫০ জন নিহতের ঘটনায় শোক ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনটি আইন অনুমোদন এবং নিহতের ঘটনায় শোক ও নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এ ছাড়া মাছের খামারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে একটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৯ এবং বাংলাদেশ বাতিঘর আইন-২০১৯ এর খসড়ার চূড়ান্ত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার শুরুতে নিউজিল্যান্ডে ৫ বাংলাদেশিসহ ৫০ জন নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, একই সঙ্গে এ হামলার ঘটনায় মন্ত্রিসভা নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে জুমার নামাজ আদায়কালে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় বন্দুকধারী এক সন্ত্রাসী। হামলায় নিহত ৫০ জনের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০ জন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, মান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই আইন করা হচ্ছে। ১৯৮৩ সালের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে চলছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সামরিক শাসনামলে প্রণীত আইনগুলোকে নতুন করে বাংলায় করা হচ্ছে। মৎস্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সকল প্রকার কোমল ও কঠিন অস্থি বিশিষ্ট মৎস্য, স্বাদু ও লবণাক্ত পানির চিংড়ি, উভচর জলজপ্রাণী, কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী, শামুক, ঝিনুক, ব্যাঙ এবং এসব জলজ প্রাণীর জীবন্ত কোষকে মৎস্য হিসেবে গণ্য করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাছ রপ্তানিতে নানা রকম সমস্য হয় কোয়ালিটি নিয়ে। এ জন্য আইনকে হালনাগাদ করা হয়েছে। মৎস্য ও মৎস্যপণ্যে ভেজাল, অপদ্রব্যের মিশ্রণ ও অনুপ্রবেশ করানো এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগে আমাদের উদাহরণ আছে চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য পেরেক ঢুকানো হয়েছে বা জেলি বা সাগু তরল করে ঢোকানো হয়েছে, এগুলো আমাদের জন্য খুব অমর্যাদার। এগুলো যাতে না করতে পারে সেজন্য আইনে বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে মৎস্যপণ্য যে স্বাস্থ্যকর সেই সনদ ছাড়া মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে মৎস্য খামার স্থানীয় উপযুক্ত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে। মৎস্য খামার চালাতে গেলে নিবন্ধন লাগবে। খামার পর্যায়ে ব্যবহার নিষিদ্ধ ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। তিনি বলেন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় ফ্রেশ মাছ প্রক্রিয়া করতে হবে। তিনি বলেন, পচা, দূষিত, ভেজাল ও অপদ্রব্য মিশ্রিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বাজারজাত করা যাবে না। এসব পণ্য বাজারজাত করলে দুই বছর কারাদন্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আগে এই অপরাধের জন্য তিন মাস জেল, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেয়া হতো।
শফিউল আলম বলেন, আইন অমান্য করলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক বা পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করতে পারবেন। দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধ করলে সাজা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স না নিয়ে মানুষের খাদ্য হিসেবে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তবে সরকার প্রয়োজনে গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে নির্ধারিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করার এক বা একাধিক শর্ত থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ইক্ষু গবেষণা আইনের মাধ্যমে এ সেক্টরটি এত দিন চলেছে। আগে শুধু ইক্ষু দিয়ে চিনি উৎপাদন করা হতো। এখন ইক্ষু ছাড়াও তাল, গোলপাতা ইত্যাদি দিয়েও চিনি উৎপাদিত হচ্ছে। যদি শুধু ইক্ষু আইন রাখা হয়, তাহলে অন্য উপাদানগুলো নিয়ে গবেষণা করা হবে না। সুগার ক্রপ আইনের মাধ্যমে যেসব শস্য দিয়ে চিনি তৈরি হয়, তার সব কিছু নিয়ে গবেষণা করা হবে। এ কারণে এর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এই আইনে বিদ্যমান কমিটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বাংলাদেশ বাতিঘর আইন ২০১৯-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এটি ১৯২৭ সালের আইন দিয়ে এত দিন পরিচালিত হয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর কর্তৃপক্ষ এই বাতিঘর পরিচালনা করে থাকে। জাহাজ আগমন এবং প্রত্যাগমনের সুবিধার্থে বাতিঘর পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, জাহাজ আগমন এবং প্রত্যাগমনের ক্ষেত্রে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে বাতিঘর মাশুল পরিশোধ করতে হবে। মাশুল কত হবে, তা সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হবে। যে জাহাজ বাতিঘর মাশুল দেবে না, ওই জাহাজকে এই আইনের বলে আটক করা যাবে। তবে মাশুল পরিশোধ করলে জাহাজ ছেড়ে দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিউজিল্যান্ড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ