Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, এ নিয়ে ঢাকাস্থ দূতাবাস আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুটি বিষয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলন। প্রথমত নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার আপডেট জানানো। দ্বিতীয়ত: মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান।
সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয়াংশে মন্ত্রী ওই রিপোর্টের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, রিপোর্টটি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার বরাতে তৈরি হয়েছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব কোন অনুসন্ধান বা ফাইন্ডিংস ছিল না। তিনি এক বাক্যে ওই রিপোর্ট প্রত্যাখান করে বলেন, পুরো রিপোর্টটি আমি পড়েছি। সেটি অনেক বড় রিপোর্ট। কিন্তু সেখানে এমন সব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে যার সঙ্গে বাংলাদেশের কোন সম্পৃক্ততাই নেই। তাই আমি বলব, এটা বাংলাদেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই বেশি প্রযোজ্য। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অনেক উদ্যোগ নিয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে নির্বাচন নিয়ে যা বলেছে তা সত্য নয়। আমি নিউইয়র্কে ছিলাম, সেখানে দেখেছি নির্বাচনে ৭ পারসেন্ট ভোট পড়ে। আমাদের দেশে ৮০ ভাগ ভোট পড়ে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম না-কী সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে বিনা পয়সায় সরকারের প্রচারণা সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন ছাপতে না-কী বাধ্য করা হয়। এটা কতটা সত্য আপনারাই (গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা) বিচার করেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা বিজ্ঞাপনের ফি’র ভয়ে অনেক বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারিনা। মার্কিন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশির সমালোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এক স্টেট থেকে অন্য স্টেটে যেতে শুধু তল্লাশিই হয় না, গাছ এবং অন্যান্য অনেক কিছু তারা আটকে দেয়। তাছাড়া আচমকা তল্লাশি চৌকি বসিয়ে মানুষ এবং যানবাহন চেক হয়। বাংলাদেশে তাদের মত হয় না, তবে এখানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধে এবং জনমানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি হয়। এটা দোষের কিছু নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন রিপোর্টে বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে। গুয়ানতানামোবেতে কারা কিভাবে বন্দিদের ওপর নির্যাতন করেছে সারা দুনিয়া এটা জানে। মন্ত্রী বলেন, মার্কিন রিপোর্টটি ‘অবজেকটিভ’ হওয়া উচিত ছিল। মন্ত্রী আবারও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন খুবই ভাল হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়েছে বলে দাবি করেন।
ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় আক্রান্ত বাংলাদেশিদের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে যদি কোনো বাংলাদেশি ভ্রমণ করতে চায় আমরা তাদেরকে বলবো আপনারা সেটি বিশেষ বিবেচনায় সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে নিহতদের পরিচয় পাওয়া বাংলাদেশিদের লাশ ফিরিয়ে আনতে ও স্বজনদের হাতে তুলে দিতে প্রতিটি পরিবারের একজন সদস্যকে নিউজিল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হবে। নিউজিল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকেই তাদের এ খরচ বহন করা হবে। তারা চাইলে লাশ দেশে নিয়ে আসতে পারবেন।তিনি জানান, ক্রাইস্টচার্চে ১৫০ জনের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। আমাদের তিনজন কর্মকর্তা সেখানে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কোথাও কোনো কমতি নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- সিলেটের ফরিদ আহমেদরে স্ত্রী গোলাপগঞ্জের হুসনে আরা আহমেদ (৪২), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. আবদুস সামাদ (৬৬), চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মোজাম্মেল হক (৩০) ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ওমর ফারুক (৩৫) এবং নরসিংদীর জাকারিয়া ভুঁইয়া (৩৬)। তিনি বলেন, এছাড়া শাওন নামের একজন নিখোঁজ রয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কাও রয়েছে। আহতদের মধ্যে শেখ হাসান রুবেলের অবস্থা বিপদমুক্ত। এ ছাড়া আহত লিপির অবস্থা সংকটাপন্ন। তার আরও একটি অপারেশন করা প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ