Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গ্রিন হাউজের মাধ্যমে ব্রুড ও রেণু উৎপাদনে সফলতা

পাঙ্গাশ পোনার ব্যাপক চাহিদা

আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে মোঃ মনসুর আলী | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বগুড়ার সান্তাহার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রে গ্রীন হাউজের মাধ্যমে থাই পাঙ্গাসের আগাম ব্রুড তৈরী এবং কৃত্রিম প্রজননে রেণু উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা এসেছে। এ প্লাবন ভুমি উপকেন্দ্রে বিজ্ঞানীরা চার বছর যাবত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে সম্প্রতি এর ব্যাপক সফলতা এসেছে বলে জানা যায়।

বাংলাদেশে থাই পাঙ্গাস একটি জনপ্রিয় ও ব্যাপকভাবে চাষকৃত মাছের প্রজাতি। চাষের জন্য বিদেশ থেকে আনার পর বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ১৯৯০ সালে সর্বপ্রথম এই মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করা হয়। বানিজ্যিকভাবে অধিক উৎপাদনশীল এ মাছের জাতটি দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে। থাই পাঙ্গাস মেকং নদীর ক্যাটফিস গোত্রভুক্ত একটি মাছ। নব্বই এর দশকে থাইল্যান্ড থেকে আনা পাঙ্গাসিয়াস সূচির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ব্যাপক পোনা উৎপাদন করে পুকুরে চাষ করা হয়। বর্তমানে দেশব্যাপী প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জলাশয়ে একক প্রজাতি হিসেবে পাঙ্গাসের মোট উৎপাদন ৩.১৭ লাখ মেঃ টন, যেটি অভ্যন্তরীন মৎস্য উৎপাদনের ১২.৫৭%। এলাকার মৎস্য চাষী ও খামারীরা পুকুরে মজুদের জন্য মে মাসের শেষের দিকে এই মাছের পোনা হ্যাচারি মালিকের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। দেরিতে পোনা পাওয়ায় চাষের জন্য বেশি সময় না পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হতে পারে না। শীত মৌসমি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পরিপক্ষ ও ডিমওয়ালা পাঙ্গাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা যায় তাহলে মার্চ মাসে পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে এবং বিক্রয় উপযোগী মাছ তৈরী করার জন্য পাঙ্গাস চাষের জন্য যথেষ্ট সময় পাবে চাষীরা। এতে তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে এবং দেশে এ মাছের উৎপদন বেরে যাবে।

এ প্রেক্ষিতে অধিক উৎপাদন ও মুনাফা অর্জনের লক্ষে গত তিন বছরে সান্তাহার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রে গবেষণা পরিচালনা করে গ্রীন হাউজ পদ্ধতিতে পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে এবারই প্রথম ফেব্রয়ারী মাসেই থাই পাঙ্গাসের আগাম ব্রুড তৈরী, রেণু পোনা মার্চ মাসেই উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছে। সান্তাহার প্লাবন ভ‚মি উপকেন্দ্রের প্রধান উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ডেভিড রিন্টু দাস বলেন সান্তাহার ও আদমদীঘির মাটি ও পানি থাই পাঙ্গাসের রেণু এবং পোনা উৎপানের জন্য উপযুক্ত এবং এখান থেকেই এই পোনা সারাদেশে সরবরাহ হয় এছাড়া পার্শ্ববতীর্ দেশ ভারতেও এর একটি বিরাট বাজার রয়েছে। এই অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষকৃত মাছের প্রজাতির মধ্যে থাই পাঙ্গাস প্রধান। এজন্যই এই গবেষণা কার্যক্রমটি এই উপকেন্দ্র থেকে পরিচালনা করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে দেশে এটি প্রথম সাফল্য। ইতোমধ্যে তিন মাস আগাম সময় বেশী পেয়ে হ্যচারী মালিকগনের মধ্যে এ বিষয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। আদমদীঘি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মো: মাহবুবুর রহমান বলেন সম্প্রতি এ প্রযুক্তিতে ব্রুড ও রেনু পোনা উৎপাদনে এ প্রজাতি মাছের চাষ বাড়বে।
আদমদীঘির মৎস্য ব্যবসায়ী বেলাল বলেন শীত মৌসমি ব্রুড ও রেনু পোনা তৈরী করা সম্ভব হতোনা সান্তাহার মৎস্য গবেষণা উপকেন্দ্রে গ্রীন হাউজের মাধ্যমে ব্রুড রেনু পোনা উৎপাদনে আমরা আগাম চাষ করে লাভবান হতে পারবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ