Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী প্রতিবন্ধী জসিম

দিরাই থেকে মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়া সত্তে¡ও সম্পূর্ণ মানসিক সাহসের উপর ভিত্তি করেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে মো. জসিম উদ্দিন (১৭)। মেধাবী প্রতিবন্ধী জসিম উদ্দিন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মো. গোলাম রব্বানী ও মোছাঃ তাহেরা বেগম দম্পতির ছোট সন্তান। তিন ভাইয়ের মধ্যে জসিম সবার ছোট। সে পাশের তেতৈয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। তার রোল নং-৬। ক্লাসে বর্তমানে ৩১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সরেজমিন ইসলামপুর জসিম উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সে হাটুর ও হাতের ওপর ভর করে চলাফেরা করছে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, জন্মগতভাবে তার শারীরিক এই সমস্যা, হাত-পা ছোট ও বাকানো, ছোট বেলায় অনেক চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্ত ভালো কোন ফল না পেয়ে অবশেষে দরিদ্র পরিবারটি উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে হাল ছেড়ে নিয়তির উপর ভরসা করে এভাবেই চলছে। তবে জসিম জানান, বর্তমানে তার শরীরে বড় ধরণের কোন রোগ নেই, আর তেমন কোন অসুখ-বিসুখও হয় না।
জসিমের মা ও বড় ভাই জানান, ছোটবেলায় তাকে কাঁধে করে বিদ্যালয় নিয়ে যাওয়া হত। বড় হয়ে যাওয়ার পর তার লেখাপড়া বন্ধ করানো হয় শুধুমাত্র আসা-যাওয়ার কারণে। প্রায় দুই বছর তার লেখাপড়া বন্ধ থাকে। কিন্তু জসিমের অদম্য স্পীহার কাছে পরিবারটি হেরে যায়। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাকে পুনরায় ভর্তি করানো হয় পার্শ্ববর্তী তেতৈয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

জসিম জানায়, বাড়ির সামন থেকে অটো গাড়িতে করে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যায়। এলাকাবাসির অনুরোধে তার গাড়ির ভাড়া মাফ করে দেয়া হয়। তাছাড়া বিদ্যালয়ের ভর্তি ফিস, পরীক্ষাসহ অন্যান্য ফিসও মাফ করে দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে সে প্রতিবন্ধী ভাতাও পাচ্ছে।
ভবিষ্যৎ স্বপ্ন কি জানতে চাইলে জসিম জানায়, ‘সে লেখাপড়া করে বড় অফিসার হতে চায়। তার পসন্দনীয় বিষয় হল বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের কোন শাখায় পড়তে চাও, এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, জীব বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে আমার ভালো লাগে।’ পরিবারের আর্থীক স্বচ্ছলতা না থাকায় আগামীর লেখাপড়া নিয়ে বেশ চিন্তিত জন্মগত প্রতিবন্ধী জসিম উদ্দিন। জসিম উদ্দিনের মা মোছাঃ তাহেরা বেগম জানান, আমাদের গ্রামের পাশের নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার পর তাকে কোথায় পড়াবো, এখন শুধুই সে চিন্তা মাথায় আসছে। কারণ, দূরে কোথাও সুবিধাজনক না হলে তার লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এজন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ