Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রংপুর পাচ্ছে গ্যাস

বাস্তবায়নের পথে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি

পঞ্চায়েত হাবিব : | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

এক হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর জেলা সফরকালে এ অঞ্চলে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এদিকে গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে এসব জেলার ডিসিদেরকে চিঠি দিয়েছে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। আগামী ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোন সময় এ প্রকল্পের উদ্ধোধন করবেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেস্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের নির্দেশে এ অঞ্চলে বিদ্যমান ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ শিল্প কারখানার পাশাপাশি নতুন শিল্পায়নের প্রসার এবং নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় দেড় বছর আগে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) প্রকৌশলীরা গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য তিনদফা পরিদর্শন করেছেন। তাদের দেয়া রূপরেখা অনুযায়ী গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। জ্বালানির অভাবে রংপুর বিভাগে গড়ে ওঠা সিরামিক শিল্পসহ নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে পাশাপাশি উত্তরা ইপিজেডে বেশ কিছু শিল্প বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গ্যাস আসলে নতুন শিল্প করাখানার পাশাপাশি ঘুরে দাাঁড়াবে রুগ্ন ও বন্ধ শিল্প কারখানা। বর্তমানে রংপুরে শিল্প-কারখানা আছে ৫১টি, উত্তরা ইপিজেডে কারখানা আছে ২৭টি। তা ছাড়া নীলফামারীতে নির্মাণাধীন সাড়ে ৩০০ একরের ইকোনমিক জোনসহ সম্ভাব্য শিল্প-কারখানার সংখ্যাও হিসাবে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া চীন সরকার সৈয়দপুর বিমান বন্দর এবং লালমনিরহাট বিমান বন্দরের কাজে বিনিযোগ করতে চায় বলে জানা গেছে।
বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে সৈয়দপুর পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন ও ভূ-উপরিস্থ অন্যান্য আনুষঙ্গিক নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে রংপুরের ৫টি উপজেলার (পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, রংপুর সদর, বদরগঞ্জ এবং তারাগঞ্জ) ৮৯টি মৌজার প্রায় ৩০৯ দশমিক ৫ হাজার ৬২৬ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট উপজেলার সহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিসিরা চিঠি দিয়েছেন। এ প্রকল্পের কাজের জন্য নভেম্বরের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। জিটিসিএল’র প্রস্তাবিত প্রায় ১৬৮ দশমিক ৫ হাজার ৫০৮ একর জমি অধিগ্রহণের চাহিদার বিপরীতে জেলা প্রশাসন থেকে তাদের কাজের সুবিধার জন্য রংপুরের ৫টি উপজেলার ৮৯টি মৌজায় ৩০৯ দশমিক ৫ হাজার ৬২৬ একর জমি অধিগ্রহণ এবং হুকুম দখলের কাজ শুরু করা হয়েছে। অধিগ্রহণকৃত জমি স্থায়ীভাবে নেয়া হবে এবং হুকুম দখলকৃত জমি কাজের সুবিধার জন্য কিছুদিন ব্যবহার করা হবে। কাজ শেষে তা ফেরত দেয়া হবে জমির মালিককে। বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন প্রকল্পের সমন্বয়ক খন্দকার আরিফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২১ সালের জুনে শেষ হবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এনামুল হাবীব ইনকিলাবকে বলেন, গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন স্থাপন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে একটি। এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ এবং হুকুম দখলের কাজ শুরু হয়েছে। রাজধানীর কাঁচাবাজারবেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম। বেড়েছে সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, মাছ ও মাংসের দাম। ক্রেতারা বলছেন, দাম বেড়ে চললেও বাজার নিয়ন্ত্রণে কেউ নেই। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে যা ছিলো ১০০-১২০ টাকা। পটল ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে ছিলো কেজি ৬০-৭০ টাকা। ঢেঁড়স, কচুর লতি, লাউ, শসা, শিম, ধুন্দুলের দামও বেড়েছে। ঢেঁড়স কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। শিম কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা যা গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে পেঁপে, বেগুন, পাকা টমেটো ও গাজর আগের মতোই ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে আলুর দাম। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বাজারভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় রসুন কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিলো ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা ও দেশি রসুন ৭০ টাকা।
শান্তিনগর বাজারে কথা হয় চাকরিজীবী আব্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, হুটহাট করেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে আমরা যাব কই? মাছ, গোশত, পেঁয়াজ, সবজি সব কিছুর দাম বাড়তি। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কিন্ত দিন শেষে আমাদের বেতন বাড়ছে না! সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী কাদের বলেন, পাইকারি বাজারে হঠাৎ মাল কম। জেলাগুলো থেকে মাল কম আসছে। পাইকারিরা বেশি দাম হাঁকাচ্ছে। আমাদেরও ব্যবসা করতে হয়, তাই বেশি দাম দিয়ে হলেও কিনতে হয়। ক্রেতাদের সঙ্গে বেশি দাম নিয়ে ঝগড়াও হয়। ব্যবসা করি তাই কেউ কিছু বললেও কিছু মনি করি না। তবে দাম বাড়লে কেনাবেচা কম হয়। তাই আমাদেরও ক্ষতি হয়।
এদিকে মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের বাজারও গরম। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিলো ১২০-১৫০ টাকা। ৩০-৫০ টাকা বেড়ে পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রুই আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিলো ২৫০-৪০০ টাকা। এছাড়া কেজি ১০০ টাকার বেশি বেড়েছে পাবদা, টেংরা, শিং, বোয়াল ও চিতল মাছে। পাবদা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছের ক্রেতা ক্রেতা মফিদুল ইসলাম বলেন, মাছ কিনতে এসেছি, কিন্ত সব মাছের দাম বেশি। গত সপ্তাহে টেংরা মাছ কিনেছি ৬০০ টাকায়, এখন সেটা ৭০০ টাকা। এতো দাম বাড়লে আমরা কি করে কিনব? অন্য মাছের দামও বাড়ছে। তাই মাছ আর কেনা হলো না। মাছ ব্যবসায়ী হুমায়ুন বলেন, কাওরানবাজারে যে মাছ গত সপ্তাহে কিনেছি কেজি ৫০০ টাকা। আজ সেই একই মাছ কিনেছি ৭০০ টাকা। আমরা কি করব বলেন? এরপরও অন্যান্য খরচও আছে। সব মিলিয়ে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা কম দামে কিনলে তখন তো আর বেশি দামে বিক্রি করি না।
গোশতের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪৫ থেকে ১৭০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকা।
অন্যদিকে, গরুর গোশতের কেজি ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিলো ৫০০-৫২০ টাকা। তবে অপরির্তিত আছে খাসির গোশতের দাম। তা আগের সপ্তাহের মতই বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ