Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু আজ

ছয় অভয়াশ্রমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ : জেলেদের হাতে সহায়তা পৌঁছেনি

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

জাতীয় মাছ ইলিশের পোনা জাটকা নিধন বন্ধে জেলেদের উদ্বুদ্ধকরণে আজ থেকে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’ পালিত হচ্ছে। ভোলার চরফ্যাশনে সামরাজ ঘাটে আজ (শনিবার) এ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খশরু। মৎস্য সচিবের সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মেঘনা নদীতে নৌ-র‌্যালিরও আয়োজন করা হয়েছে।

মৎস্যবিজ্ঞানীদের সুপারিশের আলোকে জাটকা সংরক্ষণে গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে জাটকা আহরণ, পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকছে। এ সময়ের মধ্যে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ল²ীপুর ও চাঁদপুরের ৬টি এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরই আওতায় ১ মার্চ থেকে বরিশাল, ভোলা, ল²ীপুর ও চাঁদপুরের নিম্ন মেঘনা, শাহবাজপুর চ্যানেল ও তেঁতুলিয়া নদীতে এবং শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলাসহ দক্ষিণে চাঁদপুরের মতলব ও শরীয়তপুর উপজেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে অবস্থিত পদ্মা-মেঘনার ৪টি এলাকার অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে।

আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকছে। মৎস্যবিজ্ঞানীদের সুপারিশে সরকার এবারই প্রথমবারের মতো বরিশালের হিজলা উপজেলার নাছকাটি, হরিনাথপুর, ধুলখোলা পয়েন্ট এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাসানচর পয়েন্ট এলাকার মেঘনার শাখা নদী, হিজলা উপজেলার ধর্মগঞ্জ ও নয়া ভাঙনী নদী এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার লতা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশ ও জাটকার ৬ষ্ঠ অভআশ্রম হিসেব ঘোষণা করেছে। দেশের ষষ্ঠ এ অভয়াশ্রমেও আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীতে গত নভেম্বর-জানুয়ারি মাসের সময়কালে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।
তবে গত ১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস জাটকা আহরণ, পরিবহন এবং বিপণনে নিষেধাজ্ঞা বলবৎকালীন সময়ে বেকার জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনে এবার কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। পাশাপাশি নভেম্বর থেকে জাটকা আহরণ বন্ধ হলেও খাদ্য সহায়তা দেয়ার কথা মার্চ থেকে। কিন্তু ফেব্রæয়ারির শেষভাগে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৪ মাসের জন্য খাদ্য সহায়তা মঞ্জুরি অনুমোদন করা হলেও বেশির ভাগ বেকার জেলেদের কাছে এখনো কোনো চাল পৌঁছেনি। দেশের উপক‚লীয় ১১২টি উপজেলার ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬২টি জেলে পরিবারকে এবার ৪০ কেজি করে চার মাস চাল প্রদান করার সুপারিশ ছিল মৎস্য অধিদপ্তরের।
ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ফেব্রুয়ারির শেষভাগে চাহিদার প্রায় অর্ধেক চালের বরাদ্দপত্র পৌঁছেছে বরিশালসহ উপক‚লীয় জেলাগুলোতে। এবার বরিশাল বিভাগের নিবন্ধিত প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার ইলিশ জেলে পরিবারের মধ্যে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৮৭ পরিবারের জন্য ৪০ কেজি করে ২০ টনের কিছু বেশি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। ফলে এ বিভাগে ১ লাখ ৯০ হাজার জেলে পরিবার এবারো খাদ্য সহায়তার বাইরে থাকছে। অনুরূপ চিত্র গোটা উপক‚লীয় এলাকাতেই। সারা দেশে গত বছর যে প্রায় ৫ লাখ টন ইলিশ আহরিত হয়েছে, তার ৬০%ই পাওয়া গেছে বরিশালে বিভাগের অভ্যন্তরীণ ও উপক‚লীয় এলাকা থেকে। গত দুই দশকে বরিশাল বিভাগে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ১শ গুণেরও বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ