Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

লোহাগাড়ায় বিধবার ঘর ভেঙে দিলেন বন কর্মকর্তা

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

টাকা না পেয়ে লোহাগাড়ার এক বিধবার ঘর ভেঙে দিয়েছে বনকর্মকর্তা। গত বুধবার চুনতী ইউনিয়নের সাতগড় এলাকার মাস্টারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিধাব শাহিন আক্তার জানান, শত বছর ধরে তাদের পরিবারের পূর্বপুরুষরা এ জায়গায় বসবাস করে আসছেন। ১১ বছর আগে তার স্বামী আহমদ কবির মারা যান। ৩ ছেলের মধ্যে একজন জটিল রোগাক্রান্ত। তাকে প্রতিমাসে রক্ত দিতে হয়। দিনমজুরি ও বাড়ি বাড়ি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি সেমিপাকা বাড়ি তৈরি করে বিধবা শাহিন। বাড়ির কাজ প্রায় শেষ হলে বনবিভাগ থেকে লোক এসে ষাট হাজার টাকা দাবি করে। শাহিন আক্তার এই টাকা দিতে অপারগতা জানালে গত বুধবার ১৫/১৭ জন লোক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতুড়ি বল্লম দিয়ে ঘরের দেয়াল ভাঙতে থাকে। এসময় শাহিন আক্তার ও তার পুত্রবধু পারভিন আক্তার ফরেস্ট অফিসারের পায়ে পড়লেও কর্ণপাত করেনি। এরপর তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের শরনাপন্ন হলে তিনিও তাতে হস্তক্ষেপ করেননি বলে জানিয়েছেন শাহিন আক্তার।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চুনতী ইউপি চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন জনু বলেন, ‘বনবিভাগের জায়গায় বাড়ি করলে কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে টাকা-পয়সা দিতে হয়। এই মহিলা টাকা দেয়নি তাই হয়তো ঘরটি ভেঙে দিয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে চুনতী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের বিট কর্মকর্তা এটিএম গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘বনবিভাগের জায়গার ওপর ঘর তৈরি করায় সেই ঘর ভেঙে দিয়েছি। এটি আইনত বৈধ।’
টাকা চাওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করে সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘সত্যি বলতে কি, ওইদিন ঘর ভেঙে দিয়ে আসার পর আমারও খারাপ লেগেছে। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। উর্দ্ধতন অফিসারদের নির্দেশেই আমাদেরকে কাজটি করতে হয়েছে। ওরা বাড়ি তৈরি করেছিল বন বিভাগের জায়গায়।’

এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ঘর তৈরি করার আগেই বাধা দিলে একটা কথা ছিল। ব্যাংক লোন নিয়ে নির্মাণ করা এই অসহায় পরিবারের ঘর ভেঙে দেয়া অত্যন্ত অমানবিক। বনবিভাগের জায়গার উপর অনেকেই ঘর তৈরি করে যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে। তাদের কাউকে কিছু না বলে বিধবা মহিলার ঘর ভেঙে দেয়া অত্যন্ত দুঃখজনক কাজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ