Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কেমিক্যাল থেকেই আগুন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কিংবা বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের শুরু নয়। আগুনের সূত্রপাত হয় ওয়াহেদ ম্যানশনের দোতলার কেমিক্যাল গোডাউন থেকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে তার দপ্তরে তদন্ত কমিটির প্রধান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি) প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে কী ধরনের কেমিক্যালের কারণে এত অল্প সময়ের মধ্যে আগুন এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তা নির্ধারণ করতে পারেনি তদন্ত দল। বিষয়টি পরিষ্কার করতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করার বিষয়ে মতামত দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
সূত্র জানায়, ২৫ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে মোট ৩১টি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদে ৫টি এবং দীর্ঘমেয়াদে ২৬টি সুপারিশ করা হয়েছে। কেমিক্যালসহ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসার লাইসেন্স কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করারও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
কমিটির বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- কেমিক্যালসহ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসার লাইসেন্স নতুন করে যেন আর ইস্যু না করা হয়। অবিলম্বে পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকার সব ধরনের কেমিক্যাল, প্লাস্টিক, পলিথিন, ব্যাটারি, জুতা, নকল ওষুধ ও প্রসাধন তৈরির কারখানাসহ ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল কারখানা ও গোডাউনের তালিকা তৈরি করা। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব এসব কারখানা এবং গোডাউনের সংখ্যা ও জনঘনত্ব বিবেচনায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ বা স্বল্প ঝুঁঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। অগ্নিকান্ডে নিহত ও আহত ব্যক্তি ও পরিবারকে সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয় স্বল্পমেয়াদি সুপারিশে। এ ছাড়া পুরান ঢাকার অবৈধ, অননুমোদিত এবং লাইসেন্সবিহীন কারখানার তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করতে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- জরুরি ভিত্তিতে পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল কারখানা ও গুদামসহ সব ধরনের ঝুঁঁকিপূর্ণ গুদাম বা কারখানা সরিয়ে নেয়া। পাশাপাশি অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ ও ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করা। রাসায়নিক দ্রব্যের মজুদ, বাজারজাত এবং বিক্রির জন্য যেসব লাইসেন্স দেয়া হয়েছে তাদের কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটর করা।
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ৬৭ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। পরে হাসপাতালে মারা যান আরো চারজন। অগ্নিকান্ডের পর দুই দিনে ৪৮ জনের লাশ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও বাকিদের পোড়া লাশ চেনার অবস্থা না থাকায় ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ