Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বায়ুদূষণ হেলথ অ্যালার্ট জারির সুপারিশ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:১০ এএম

কোন এলাকার বাতাসে ধূলি দূষণের মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৩০০ পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) এর উপরে উঠলে হেলথ অ্যালার্ট জারি করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা ও সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) ৩০০ ছাড়িয়ে গেলে সেটা বিপদজনক। এ ধরনের পরিস্থিতি হলে অনেক দেশেই হেলথ অ্যালার্ট জারি করা হয়। আমরা দেখেছি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরে এই মাত্রা ৪০০ পেরিয়ে গিয়েছিল। এই মাত্রা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এটা হলে জনগোষ্ঠী কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে শিশুদের ওপর এর প্রভাব সব থেকে বেশি পড়ে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অনেক দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ কারণে দূষণের মাত্রা ৩০০ পেরিয়ে গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেন ‘হেলথ ইমার্জেন্সি’ জারি করে, সংসদীয় কমিটি সেই সুপারিশ করেছে বলে জানান সাবের হোসেন চৌধুরী।

বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম) পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পিপিএম-পার্টস পার মিলিয়ন) এককে। এসব বস্তুকণাকে ১০ মাইক্রোমিটার ও ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস শ্রেণিতে ভাগ করে তার পরিমাণের ভিত্তিতে ঝুঁকি নিরুপণ করেন গবেষকরা। বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে ‘মধ্যম’ মানের এবং ১০১-১৫০ হলে ‘বিপদসীমায়’ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-৫০০ হলে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আইকিউএয়ার, এয়ারভিজ্যুয়াল ও গ্রিনপিসের এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে মঙ্গলবার বলা হয়, সারা বছরের গড় দূষণের মাত্রা বিবেচনায় নিলে বিশ্বে বাংলাদেশের বাতাসই সবচেয়ে বেশি দূষিত। আর রাজধানীর শহরগুলোর মধ্যে দিল্লির পরই ঢাকার অবস্থান।

২০১৭ সালে বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বায়ু দূষণের নেতিবাচক প্রভাবেই বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমে যাচ্ছে। বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি ২০১৭ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দূষণের কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশে এক লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বনের সীমানা নির্ধারণ করে গত ৪ বছরের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ একটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়। সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, জাফর আলম এবং রেজাউল করিম বাবলু বৈঠকে অংশ নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ