Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে প্রতারণা করে ১২ বিয়ে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম

নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রেমের জালে আটকে ১২টি বিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সাভারের শাহনুর রহমান সিক্ত নামে এক নারী। গত ২ ফেব্রুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিক্তর কথিত স্বামী মামলা দায়ের করেন। পরে উত্তরা এলাকা থেকে প্রতারণা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব প্রতারণার গল্প। বর্তমানে সিক্ত কারাগারে রয়েছে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মো. আলী হোসেন খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রতারণার মামলায় সিক্ত নামের ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্ত এখনও চলছে। তার সম্পর্কে এরই মধ্যে অনেক তথ্য জানা গেছে। বিয়ের ফাঁদে ফেলে ১২ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এই নারী। তাকে গত রোববার গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিজের নামের সঙ্গে শাহনুর আকতার নামে একজন বিসিএস ক্যাডারের নামের মিল থাকায় এই পরিচয় ব্যবহার করে আসছিলেন শাহনুর রহমান সিক্ত। আসলে তিনি একজন প্রতারক। প্রকৃতপক্ষে সিক্তর বাবা বিপিএটিসির একজন গাড়িচালক ছিলেন। বাবার অকাল মৃত্যুর পর মা বিপিএটিসিতে আয়ার চাকরি পান। সিক্ত তার মায়ের সঙ্গে বিপিএটিসির কর্মচারী কোয়ার্টারে বড় হন। সেখানেই বিসিএস ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে। এই সুযোগে প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির পদ ও পদমর্যাদাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা পান তিনি। বাসার কাছেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হওয়ায় মাত্র পঞ্চম শ্রেণী পাস সিক্ত সেখানকার শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণের ভিত্তিতে নিজেকে গড়ে তোলেন নিজেকে। এমনকি ভালোভাবে ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতাও অর্জন করে ফেলেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর মতোই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার বন্ধু গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হওয়া সত্তে¡ও বিভিন্ন ব্যাচের রি-ইউনিয়নে অংশগ্রহণ শুরু করেন তিনি। ৩৬তম বিসিএস ক্যাডার শাহনুর আক্তারের নামের সঙ্গে নামের মিল থাকায় বিসিএস ক্যাডার শাহনুরের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন থেকেই। এই পরিচয়েই প্রথমে প্রেম ও পরে বিয়ের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
জানা যায়, প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এই ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন সিক্ত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই শিক্ষার্থী ছাড়াও আরো ১০ জনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন তিনি। পরে বিভিন্ন উপায়ে তাদের সর্বস্ব হাতিয়ে নেন তিনি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রতারণার কাজে তাকে সহায়তা করতেন বলেও জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ