Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডিম ছুড়ে ডাকাতি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

গাড়ির সামনের গ্লাসে ডিম ছুড়ে মেরে ঝাপসা করে দিতো ডাকাত দল। পরে যখন পরিষ্কার করার জন্য চালক গাড়ি থেকে নামতো তখন চারদিক থেকে ঘিরে ধরতো তারা। একপর্যায়ে চালকসহ অন্যদের আঘাত করে সবকিছু নিয়ে পালিয়ে যেতো ডাকাত দলটি। এভাবেই গ্রেফতারকৃত ৯জন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ডাকাতির বর্ণনা দেন র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে.ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাসেম। গতকাল সোমবার রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ওই ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-১-এর একটি দল।
অন্যদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) তাদের অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে নেমেছে। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক ১২ ডাকাত ও হুজির দুই সক্রিয় সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ডিবি। গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানান।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, ডাকাত দলের এই সদস্যরা অল্প শিক্ষিত। তারা দিনের বেলায় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় রাতে ডাকাতি করতো। এই দলের নেতা স্বাধীন ২০১৮ সালের জুন মাসে ইয়াবাসহ আটক হয়। পরে ৪৭ দিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আবারও ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। পাশাপাশি এই ডাকাত দলেরও নেতৃত্ব দিত।
তিনি আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছিল। গত রোববার রাতে তুরাগ থানার ১৫/ডি, প্লট নম্বর ৩৯, রোড নম্বর ১/এ-এর সামনে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সদস্যদের আটক করা হয়। তারা হলো- আসলাম আলম স্বাধীন, আশরাফুল ইসলাম, শামীম ইসলাম, নাজমুল হাসান, নিজাম উদ্দিন, মিজানুর রহমান, শিমুল ইসলাম, মামুন ও তাইমুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছে থেকে একটি বন্দুক, দুই রাউন্ড কার্তুজ, দুটি চাপাতি, ১৭টি সিম কার্ড, ১০টি মোবাইল ও নগদ ২ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা চলন্ত গাড়ি থামানোর জন্য রশি ও রোড ব্রেকার ব্যবহার করতো। কোনো কোনো গাড়ির পেছন থেকে পাথর বা ইট ছুড়ে চালককে গাড়ি থামাতে বাধ্য করতো। কখনো বা গাড়ির সামনের গ্লাসে ডিম ছুড়ে মারতো। দিয়াবাড়ী এলাকায় আরও দুটি ডাকাত দল সক্রিয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে হুজি সদস্যরা

গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন বলেন, গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি কারাবন্দি জঙ্গি উজ্জ্বলের নির্দেশে অর্থ সঙ্কট কাটিয়ে সংগঠন পরিচালনার পরিকল্পনা করে হুজি। হুজির কয়েকজন সহযোগী মিলে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে লুণ্ঠিত অর্থের ৩০ শতাংশ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে আসছিল তারা। গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের একটি টিম রোববার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ধোলাইরপাড় এলাকা থেকে ১২ ডাকাত আটক করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে রামপুরা এলাকা থেকে জঙ্গি সংগঠন ও হুজির দুই সদস্যকে আটক করে। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তারা টার্গেট করে ডাকাতি করতো। এরা হলো- হাফিজ ওরফে খালিদ ওরফে ইব্রাহিম গাজী ও মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লা। তাদের কাছ থেকে একটি রাইফেল, একটি পাইপগান, ৪১ রাউন্ড গুলি, ১২টি জিহাদি বই, গানপাউডার, ককটেল, পাঁচটি কালো রঙের মুখোশ ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ওই দু’জনকে আটকের পর ধোলাইরপাড় পূূবালী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডকে জিম্মি করে ডাকাতির পরিকল্পনায় জড়ো হওয়া ১২জনকে গ্রেফতার করা হয়। ডাকাতির পরিকল্পনা করতো হুজি আর বাস্তবায়ন করতো ডাকাতরা। এ পর্যন্ত ৯টি ডাকাতি করে ৫ কোটি টাকা লুণ্ঠনের কথা স্বীকার করেছে, যা থেকে ৩০ ভাগ টাকা সংগঠনের কাজে ব্যয় করতো তারা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ