পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন ওমেন এন্টারপ্রিনিউওরর্স নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ওয়েন্ড) দেশের নারী উদ্যোক্তাদের অধিকতর বিকাশের লক্ষ্যে এবং নারী উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম মিলনাতনে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ড. নাদিয়া বিনতে আমিন।
আট দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, ভ্যাটের হার হ্রাস, করহার হ্রাস, শুল্কহার হ্রাস, ট্রেনিং ইনন্সিটিউট প্রতিষ্ঠা, প্রতি বিভাগে সাপোর্ট সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা, আন্তঃজেলা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মেলায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়ক নীতি প্রণয়ন, বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন (বেজা) ও ইপিজেড-এ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে শিল্প স্থাপনে প্লটসহ সুযোগ সৃষ্টি করা।
ড. নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, মাস্টারকার্ড ইনডেক্স অব উইমেন আন্টারপ্রিনিউরস-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যবসা ক্ষেত্রে মোট মালিকদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা প্রতিনিয়ত দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সরাসরি কাজ করছেন। অন্যদিকে নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া এসডিজি-৫ বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নেই।
এছাড়া আরও ১১টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সঙ্গে নারীরা জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তা তথা নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা ও স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। দেশের অর্থনীতিতে নারীদের এত সব সম্ভাবনা ও অবদান থাকার পরও নারী উদ্যোক্তারা কাঙ্খিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করলেও নারী উদ্যোক্তারা এই সুবিধা পাচ্ছেন না। ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা নানাবিধ শর্তের বেড়াজাল এবং উচ্চ সুদের কারণে প্রতিনিয়ত পুঁজি সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে। এসব সমস্যা ও জটিলতা নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে বড় একটি বাধা।
ড. আমিন নতুন ভ্যাট আইনে তিনটি স্তরে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ হার নির্ধারণের সুপারিশ করেন। আয়করের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বর্তমানে প্রচলিত করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখের পরিবর্তে পাঁচ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানান। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় মেশিন ও মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ আমদানি এবং বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুযোগ প্রদানের সুপারিশ করেন তিনি।
নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, দেশে করপোরেট করহার এশিয়া কিংবা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি। নারী উদ্যোক্তারা এ কারণে বড় ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারছেন না। ব্যবসাক্ষেত্র উদ্যোক্তাবান্ধব না হওয়ার কারণে নারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া সরকার থেকে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ইকোনমিক জোন, বিসিক শিল্প নগরী, আইটি পার্ক ইত্যাদিতে নারী উদ্যাক্তাদের বিশেষ সুবিধায় প্লট বরাদ্দের দাবি জানান তিনি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা ও নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য আসন্ন বাজেটে এসব সুপারিশ অন্তভুর্ক্ত করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি শামীমা লাইজু ও সহ-সভাপতি আয়শা সিদ্দিকা, কোষাধক্ষ আনোয়ারা সিদ্দিকা, কো-কোষাধক্ষ জর্জিনা আলম, সাধারণ সম্পাদক জিসান আক্তার চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক নাদিরা ইয়াসমিনসহ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।