Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সরিষার আমদানি কমাবে বিনা

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা সরিষা-৯ হেক্টরে ১ হাজার ৭ শত ২০ কেজি উৎপাদিত হয়েছে। এ জাতের সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি বিনা ৯ জাতের সরিষা থেকে ৪ শত ৩০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৮০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাটিং করা যায়। তারপর ক্ষেতে আউশ ধান আবাদ করা যায়। বিনা সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বিশাল মুনাফা করছেন।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতী গ্রামে পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র আয়োজিত কৃষক সমাবেশ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৭৫টি প্রদর্শনী প্লটে কৃষক বিনা সরিষা-৯ আবাদ করেন। প্রতিটি প্লট থেকেই কৃষক সরিষার বাম্পার ফলন পেয়েছেন।
বিনা সারিষা-৯ প্রদর্শনী প্লটে আবাদকারী পশ্চিম মাঝিগাতী গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমি গত ১৮ নভেম্বর বিনা জাতের সরিষা আবাদ করে ফেব্রয়ারীর শেষ সপ্তাহে কেটেছি। এ সরিষা আবাদে মাত্র ৮০ দিন সময় লেগেছে। স্থানীয় জাতের সরিষা হেক্টরে ৬০০ কেজি ফলে। কিন্তু বিনা সরিষা-৯ প্রতি হেক্টরে ১৭২০ কেজি ফলেছে। স্থানীয় জাতের তুলনায় প্রায় তিনগুন বিনা সরিষা ফলায় আমি ব্যাপক মুনাফা করেছি। আমার সাফল্য দেখে আগামী বছর আমাদের গ্রামের অনেক কৃষক এ জাতের সরিষা আবাদের জন্য আমার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
একই গ্রামের কৃষক রেজাউল খোন্দকার বলেন, গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের পরামর্শে আমরা বিনামূল্যে বীজ, সার ও ছত্রাক নাশক পেয়ে প্রদর্শনী প্লটে বিনা সরিষার-৯ আবাদ করি। প্রথম আবাদেই এ সরিষার বাম্পার ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছি।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষি বিজ্ঞানী মো. শেফাউর রহমান বলেন, পরিবর্তিত আবহাওয়া উপযোগি বিভিন্ন ফসল ও ফসলের জাত উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় এ অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একদিকে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে আবাসনের জন্য দিনদিন কৃষি জমি কমছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ কৃষককে দিয়ে আবাদ করিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। চলতি রবি মৌসুমে গোপালগঞ্জের কৃষকরা বিনা সরিষা-৯ আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। আগামীতে এ অঞ্চলের কৃষক লাভজনক এ জাতের সরিষা আবাদে ঝুঁকবেন বলে কৃষক সমাবেশে মত প্রকাশ করেছেন।
বিনা সরিষা-৯ জাতের উদ্ভাবক ড. মো. আব্দুল মালেক বলেন, বিনা সরিষা-৯ আবাদ করে কৃষক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। একদিন দেশ এ সরিষার ওপর ভর করে সরিষায় সাবলম্বী হবে। তখন বিদেশ থেকে আর সরিষা আমদানি করতে হবেনা। এ সরিষার তেলের গুনগত মান খুবই উৎকৃষ্ট। এ সরিষা থেকে কেজিতে ৪ শত ৩০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। বিনার মহাপরিচালক হোসনেয়ারা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু সহিষ্ণু বাংলাদেশ গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় কৃষককে বিনার উচ্চ ফলনশীল জাতের বিভিন্ন ফসল আবাদে উদ্বুদ্ধ করে দেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিনা সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী কাজ করে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ