Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরামেই দিন কাটাচ্ছে সিলেট আ.লীগ!

ফয়সাল আমীন ও মিসবাহ উদ্দীন আহমদ : | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে জয় পাওয়ায় বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দিন কাটছে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে রাজপথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নির্বাচন পরবর্তিতে কোন আন্দোলনে না থাকায় রাজপথেও অনেকটা নির্ভার আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচনের পর যেনো অনেকটাই বিজয়ের তৃপ্তিতে ক্লান্তি চলে এসেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী পরিবারে। বিভিন্ন দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং অলি আউলিয়াদের মাজারে মিলাদ মাহফিল আয়োজনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে দলটির কার্যক্রম।
দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জানা গেছে, সিলেট জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তা পুণর্গঠনের কোন উদ্যোগই নেই দলটির দায়িত্বশীলদের। দায়সারা এই অবস্থার প্রভাব পড়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও। ১২টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে একক প্রার্থী দিতে পারেনি দলটি। এই ৯টিতেই রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। অথচ বিগত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়। নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল এ কার্যালয় পাওয়ার মাধ্যমে সিলেট আওয়ামী লীগ নতুন উদ্যমে কাজ করবে। কিন্তু সেটি হয়নি।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বাকি একটিতে প্রার্থী দেয় নিজেদের শরিকদল জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি জয়ের মুখ না দেখলেও বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সব প্রার্থী। এই জয়কে নিজেদের বড় অর্জন হিসেবেই দেখছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। জেলা ও মহানগর শাখার আওতাধীন বিভিন্ন কমিটি অপূর্ণাঙ্গ, অগোছালো ও মেয়াদোত্তীর্ণ থাকলেও সেদিকে কোন নজর নেই তাদের।
নির্বাচনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভা, দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে দলটির কার্যক্রম।
অন্যদিকে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি বিরাজমান থাকায় প্রার্থী বাছাইয়েও বেগ পেতে হয় জেলার নেতাদের। কোম্পানীগঞ্জে বর্ধিত সভায় জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে বহিস্কারও করা হয়। যদিও পরবর্তীতে এই বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারও করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করলেও ১২ উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই একক প্রার্থী দিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। একেক উপজেলায় একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ফলে গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবারও ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন অনেকে।
অপরদিকে, জেলা ও মহানগর শাখার আওতাধীন কমিটিগুলো অপূর্ণাঙ্গ ও মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে পড়লেও তা পুনর্গঠনের কোন উদ্যোগই নেই সংশ্লিষ্টদের। সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৩টি উপজেলা কমিটির মধ্যে শুধুমাত্র বিশ^নাথে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। বাকি ১২টি উপজেলা কমিটি চলছে ২/৩ জন দিয়ে।
কমিটিগুলো মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে গেলেও সম্ভব হয়নি পূর্ণাঙ্গ করা। জেলার মতো অবস্থা মহানগরেরও। ২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টিতে কমিটি নেই। দলের বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, দল ক্ষমতায় থাকায় এবং রাজপথে বিরোধী দলের কর্মসূচি না থাকায় দিবসভিত্তিক কার্যক্রমই চলছে। তবে দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখতে যেসব ওয়ার্ডে কমিটি নেই সেসব কমিটি গঠনের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ