Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীরের দাফন সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৯, ১২:১০ এএম

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক শাহ আলমগীরকে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর গণকবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। চতুর্থ দফা জানাজা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে বিকাল তিনটায় তার তৃতীয় দফা জানাজা হয় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে।
শাহ আলমগীরের ইন্তেকালে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ শোক জানিয়েছেন।
জানাজায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মনজুরুল আহসান বুলবুল, চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিকবৃন্দ।
জানাজা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের লাশে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় জানাজা এবং রাজধানীর গোড়ানে দুপুর দেড়টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পিআইবিতে লাশ পৌঁছালে সেখানে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তথ্যসচিব আব্দুল মালেক ও পিআইবির ভারভাাপ্ত ডিজি মীর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ইন্তেকাল করেন সাংবাদিক শাহ আলমগীর। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত কয়েক দিন তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শাহ আলমগীর আগে থেকেই কিছু জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এরমধ্যে গত ২১ ফেব্রুয়ারি তার অসুস্থতা বেড়ে যায়। দ্রুত তাকে সিএমএইচে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গত মঙ্গলবার রাতে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহ আলমগীরকে দেশের বাইরে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেডিক্যাল বোর্ড জানায়, তার শারীরিক অবস্থা এ মুহূর্তে বিদেশ স্থানান্তরের মতো নয়।
পিআইবির প্রধানের দায়িত্ব ছাড়াও শাহ আলমগীর বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬ ও চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ সহ বেশকিছু সম্মাননা পান।
প্রায় ৪০ বছর সাংবাদিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহ আলমগীর। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় ১৯৮০ সালে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ পত্রিকায়। ১৯৯৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। বাবার চাকরি সূত্রে বৃহত্তর ময়মনসিংহে জীবনের দীর্ঘ একটি সময় কাটে তার। ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক।
এক শোক বার্তায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর মহাপরিচালক শাহ আলমগীরের ইন্তেকালে পিআইবি জার্নালিজম অ্যালামনাই এসোসিয়েশন (পিবজা)-এর পক্ষ থেকে গভীর শোক জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর ড.নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক রুহী শামসাদ আরা। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ