Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দু’মাস পদ্মা-মেঘনায় মাছ আহরণ নিষিদ্ধ

জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্য

অভ্যন্তরীণ ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৯, ১২:১১ এএম

জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্যে ১ মার্চ-৩০-এপ্রিল পর্যন্ত ২ মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময়ে বরাদ্ধকৃত চাল লুটপাট না করে সঠিক তালিকা তৈরি করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন জেলেরা। এ বিষয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রবিবেদন-

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ইলিশের পোনা জাটকা সংরক্ষণের জন্য চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে আজ ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সকল মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর ফলে জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এলাকা অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। অভয়াশ্রম চলাকালীন সময়ে ইলিশসহ যে কোন মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও সরবরাহ নিষিদ্ধ থাকবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, জেলা মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই কমিটিতে রয়েছেন।
দুই মাসের এই কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য গত বুধবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে টাস্কফোর্স কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান যেসব জেলে আইন অমান্য করে জাটকা নিধন করে তাদের তালিকা তৈরী করে দেয়ার জন্য মৎস্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি জানান, জেলায় ৫১ হাজার তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। এসব জেলেদেরকে জাটকাসহ সকল ধরনের মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। নদী উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। জেলে পাড়ায় লিফলেট বিতরণ ও আড়ৎগুলোতে ব্যানার সাঁটনো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জাটকা সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন। আর এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রশাসনের পাশাপশি, জনপ্রতিনিধি ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আইন অমান্য করে কোনো জেলে জাটকা নিধন করলে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লক্ষীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানায়, জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে ৪২ হাজার জেলে নিবন্ধিত রয়েছে। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।

লক্ষীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ এক’শ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। এসময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষন, আহরন, পরিবহন, বাজারজাত করন ও মজুদকরন নিষিদ্ধ রয়েছে। জেলেদেরকে সচেতন করার জন্য নদী এবং উপক‚লবর্তী এলাকায় মাইকিং ও পোস্টারিংসহ সকল ধরনের প্রচারনা অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞার সময় মার্চ-এপ্রিল ২মাস ও সামনের মে-জুন দুই মাসসহ ৪ মাস পর্যন্ত প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি হারে খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
জেলে রহিম, আবুল কালাম ও আড়ৎদার লিটনসহ অনেকে জানান, জাটকা সংরক্ষন ও ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্য সরকার যে নিষোজ্ঞা দিয়েছে সেটা মেনে জেলেরা নদীতে যাবেনা বলে ঘোষনা দিয়েছেন। জেলেদের পূর্নবাসন করার কথা সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি। যে পরিমান জেলে রযেছে, সে পরিমান সরকারী খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এইচএম মহিব উল্যাহ জানান, আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনলের একশ কিলোমিটার এলাকায় মাচ-এপ্রিল ২ মাসে ইলিশের পোনা জাটকার প্রচুর্য দেখা দেয়। এ জন্য এ এলাকায় জাটকা বড় হওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য এ দুই মাস নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলা ট্রান্সফোর্স কমিটির সভায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের নেতৃত্বে যৌথ অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আশা করি প্রধান প্রজনন মৌসুমে যেভাবে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পেরেছি। এখনও তা বন্ধ রাখতে সক্ষম হব। এ সময়ে জেলেদের জন্য ৪০ কেজি হারে খাদ্য সয়ায়তা দেয়া হবে। জেলেরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ