Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কৃষি ব্যবস্থা জিম্মি হলে জীবন হুমকিতে পড়বে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বাংলাদেশের কৃষিখাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। বহুজাতিক কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা জিম্মি হয়ে যাচ্ছে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এমনটা হলে আমাদের জীবন ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ব্যর্থ বিটি বেগুনের পর গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে উবিনীগ, নয়াকৃষি আন্দোলন ও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে বিটি বেগুনের মাঠ পর্যায়ের চাষ নিয়ে উবিনীগের একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বেলা’র নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রাকৃতিক কৃষির পক্ষ থেকে দেলয়ার জাহান।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, জবাবদিহিতার কোন জায়গা নাই সরকার এটা জানে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইউএসএইড এর অধিনে। তাদের দখলে গবেষণা বিভাগ। তিনি বলেন, এমুহূর্তে জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ার্ড বা জিএম ধানের মাঠ পর্যায়ে চাষের অনুমোদন দেয়া হলে বাংলাদেশের ধানের বৈচিত্র এবং ধান চাষের ওপর হুমকি সৃষ্টি হবার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারকে এব্যাপারে বিবেচনা রাখতে হবে।

ফরিদা আখতার বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য ফসলের ওপর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের জন্যে ঝুঁকি তৈরি করছে। একই সাথে খাদ্য ফসলের স্থানীয় জাতের বৈচিত্র্যের জন্যে হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ বেগুনের আদি উৎপত্তি স্থল হিসেবে স্বীকৃত। সেই সকল প্রাণসম্পদ সুরক্ষা না করে পাল্টা বিকৃত বীজ প্রবর্তন করে পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য এবং প্রাণ ব্যবস্থাকেই চরম হুমকির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেন্তার সহযোগিতায় বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইস বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিরি) এর ধান বিআর-২৯ এর মধ্যে জেনেটিক কারিগরি করে ডেফোডিল ফুলের জিন স্থাপন করে প্রথম গোল্ডেন রাইস বা এজ-১ করা হয়েছিল। গোল্ডেন রাইস স্বাভাবিক খাদ্যের তুলনায় ভাল তার প্রমাণ নাই। অথচ এর প্রবর্তন বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ধান চাষের ঐতিহ্যে বিপদ ঘটাবার আশংকা রয়েছে। গোল্ডেন রাইস বহুজাতিক কোম্পানির পেটেন্ট করা একটি পণ্য। তারা হিউমেনেটারিয়ান প্রকল্প হিসেবে বিনা পয়সায় দিচ্ছে। তেমনি মনসান্তো বিটি বেগুনের পেটেন্ট নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বারি) যদিও বিনা পয়সায় কৃষকদের মাঝে বিটি বেগুন বীজ বিতরণ করছে, সাথে উপকরণও দিচ্ছে কিন্তু মনসান্তোর দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হচ্ছে সরকারের মাধ্যমে বীজ বিতরণ নয়, বরং বীজ ব্যবসায়িদের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করা।

সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, গণতন্ত্রের জায়গা এবং মত প্রকাশের পথ বন্ধ হয়ে গেছে তাই বিদেশী কোম্পানী বাজার দখল করছে এবং জিএমও ঢুকছে। খাবারে বিষ মিশানো গর্হিত অপরাধ এটা রাষ্ট্র দেখছে না। তিনি বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া বিটি বেগুনের অনুমোদন সম্পূর্ণভাবে মানা হয়েছে কিনা তার প্রতিবেদন দিতে হবে, এবং গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়া বন্ধ করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ