Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী না হলে কর্পোরেট গভর্নেন্স ব্যর্থ হবে

বিআইবিএমে ড. জুনায়েদ কামাল আহমাদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

জন্মসূত্রে বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ বিশ্বব্যাংক ভারতের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. জুনায়েদ কামাল আহমাদ বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতার চর্চা জোরদার করতে রেগুলেটরী ফ্রেমওয়ার্ক শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী হওয়া জরুরী। বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করার মাধ্যমে নজরদারী আরো না বাড়লে কর্পোরেট গভর্নেন্স ব্যর্থ হবে। নৈতিকতার চর্চা বাড়াতে সুশীল সমাজেরও অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ১৮তম নুরুল মতিন মেমোরিয়াল লেকচার ‘ইথিকস ইন ব্যাংকিং’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক আব্দুর রহিম। ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতার চর্চার জন্য এ ধরণের মেমোরিয়াল লেকচার কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে জানান বিআইবিএমের মহাপরিচালক।
মূল প্রবন্ধে ড. জুনায়েদ বলেন, ব্যাংকিং খাতের নৈতিকতার চর্চা বাড়ানোর জন্য প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। খুব সহজে নৈতিকতার চর্চা চালু করা কঠিন। এজন্য আর্থিক ব্যবস্থায় পাবলিক পলিসি এবং রেগুলেটরী ফ্রেমওয়ার্ক শক্ত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ব্যাংকের গভর্নিং বোর্ড, ম্যানেজমেন্ট এবং সকল কর্মীদের কর্পোরেট গভর্নেন্স বাস্তবাবায়নে একযোগে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে রেগুলেটরী ফ্রেমওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করতে হবে। যাতে কর্পোরেট গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোন ধরণের গাফিলতি না থাকে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা টেকসই করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করতে হবে। যা ব্যাংকিং খাতের দক্ষতা বাড়াতেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে সুশীল সমাজের বিশেষ ভূমিকার ওপর জোরারোপ করে তিনি বলেন, আর্থিক ব্যবস্থায় অতিরিক্ত নজরদারী (এডিশনাল ভয়েস) হিসেবে সুশীল সমাজকে কাজ করতে হবে। সুশীল সমাজের এ নজরদারী ব্যাংকিং এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চেকস এবং ব্যালান্স স্থাপনে সহায়ক হবে।
গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারীর সক্ষমতা নিয়মিত বাড়ানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক ব্যবস্থা নজরদারীর ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি আলাদা বিভাগ কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের সহযোগিতায় সব সময়ই ঋণ খেলাপী, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর। ব্যাংকিং খাত যাতে আইন কানুনের মধ্যে থেকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিচালিত হয় তার সার্বক্ষণিক তদারকি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি বলেন, কিছু অনিয়মের কারণে অর্জনগুলো মলিন হয়ে যায়। তবে ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের কারণেই শুধু নয়, কিছু ঋণগ্রহণকারীর উচ্চাকাঙ্খাও ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি তৈরি করছে। কিছু ব্যাংক কর্মকর্তার অনিয়মকারীদের যোগসাজশ এবং প্রভাবশালী খেলাপীর কারণে পুরো অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
ফজলে কবির বলেন, অনৈতিক চর্চাগুলো দীর্ঘ দিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আজকের মেমোরিয়াল লেকাচারের মাধ্যমে তরুণ ব্যাংকাররা সততা এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবেন এবং ব্যাংকিং খাতে আরো পেশদারিত্ব দিকে অগ্রসর হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতা শীর্ষক এ মেমোরিয়াল লেকচার ১৯৯৭ সাল থেকে চালু করে বিআইবিএম।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ