Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এক মাসের মধ্যে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ - সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে সব কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। একই সঙ্গে যেসব বাসা বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ক্ষতিকর কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য পাওয়া যাবে সেখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার ডিএসসিসির নগর ভবনের সেমিনার কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণকল্পে এক বিশেষ জরুরি সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান, ওয়সার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন এ খান, তিতাস গ্যাসের এমডি মোস্তফা কামাল, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক সোহরাব আলী, বিস্ফোরক অধিদফতরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহম্মাদ ফেরদৌস খান, ডিপিডিসির এমডি বিকাশ দেওয়ানসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধি এবং পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, আমরা পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা অপসারণের জন্য দুই স্তরবিশিষ্ট দুটি টাস্কফোর্স গঠন করে দেবো। প্রথম স্তরে থাকবে সংস্থার প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যে কমিটি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে করণীয় এবং এর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। পাশাপাশি বাস্তবায়নের বিষয়ে কাজ করবে। আর দ্বিতীয় কমিটি অনগ্রাউন্ডে থাকবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ১৫টি ওয়ার্ড ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এর মধ্য থেকে দুই-তিনটি ওয়ার্ড সমন্বয় করে এই কমিটি কাজ করবে। আমরা দুই স্তরবিশিষ্ট টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করে পুরান ঢাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল গুদাম অপসারণের কাজ শুরু করতে চাই। আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি এই টাস্কফোর্স অনগ্রাউন্ডে কাজ শুরু করবে। মেয়র বলেন, টাস্কফোর্সে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে বেশ কয়েকজন। তাদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হবে। সকল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সাথে থাকবে। যে বাসাতেই কেমিক্যাল গোডাউন পাওয়া যাবে সেই বাসারই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ একালাকার ভবনগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শহরের মানুষকে নিশ্চিত করতে চাই যে, আরেকটা চকবাজার হতে দেওয়া হবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য হিসেবে গড়তে চাই। এজন্য সকল গোয়েন্দা সংস্থাকে পুরান ঢাকার পুরো এলাকাকে সার্ভিলেন্সের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি বলেন, চকবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সিরিয়াস। তিন পদ্ধতিতে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরানো হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এসবিকেও মাঠে নামতে নির্দেশনা দেন আইজিপি। তিনি বলেন, সকলকে এবার আটঘাট বেধে নামতে হবে। কোন বাসায় কি আছে তা চেক করেন। ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ছাড় দেবোও না। এক মাসের মধ্যে পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য করে দেব।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যেকোনো মূল্যে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করতে হবে। আপনারা ব্যবসায়ী হিসেবে কথা বলবেন না। নাগরিক হিসেবে কথা বলবেন। আপনারা কিভাবে সরাবেন তার করণীয় ঠিক করেন। নাহলে আমাদের অভিযান চালানো ছাড়া কিছুই করার নেই। আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দেখবো না। আর প্রাণহানি দেখতে চাই না। এই এলাকাকে বাসযোগ্য করা হবে।
সমন্বয় সভায় সকল গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন। তারা বলেন, কেমিক্যাল গোডাউন ঘিঞ্জি পরিবেশে করার কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যায়। তাছাড়া আগুন যেখানে সেখানে লাগতেই পারে। পুরান ঢাকার রাস্তা বড় করারও পরামর্শ দেন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সভায় কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর পরামর্শ দেন। কোনো ব্যবসায়ীকে যাতে হয়রানি করা না হয়। কেমিক্যাল পল্লীর জন্য জমি বরাদ্দের কথা বলা হলেও গত ১০ বছরে তা বাস্তবায়ন হয়নি উল্লেখ করে তারা এর বাস্তবায়ন চান। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ