বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চাহিদানুযায়ী কোন ঘাটতি না থাকলেও বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রæটির কারণে বরিশাল মহানগরীসহ বিদ্যুৎ সংকটে দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলবাসী। জরুরি চিকিৎসা সেবাসহ পানি সরবরাহ এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও বিপর্যয়ের মুখে। তাপমাত্রার পারদ ওপরে ওঠার সাথে বিদ্যুৎ সংকটও বাড়ছে। অথচ কোন ঘাটতি নেই। আসন্ন গ্রীষ্মের গরমের সাথে রমজানে দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই বরিশাল মহানগরীর অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। শীত বিদায়ের পরে বসন্তের ভরা মৌসুমেও জনগনের দুর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছে। সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ঘাটতিসহ কর্মকর্তাদের উদাসীনতা আর জনবল সঙ্কটে পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। সাথে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগও।
জানা গেছে,দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় গতকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল প্রায় ১৩৫ মেগাওয়াট। আসন্ন গ্রীষ্মে তা ১৬৫ মেগাওয়াট পর্র্যন্ত পৌঁছবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। গতকাল পর্যন্ত বিদ্যুতের কোন ঘাটতি ছিল না দক্ষিণাঞ্চলেও। তবে পুরনো বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছে। খোদ বরিশাল মহানগরীর প্রায় সব ১১ ও .০৪ কেভি বিতরণ লাইনগুলো ৩০ বছরেরও বেশি পুরনো। অনেক বিতরণ ট্রান্সফর্মারই ওভারলোডেড হয়ে আছে। এসব ট্রান্সফর্মার-এর তেল পরিবর্তনসহ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না।
তবে সা¤প্রতিককালে পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার দায়িত্বে নিয়োজিত ‘ওজোপাডিকো’ প্রায় দু হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করছে। এর আওতায় বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সদর ও কয়েকটি উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বরিশাল মহানগরীর মূল রূপাতলী ৩৩ কেভি সাব-স্টেশনটির পুনর্বাসন কাজ চলছে। নতুন ভবনে সাব-স্টেশনটির সব সরঞ্জামাদি স্থানান্তর কাজ প্রায় শেষ পর্যাযে। ২২ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ৩৩/১১ কেভি ট্রান্সফর্মারও স্থাপন করা হয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ১১/.০৪ কেভি ট্রান্সফর্মারও পরিবর্তন করা হচ্ছে। তবে তা পুরনো ট্রান্সফমার পুড়ে যাবার পরে। প্রায় সব ১১ কেভি ট্রান্সফর্মারই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এমসিপিসহ ড্রপ আউটের অভাবে। এখনো এ নগরীর একটি ট্রান্সফর্মারের ফিউজ পুড়ে গেলে পুরো ফিডারই বন্ধ করতে হয়। ১১ কেভি লাইনগুলোতে ইতোপূর্বে কিছু আইসোলেটর স্থাপন করা হলেও তার বেশীরভাগই অকার্যকর। ৩৩ কেভি লাইনগুলোর ইনস্যুলেটর ও পিনগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো। ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস ছাড়লেও বরিশাল মহানগরীর ৩৩ কেভি লাইনগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এসব পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পাশাপাশি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত করারও দাবি রয়েছে সাধারণ মানুষের। নতুন সংযোগগ্রহণ থেকে পুরনো সংযোগগুলোর মিটার পরিবর্তনে একজন গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, দালাল না ধরলে ওজোপাডিকো’র নতুন সংযোগ পাওয়া কঠিন। এমনকি ডিজিটাল মিটার স্থাপনের পরে ছয়মাস থেকে বছরের মাথায় এসব মিটার বিকল হয়ে যাচ্ছে। আর ঐসব মিটার পরিবর্তনে গ্রাহককে নিজের টাকায় নতুন মিটার সংগ্রহ করার পাশাপাশি এখন সে জন্য প্রায় সাড়ে ৩শ টাকা জমাও দিতে হচ্ছে। আর এ পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতেও অনেক ক্ষেত্রে দালাল ধরতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট-এর ব্রডব্যান্ড লাইনসহ ক্যাবল টিভির লাইনগুলোতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে, তার প্রায় পুরোটাই অবৈধভাবে সংযূক্ত। আর এ অবৈধভাবে ব্যবহৃত বিদ্যুতের পুরোটাই চুরি হচ্ছে।
তবে এসব বিষয়ে ওজোপাডিকো’র বিভিন্ন বিতরণ বিভাগ ও তার তত্ত¡াবধানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করা হলে তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু ঐসব ব্রডব্যান্ড লাইন ও ক্যাবল টিভিতে বিদ্যুৎ কোথা থেকে আসছে সে সম্পর্কে কোন কিছু বলতে পারেননি দায়িত্বশীল মহল। ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।