Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিআইবিএম’র মহাপরিচালক পদ নিয়ে চলছে জোর লবিং

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৬:২৩ পিএম

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক পদটি সম্প্রতি শূণ্য হয়েছে। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে নিয়োগ পেতে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। আবার অনেকে নিয়োগ পেতে জোর লবিং চালাচ্ছেন। শেষ পর্যায়ে চূড়ান্ত নিয়োগ কে পাবেন এই অপেক্ষায় রয়েছেন পুরো ব্যাংকিং খাত। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বোর্ড সভায় বিষয়টি নির্ধারিত হবে বলে জানা গেছে।

সূত্র মতে, বিআইবিএম’র মহাপরিচালক পদে সদ্য মেয়াদ শেষ করেছেন ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। তিনি ২০১০ সালে বিআইবিএমের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে ২০০৯ সালে প্রথম বারের মত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান বিআইবিএম এর আরেক প্রফেসর ড. বন্দনা সাহা। এর ধারাবাহিকতায় তার মেয়াদ শেষে নিয়োগ পান ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরী।

ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, অভ্যন্তরীণ যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ পাওয়ায় গত এক দশকে প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং কনসালট্যান্সী কাজে অনন্য উচ্চতায় পৌছেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্সী এবং যুক্তরাজ্য, জার্মানী, মালয়েশিয়ার একাধিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে কোর্স পরিচালনাসহ বিভিন্ন খ্যাতিনামা প্রতিষ্ঠানের সাথে পারষ্পারিক সম্পর্ক তৈরী করার কারণে আন্তর্জাতিকভাবেও বিআইবিএম সমাদৃত হয়েছে।

এসব কারণে গত ১৬ জানুয়ারী ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরীর বয়স ৬৫ বছর পার হওয়ার কারণে তার মেয়াদ শেষ হলেও বিআইবিএম’র এসব কর্মকান্ড চলমান রাখার জন্য গভর্নিং বোর্ড ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরীর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আইনি মতামত প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধি বিধানে ৬৫ বছরের পর নিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ নেই। তবুও তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিন্তু সেখানেও তিনি আইনের বাধ্যবাধকতায় পিছিয়ে আছেন। এ কারণে তার মেয়াদ আর বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বোর্ডের একাধিক সদস্য।

গত ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়, কোনো ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হলে তিনি ব্যাংকের কোনো পদে চুক্তিভিত্তিতেও নিয়োজিত হতে বা অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। তবে পরামর্শক ও উপদেষ্টা পদে ব্যাংক বিশেষ প্রয়োজনে ৬৫ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তিকে চুক্তিভিত্তিতে বহাল রাখতে অথবা নিয়োগ দিতে পারবে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনা দেয়।

এদিকে বিআইবিএম’র মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পাবার জন্য জোর আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মো. আক্তারুজ্জামান। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা, গবেষণা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমানে বিআইবিএম এর মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রহিম। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ইসকান্দার মির্জাও এ পদে নিয়োগ পেতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে বিআইবিএম’র সিনিয়র প্রফেসর ও পরিচালক ড. শাহ্ মো. আহসান হাবিব এর রয়েছে ব্যাংকিং খাত সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং শিক্ষায় দুই দশকের বেশী অভিজ্ঞতা। এছাড়া গত এক দশকে বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এছাড়া বিআইবিএম’র প্রফেসর মহিউদ্দিন ছিদ্দীক ও ড, তাজুল ইসলামও আছেন এ তালিকায়। কৃষি ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি লিয়াকত হোসেন মোড়লও আছেন প্রতিযোগিতায়। একই সঙ্গে বিআইবিএম’র মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করছেন ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের একাধিক প্রভাবশালী শিক্ষক।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও নিজ নিজ এলাকার একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও আমলাদের মাধ্যমে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। এ কারণে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী বোর্ড সভায় অনেককেই সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় আনতে বাধ্য হচ্ছে গভর্নিং বোর্ড।

মহাপরিচালক নিয়োগের বিষয়ে কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বলেন, বিআইবিএম’র চলমান সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যোগ্যতম প্রার্থীই এ পদে নিয়োগ পাবেন বলে তারা আশাবাদী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআইবিএম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ