Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অগ্নিঝুঁকিতে রাজধানীর ৯৮ শতাংশ হাসপাতাল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

হাসপাতালে যারা অবস্থান করেন তাদের বেশিরভাগই থাকেন রোগী, যাদের পক্ষে অন্যের সাহায্য ছাড়া দুর্ঘটনার সময় বের হয়ে আসা সম্ভব নয়। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য পূর্ব প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। অধিকাংশ হাসপাতালেই ফায়ার লগ বুক মেনটেন করা হয় না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি জানার কোনো সুযোগ থাকে না বা তাৎক্ষণিক কারণ নিরুপণ করাও সম্ভব হয় না। রাজধানীর মোট হাসপাতালের ৯৮ শতাংশ হাসপাতাল অগ্নিঝুঁকিতে। গতকাল বুধবার সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে ‘হাসপাতালের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স’র মহাপরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ‘ওয়াক আপ কল’ ছিল। অনেক হাসপাতাল এ স্টোরেজ সিস্টেম ঠিক নেই। রাজধানীর হাসপাতালোর রোগী বের হওয়ার ব্যবস্থা একেবারে নাজুক। দুর্বল হাউসকিপিং, কারপারকিং, রান্নাঘর ও বয়লার হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত অগ্নি-দুর্ঘটনা বিষয়ে হাসপাতালে কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত ফায়ার ফাইটিং মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক উত্তম বড়–য়া বলেন, অতি কম সময়ে কোনো ধরনের প্রাণহানী ছাড়াই একটি এক্সিট দিয়ে ওইদিনের অগ্নিকান্ড মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র অক্টোবরে মহড়া কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কারণে। আমাদের এ ঘটনা যেকোনো হাসপাতালের জন্য শিক্ষণীয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, আমরা হাসপাতালগুলোতে যে সার্ভে কার্যক্রম পরিচালনা করেছি তাতে দেখা যায় ঢাকা মহানগরীর ৪৩৩টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মধ্যে ২৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৭৩টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ হাসপাতালের সংখ্যা আমাদের সার্ভেকৃত হাসপাতালের মোট সংখ্যার ৯৮ শতাংশ। ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে তা নিরসণের জন্য সুপারিশমালা প্রণয়ন, অগ্নি দুর্ঘটনা মোকাবেলার জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান, নিয়মিত মহড়া অনুশীলন, অগ্নি দুর্ঘটনা বিষয়ক হাসপাতালে সচেতনামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, শেরেবাংলা নগর এলাকায় মোট নয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে। যেকোনো অগ্নি-দুর্ঘটনা সেবা পাওয়ার জন্য কোনো ফায়ারস্টেশন নেই। এই এলাকায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দুর্ঘটনার কথা বিবেচনা করে একটি মিনি ফায়ারস্টেশন ও অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার। অন্যান্যে মধ্যে মতামত ব্যক্ত করেন ল্যাবএইড-এর জিএম হাবিবুল আলম, বার্ডেম হাসপাতালের আমিনুল ইসলাম, জাতীয় মানিসক হাসপাতালের কামাল উদ্দিন আহমেদ, ব্রেন অ্যান্ড মাইল্ড হাসপাতালের এজিএম মজিবর রহমান, ওএসবি চক্ষু হাসপাতালের ড. স্বপন কুমার ভৌমিক, পিডবিøউডির প্রকৌশলী নাসিরুল রেজা, ঢাকা সেন্ট্রাল স্পেশালাইজড হাসপাতালের হেড অফ অ্যাডমিন মজিবর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক কর্নেল শামসুল আলমপ্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ