প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
টেলিভিশন অভিনয়ে ডি এ তায়েবের জনপ্রিয়তা অনস্বীকার্য। ভিন্ন ধরনের গল্প এবং বহুরূপী চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন। তার অভিনীত নাটক বা টেলিফিল্মের বিশেষত্ব হলো, তিনি শুধু দর্শকদের বিনোদন দেয়ার জন্য অভিনয় করেন না, গল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সচেতনতামূলক মেসেজও দিয়ে থাকেন। টেলিভিশনে সফল এই অভিনেতা সোনাবন্ধু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে গত বছর পরিপূর্ণভাবে চলচ্চিত্র অভিনয়ে যুক্ত হন। প্রথম সিনেমা দিয়ে দর্শক মন জয় করতে পেরেছেন। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি তার দ্বিতীয় সিনেমা অন্ধকার জগৎ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিনেমাটি নিয়ে চলচ্চিত্র পাড়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে। সিনেমাটির মুক্তির প্রাক্কালে জনপ্রিয় এই অভিনেতার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়। কথা বলেছেন সবুজ পারভেজ।
আপনার অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘অন্ধকার জগৎ’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। চলচ্চিত্রটি নিয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাই।
আমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘সোনাবন্ধ’ দর্শকদের হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতা জন্ম হয়েছে ‘অন্ধকার জগৎ’র। যদি এভাবে বলি- আমার প্রথম সন্তান ‘সোনাবন্ধু’ দর্শক যেভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, এই চলচ্চিত্রটিও ঠিক একইভাবে স্বীকৃতি দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। ‘সোনাবন্ধু’র জন্য আমার সাংবাদিক ভাইদের কাছ থেকেও পেয়েছি অসীম সাহস ও ভালোবাসা। তখন দেশের প্রথম সারির প্রায় প্রতিটি পত্রিকা আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমি সকল সাংবাদিক ভাইদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, তাদের এই ভালোবাসা আমার ‘অন্ধকার জগৎ’তেও বজায় থাকবে।
চলচ্চিত্রটিতে কী উপাদান রয়েছে?
কারণ অসাধারণ একটি চলচ্চিত্র হয়েছে ‘অন্ধকার জগৎ’। এছাড়াও আরো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যদি নাম্বারিং করি তাহলে প্রথমত বলতে হয়, চলচ্চিত্রটির নির্মাতা হচ্ছেন বদিউল আলম খোকন। যিনি কমার্শিয়াল সিনেমার একজন ব্র্যান্ডেড নির্মাতা। দ্বিতীয়ত, এতে যারা পারফর্ম করেছেন তারা সবাই দর্শকদের কথা চিন্তা করেই অভিনয় করেছেন। তাদের অসাধারণ অভিনয়ে চলচ্চিত্রটি সমৃদ্ধ হয়েছে। মাহি অনেক ভালো অভিনয় করেছেন। আমারটা না হয় দর্শকদের কাছেই ছেড়ে দিলাম। আমি এই চলচ্চিত্রের অভিনেতা হিসেবে বলছি না। আমার এ কথার প্রমাণ দর্শক প্রেক্ষাগৃহে গেলেই পাবেন। আর মিশা ভাইসহ অন্যান্য শিল্পীর কথা দর্শকই ভালো জানেন।
অসংখ্য টিভি নাটকে দর্শক আপনাকে দেখেছেন। ইতোমধ্যে আপনার একটি চলচ্চিত্রও দর্শক উপভোগ করেছেন। নাটক, টেলিফিল্ম এবং চলচ্চিত্রের মধ্যে পার্থক্য কী দেখছেন?
আকাশ এবং পাতাল পার্থক্য রয়েছে। আকাশও মানুষের জীবনে দরকার আছে। ঠিক তেমনই পাতালেরও প্রয়োজন আছে। একটি চলচ্চিত্রের জন্ম হয় বিশাল একটি আয়োজনে। যেমনটা বললাম আকাশ। হিউজ অ্যারেজমেন্ট থাকে। অনেক মানুষের সমাবেশ হয় শুটিংয়ে। সেই তুলনায় নাটক বা টেলিফিল্ম পাতাল। কারণ এতে বাজেট থাকে সীমিত। চলচ্চিত্র শুটিংয়ের মতো নাটক বা টেলিফিল্মের শুটিংয়ে দু’চার জন মানুষের বেশি দেখা যায় না। এখানে আরো অনেক বিষয় আছে যেমন ধরেন আমি যদি একটি চলচ্চিত্রের শিল্পী হিসেবে একটি সাক্ষাৎকার দিতে যাই কোনো টেলিভিশনে, সেখানে আমাকে সম্মানি দেওয়া হবে দশ হাজার অথবা তারও বেশি। কিন্তু নাটক বা টেলিফিল্মের হয়ে গেলে সেই একই চ্যানেলে দেবে দুই থেকে সর্বচ্চো তিন হাজার টাকা। মানুষ কিন্তু একই। সব ক্ষেত্রেই এই পার্থক্যটা আছে। যেটা আমি উপলদ্ধি করেছি। বাট দুটোই আমার কাছে অনেক আপন। দুটোই আমার কাছে ভালো লাগার। দুটোই আমার কাছে অনেক ভালোবাসার।
আগের চলচ্চিত্রে পপি ও পরীমণির বিপরীতে অভিনয় করেছেন। এবার মাহি। এদের মধ্যে কে আপনার জন্য পারফেক্ট মনে করেন?
অবশ্যই মাহি। কারণ মাহি অভিনয়ের মধ্যে ভীষণ সিরিয়াস। তবে এখানে অন্য দুজনকেও আমি ছোট করতে পারছি না। কারণ তারাও নিজ নিজ অবস্থানে নিজেদের প্রমাণ করেছে। তবে পপি খুব সিরিয়াস অ্যাক্টিং করে। চরিত্রের ভেতর খুব সহজেই ঢুকে পড়ে। অন্যদিকে পরীমণি একটি স্বচ্ছ দূরন্ত পাখির মতো মেয়ে। সে খুব হাসি খুশি থাকে। তবে মাহি খুবই প্রফেশনাল। ইন টাইমে সেটে আসে ইন টাইমে যায়। একেবারেই আলাদা একটা বিষয়। সেটা হবেই বা না কেনো? সেটা না হলে এতো অল্প সময়ের মধ্যে তার তো এই পর্যায় থাকার কথা নয়। আমার দৃষ্টিতে মাহি এখন এক নম্বর নায়িকা।
জুটি প্রথা সম্পর্কে আপনার ধারণা কি? আপনি কি জুটি প্রথায় বিশ্বাসী?
আমি নাটকে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছি। অভিনেত্রী মুক্তির সঙ্গে একাধিক নাটকে দর্শক আমাদের দেখেছেন। নাটকে আমাদের জুটিও চলচ্চিত্রের সোনালী যুগের রাজ্জাক-কবরী, আলমগীর-শাবানাদের মতোই দর্শক পছন্দ করেছেন। জুটি প্রথা আমি বিশ্বাস করি। তবে আমার উপর সরকারি দায়িত্ব রয়েছে। ইচ্ছা করলেই সে দায়িত্ব অবহেলা করে সময়ে-অসময়ে শুটিং ফ্লোরে হাজির হতে পারি না। এ ক্ষেত্রে যিনি আমার নায়িকা হবেন, তাকে অপেক্ষা করতে হবে। সেটা হয়তো এ যুগের কোনো নায়িকাই করবেন না। যে কারণে হয়তো জুটিও বাঁধা যাবে না। তবে জুটি বাঁধলেই হয় না, দর্শক গ্রহণযোগ্যতা একটি বড় ব্যাপার। চলচ্চিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে, যুগে যুগে এক-দুইটি জুটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। বলিউডে অমিতাভ-রেখা, জিতেন্দ্র জয়া-প্রদা, এ যুগে শাহরুখ-কাজল, আমির খান-জুহি চাওলা কিংবা সালমান-ক্যাটরিনা জুটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন অবশ্য সিনেমার বিবর্তনের কারণে জুটির বিষয়টি অনেকটা কমে গেছে। গল্প ও চরিত্র উপযোগী করে নায়ক-নায়িকা নির্বাচনের প্রবণতা বেশি। ফলে সেভাবে জুটি গড়ে উঠছে না।
আপনার প্রধান পরিচয় আপনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এত ব্যস্ততার মাঝে কীভাবে অভিনয়ে সময় দেন?
আসলে আমি আমাকেই অনেক কষ্ট দেই। কারণ ব্যক্তিগত কোনো সময় আমি আমার জন্য রাখি না। আমার সব সময়ই চলে যায় সরকারি দায়িত্ব পালনে এবং দর্শকদের জন্য। আমি মনে করি, এটা আমার দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা। বলতে পারেন আমি আমার নই, দর্শকের জন্যই আমি। আমাকে আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।
এই ব্যস্ততার প্রভাব কি ব্যক্তিগত জীবনে পড়ছে না?
সত্যি বলতে গেলে বলবো আমার ব্যক্তিজীবন বলে কিছু নেই। আমার ঘর সংসারটা হ্যাম্পার হচ্ছে। আমার আপনজন, আমার আত্মীয়-স্বজন কোনো অনুষ্ঠানে আমাকে পায় না। এক কথায় তাদের চোখে অসামাজিক হয়ে গিয়েছি বলতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর সাপোর্ট নিশ্চয়ই রয়েছে?
অবশ্যই। ও সাপোর্ট না দিলে মিডিয়ায় আমার কাজ করা হতো না। ও নিজেও মিডিয়ার সাথে যুক্ত। ফলে বিষয়টি বোঝে। এটা আমার জন্য অনেক বড় সাপোর্ট। আমার প্রথম চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট ওর লেখা। বাংলাদেশ টিভি প্রোগ্রাম প্রডিউসার সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি। এই সংগঠনের সঙ্গে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আছে। আমাকে ছাড়াও তার আলাদা একটা পরিচয় আছে। সে ভালো নাট্যকার, ভালো লিখে। তার অসংখ্য নাটকে আমি কাজ করেছি।
চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আরো কিছু দিন চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট আমার কাছে এসেছে। এরপর পরিচালনায় নাম লেখাবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।