পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহতের ঘটনায় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিতে কমিটিকে ৩ দিনের সময় দেয়া হয়েছে।
গত শনিবার তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট নুর কুতুবুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও ১৫ জন আহতের ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলের চারপাশ পরিদর্শন করেছে কমিটি। আর প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের পরিবারের মধ্যে যারা প্রত্যক্ষদর্শী প্রথমে তাদের বক্তব্য নেয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে এলাকার লোকজন যারা ঘটনা দেখেছেন তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হবে। তিনি ঘটনা সম্পর্কে যারা স্বাক্ষ্য প্রদানে আগ্রহী তাদেরকে নাম তালিকায় লেখানোর আহ্বান জানান।
তদন্তের প্রথম দিন কমিটির কাছে প্রত্যক্ষদর্শী ৮জন তাদের বক্তব্য দিয়েছে। প্রত্যেকের বক্তব্য কমিটি কাগজে লিপিবদ্ধ করেছে। কমিটির প্রধান বলেন, যারা গোপনে স্বাক্ষ্য দিতে ইচ্ছুক তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না। আর কমিটি গোপনেই স্বাক্ষ্য রেকর্ড করবে। সে সঙ্গে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বক্তব্য প্রদানকারী প্রত্যক্ষদর্শীর স্বাক্ষর রাখা হবে। গতকাল রোববার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কমিটির প্রথম দিনের কাজ শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে কমিটি ঘটনাস্থলে আসার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এলাকাবাসীদের অবহিত করা হবে।
এদিকে শনিবার সকাল ১১টায় বিজিবি’র প্রায় ১৫০ সদস্য মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে এসে হরিপুরের বহরমপুর গ্রামের হবিবর রহমান ও জসিমকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তাদেরকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার গ্রামে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। গ্রামে ফিরে হবিবর রহমান সাংবাদিকদের জানান, হঠাৎ দুপুরের দিকে বিজিবি এলাকায় প্রবেশ করে আমাকে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমাকে আবার পুনরায় গ্রামে দিয়ে যায়। তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।
ঘটনার পর পুনরায় বিজিবি’র সদস্যরা মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল ও আশেপাশে টহল দেয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার লোকজন। তাদের দাবি ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই বিজিবি দলবেধে এসে এলাকার লোকজনকে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রামে দিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের ধারণা, তদন্ত কমিটির কাছে যাতে প্রকৃত সত্য কেউ প্রকাশ করতে সাহস না পায় সে জন্যই বিজিবি এমন মহড়া দিচ্ছে। তারা বিজিবির লোকজন যাতে ওই গ্রামে প্রবেশ না করে এবং এলাকার লোকজনকে বিনা কারণে ক্যাম্পে ধরে না নিয়ে যায় এ জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এর আগে প্রথম দিন শনিবার বিকাল ৫টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট নুর কুতুবুল আলম। এ সময় কমিটির ৬ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন পীরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ঠাকুরগাঁও সেক্টর সদর দপ্তর বিজিবি’র সহকারি পরিচালক, ঠাকুরগাঁও পাবলিক প্রসিকিউটর, হরিপুর থানার ওসি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। কমিটির পরিদর্শনের সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামে গরু জব্দ করাকে কেন্দ্র করে বিজিবি-গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ঘটে। বিজিবি গুলি চালালে স্কুলছাত্র ও শিক্ষকসহ ৩ জন নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। গত বৃহস্পতিবার নিহত তিনজনসহ প্রায় ২৫০ জনের বেশি গ্রামবাসীকে আসামি করে বিজিবি হরিপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।