পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় প্রেসক্লাব ও বাইতুল মোকাররম মসজিদে জানাজার পর কবি আল মাহমুদের লাশ নিজ গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বাদ জোহর বাইতুল মোকাররমে কবির দ্বিতীয় জানাজা শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা হয় কবির লাশবাহী গাড়ি। গতকাল রাতে কবি আল মাহমুদের ব্যক্তিগত সহকারী ও শ্রুতি লেখক আবিদ আজম জানান, কবির নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কবির লাশ বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বাংলা একাডেমির পর জাতীয় প্রেসক্লাবে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হন কবি আল মাহমুদ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কবির লাশ আনা হয় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে কবি, সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ কবির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন যে স্বাধীনতা, সেটির পেছনে তার অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণযোগ্য। তার অনুপস্থিতিতে তার স্বপ্ন জারি থাকুক, এই সমাজকে নিয়ে দেখা তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক। যখন তার প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি, তখন তাকে আল্লাহ তায়ালা নিয়ে গেছেন। তিনি শ্রেষ্ঠতম স্থানটি পাক।
কবির লাশ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান গীতিকার ও সুরকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তিনি বলেন, আমরা শহীদ মিনারে কবির মরদেহ নিয়ে যেতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেয়নি। আমরা সব অপমানের জবাব দেবো। কিন্তু উনার সামনে এখন আমরা কটূ কথা বলব না।
সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, আল মাহমুদ মূলধারার একজন অগ্রজ নাগরিক ছিলেন। তার ইন্তেকালে বাংলা সাহিত্যে যে শূন্যতা তৈরি হলো, তা পূরণ হওয়ার নয়।
পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা এবং জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ (জাসাস) বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কবিকে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রেসক্লাবে কবির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কবির সন্তান মীর মোহাম্মদ মনির বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে বাবাকে ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। উনার ইচ্ছা ছিল শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করবেন। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। বাবা নিজের অজান্তেও কোনো ভুল করে থাকলে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনারা দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করেন।
এর আগে, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কবির লাশ নেওয়া হয় বাংলা একাডেমিতে। সেখানে একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী কবির লাশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে কবিকে নিয়ে আসা হয় প্রেসক্লাবে।
এর আগে, গত শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন সোনালী কাবিন খ্যাত কবি আল মাহমুদ। গত শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
নিউমোনিয়া ও বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ৯ ফেব্রুয়ারি আল মাহমুদকে ধানমন্ডির শঙ্করের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকরা কবি আল মাহমুদকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন।
কবি আল মাহমুদের পুরো নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মীর আবদুর রব ও মাতার নাম রওশন আরা মীর। তার দাদা আবদুল ওহাব মোল্লা হবিগঞ্জ জেলায় জমিদার ছিলেন। ১৯৬৩ সালে আল মাহমুদের প্রথম কবিতার বই ‘লোক লোকান্তর’ প্রকাশিত হয়। এরপর প্রকাশিত হয়, ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালী কাবিন’। কবিতা ছাড়াও আল মাহমুদ লিখেছেন উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী। তিনি একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।