পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত ২০ বছর ধরে ব্যাংকিং খাতে কি পরিমাণ অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঋণ খেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন আদালত।
প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত একটি রিটের শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এসময় আদালত বলেছেন, যারা লোন নিচ্ছে তাদের ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। সরকারি- বেসরকারি ব্যাংকগুলো চরম দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে একটি শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আদালত বলেছেন, দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক খাতে একটি নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা উধাও হয়ে গেছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ দেয়া হচ্ছে, কিন্তু কোনো সিকিউরিটি মানি নাই। যারা লোন নিচ্ছে তাদের ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের সরকারি- বেসরকারি ব্যাংকগুলো চরম দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়ার উপর জোর দিচ্ছে আদালত।
যারা ঋণ নিয়েছেন এবং অর্থ পাচার করেছেন, তাদের তালিকা করে আদালতে দাখিল করতে বলেছে আদালত। আত্মসাতের অর্থ দেশ কিংবা বিদেশের যেখানেই থাকুক না কেন, তা ফিরিয়ে আনতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও প্রতিবেদন উল্লেখ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে আর্থিক দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠন করে সে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, সালেহ উদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সিটি ব্যাংক এনএ বাংলাদেশের সাবেক সিইও মামুন রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থপাচার রোধে কেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গভর্নরের প্রতি ৩ দফা নির্দেশনা: এক কোটি টাকার উপরে ঋণ খেলাপিদের নাম, ঠিকানা, তালিকা আদালতে দাখিল করতে হবে। অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে এবং ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে যে অনিয়ম চলছে, তা বন্ধে কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
আদেশের পর মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, আদালত যে তালিকা চেয়েছেন, সে তালিকা এলেই বোঝা যাবে কারা লোন নিয়েছেন, কারা লোন নিয়ে পরিশোধ করেননি, কারা মানি লন্ডারিং করেছেন বা করছেন। তিনি বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে কিছুদিন অগে একটা রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে আমেরিকা থেকে। সেখানে কিন্তু বলা হয়েছে কত হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। যে সমস্ত দেশে অর্থ যায় তাদেরও কিন্তু রিপোর্ট আছে। এসব রিপোর্ট ব্যাংকের গভনর্রকে কালেক্ট করে আদালতকে জানাতে হবে। এই আইনজীবী বলেন, পত্র-পত্রিকায় যা দেখেছি, তাতে এক লক্ষ কোটি টাকার উপরে অর্থপাচার হয়েছে বলে আমরা জানি। আর লোন নেয়ার ক্ষেত্রে এক-দুই লক্ষ কোটি টাকার লোন বিভিন্ন লোকে পরিশোধ করছেন না।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাংকিং খাতে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক ব্যাংকগুলোতে ঋনের ওপর সুদ মওকুফ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রনয়ণের জন্য কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সহ ৫মন্ত্রণালয়ের সচিবদের একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে। ৭ দিনের মধ্যে সে নোটিশের কোন সদুত্তর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।