বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রধানমন্ত্রী চাইলেই কেবল বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন ‹খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় প্রধানমন্ত্রীর নয়, আদালতের। কিন্তু জনগণ তো জানে ভিন্ন কথা। জনগণ জানে প্রধানমন্ত্রী চাইলেই কেবল বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। এটাই সত্য, এটাই স্বতঃসিদ্ধ কথা। কারণ আমরা জানি আইন-আদালত, পুলিশ-প্রশাসন, বিচার বিভাগ সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে। গতকাল (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, তাঁর সুচিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়ারও কোন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। না দেয়া হচ্ছে মুক্তি, না সুচিকিৎসা। আইনত: জামিনযোগ্য মামলাতেও জামিন দেয়া হচ্ছে না। শুধু নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই শেখ হাসিনা প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্বকে বাইরে থাকতে দেননি। কারণ খালেদা জিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে আপোষহীন থাকতেন। ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে তাঁর প্রবল অবস্থান থাকতো। তাই এখন অসুস্থতা-যন্ত্রণা ও মানসিক নির্যাতনের এক বিষাদঘন পরিবেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে দেশনেত্রীকে। এই মূহুর্তে দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা দিতে হবে এবং নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী চরম অরাজকতা বিরাজ করছে। কোথাও যেন কোন কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই। আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। গুম-খুন-বিচার বহির্ভ‚ত হত্যার সাথে সামাজিক অনাচার মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলে আওয়ামী সরকারের নৈরাজ্যে সারাদেশে এক বিভিষিকাময় পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। অথচ আইনের শাসন থাকলে বিচার ব্যবস্থায় আতঙ্কের কোন জায়গা থাকতো না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভোট ডাকাতির অপকর্মে ব্যবহার করায় তারা এখন আইন কানুনকে তাচ্ছিল্য করছে এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের চাহিদা পূরণ না করলে নারী-পূরুষ সকলেই আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে তাদের হাতেই মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীন।
পুলিশের নিপীড়ন বেড়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে পুলিশদের বলেছেন দ্রুত মামলার কাজ নিষ্পত্তি করতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে আইন শঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে গেছে। সারাদেশে থানায় থানায় পুলিশি নিপীড়ণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে যেসব গায়েবি মামলা দায়ের করেছিল সেসব মামলায় চার্জশীট দেওয়ার নাম করে ব্যাপক বানিজ্য চলছে। বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। অন্যদিকে হাজার হাজার নেতাকর্মী যারা কারাগারে বন্দী আছেন, আদালত থেকে জামিন লাভের পর তাদেরকে আবার শ্যোন এ্যারেস্টের নামে হয়রানী ও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও কারাগারের মধ্যে বন্দীদের কাছ থেকেও নানাভাবে প্রতিনিয়ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এটিকেই বলে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য মিথ্যা মামলার সাথে ড্রাগের মামলা দিয়ে হেয় করা হচ্ছে। আটক বিএনপি’র বহু নেতাকর্মীদেরতে তাদের আইনজীবীদের সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য শাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।