পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী চাইলেই কেবল বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন 'খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় প্রধানমন্ত্রীর নয়, আদালতের'। কিন্তু জনগণ তো জানে প্রধানমন্ত্রী চাইলেই কেবল বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। এটাই সত্য, এটাই স্বতঃসিদ্ধ কথা। কারণ আমরা জানি আইন-আদালত, পুলিশ-প্রশাসন, বিচার বিভাগ সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, তাঁর সুচিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়ারও কোন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। না দেয়া হচ্ছে মুক্তি, না সুচিকিৎসা। আইনত: জামিনযোগ্য মামলাতেও জামিন দেয়া হচ্ছে না। শুধু নির্বাচন থেকে দুরে রাখার জন্যই শেখ হাসিনা প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিকে বাইরে থাকতে দেননি। কারণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে আপোষহীন থাকতেন। ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে তাঁর প্রবল অবস্থান থাকতো। তাই এখন অসুস্থতা-যন্ত্রণা ও মানসিক নির্যাতনের এক বিষাদঘন পরিবেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে দেশনেত্রীকে। এই মূহুর্তে দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা দিতে হবে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, ভুয়া ভোটের সরকারের অবৈধ শাসনের শুরুতেই দেশব্যাপী চরম অরাজকতা বিরাজ করছে। কোথাও যেন কোন কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই। আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যার সাথে সামাজিক অনাচার মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলে আওয়ামী সরকারের নৈরাজ্যে সারাদেশে এক বিভিষিকাময় পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। অথচ আইনের শাসন থাকলে বিচার ব্যবস্থায় আতঙ্কের কোন জায়গা থাকতো না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভোট ডাকাতির অপকর্মে ব্যবহার করায় তারা এখন আইন কানুনকে তাচ্ছিল্য করছে এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের চাহিদা পূরণ না করলে নারী-পুরুষ সকলেই আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে তাদের হাতেই মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীন।
ওবায়দুল কাদেরকে সড়কের প্রতি মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণপরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিনই সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। তারপরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী নেতাদের বক্তব্যে অন্যদের প্রতি পরামর্শের ফুলঝুরি থাকলেও নিজেদের ব্যর্থতার কথা বেমালুম ভুলে যাচ্ছেন। গতকালও ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন-বিএনপি কিয়ামত পর্যন্ত অভিযোগ বা নালিশ করতেই থাকবে। বিএনপি’র নালিশ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের পক্ষের নালিশ, দেশে গণতন্ত্র কায়েম করার জন্য নালিশ, অনাচারের বিরুদ্ধে নালিশ, বাক-স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নালিশ, দেশের মানুষের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নালিশ, লুট হওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের কবল থেকে উদ্ধারের নালিশ, মানুষের ন্যায় বিচারসহ সুশাসন প্রতিষ্ঠার নালিশ, নজীরবিহীন মিড নাইট ভোটের বিরুদ্ধে নালিশ, আওয়ামী সরকারের অবৈধ সত্তার বিরুদ্ধে নালিশ। এই নালিশ শুধু ন্যায়সঙ্গত নয়, এটি হচ্ছে সময়ের দাবি। এই নালিশ মিড নাইট সরকারের অবৈধ সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক সাইরেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই নালিশগুলোই প্রতিবাদের আকারে রাজপথে ঢেউ তুলবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেশ থেকে সুশাসন বিতাড়িত করে রক্তঝরা শাসননীতির ওপর ভর করে এখন অন্যদের জন্য পরামর্শ কেন্দ্র খুলে বসেছেন। অন্যদের পরমামর্শ থেকে বিরত থেকে সড়কের দিকে তাকান, গণপরিবহণের দিকে তাকান। কারণ গণপরিবহণের নৈরাজ্যের দায়, সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যূর দায় আপনি এড়াতে পারবেন না। গতকালও সড়কে ২০ জন মারা গেছে। এছাড়াও সড়কে-মহাসড়কে স্মরণকালের চেয়ে বর্তমান মহাদূর্ভোগে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। মৃত্যুশোকে স্বজনদের আহাজারি করছে, আর হাজার হাজার মানুষের পঙ্গুত্ব বরণ করে ভুক্তভোগীরা অনিশ্চিত জীবন নিয়ে হতাশা ও চরম দু:খ-কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছে।
পুলিশের নিপীড়ন বেড়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে পুলিশদের বলেছেন দ্রুত মামলার কাজ নিষ্পত্তি করতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে আইন শঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে গেছে। সারাদেশে থানায় থানায় পুলিশি নিপীড়ণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে যেসব গায়েবি মামলা দায়ের করেছিল সেসব মামলায় চার্জশীট দেওয়ার নাম করে ব্যাপক বানিজ্য চলছে। বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। অন্যদিকে হাজার হাজার নেতাকর্মী যারা কারাগারে বন্দী আছেন, আদালত থেকে জামিন লাভের পর তাদেরকে আবার শ্যোন এ্যারেষ্টের নামে হয়রানী ও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও কারাগারের মধ্যে বন্দীদের কাছ থেকেও নানাভাবে প্রতিনিয়ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এটিকেই বলে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’। বিএনপি’র রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পুলিশী মামলা দিয়ে হয়রানী করতে গিয়ে বিচার-ব্যবস্থাকে নড়বড়ে করে ফেলা হয়েছে। এদেশে আওয়ামী ক্ষমতাসীনরা চাইলেই মামলা দিতে পারে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য মিথ্যা মামলার সাথে ড্রাগের মামলা দিয়ে হেয় করা হচ্ছে। আটক বিএনপি’র বহু নেতাকর্মীদেরতে তাদের আইনজীবীদের সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না।
এসময় তিনি বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, এ্যাড: শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, একরামুল হক বিপ্লব, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মাদ শামীম,
হযরত আলী, মোঃ আবুল হাশেম বকর, মিয়া নুর উদ্দিন অপু,
মনোয়ার হোসেন ও ছাত্রনেত্রী আরিফা সুলতানা রুমাসহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য শাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।