রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছাসহ চরবাদাম ইউনিয়নের একাংশে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, তার ছেলে রাজু, পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার বাবুল, দালাল নাজিম, ইউপি সদস্য ইউসুফ মেম্বারের যোগসাজসে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গ্রামের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চর পোড়াগাছা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও হারুন বাজারের সভাপতি নাজিম, সৈয়দ আহাম্মদ, ঠিকাদার বাবুল, চেয়ারম্যানের ছেলে রাজুসহ অসাধু চক্রটি এ অবৈধ কার্যক্রম একের পর এক এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে রামগতি পল্লীবিদ্যুতের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। দালালের মাধ্যমে গ্রাহক প্রতি ৫/৭ হাজার টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের সুনামের বদলে দুর্নাম ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায, উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চর বাদাম ইউনিয়নের ৯নংওয়ার্ড পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকায় পল্লীবিদ্যুতের নতুন লাইন নির্মাণ ও সংযোগ কাজে টাকা হাতিয়ে নেয় একটি দালাল চক্র।
স্থানীয় ভূক্তভোগী খালেদা, সেলিম, হেলালসহ অনেকে জানায়, এই দালালদের খপ্পড়ে পড়ে সর্বশান্ত নদীভাঙা সাধারণ মানুষ। খুটি স্থাপন, গাছের ডাল কাটা, সঞ্চালন লাইন টানতে প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে ৩/৫ শত টাকা করে আদায় করছে সংঘবদ্ধ দালালরা। সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বিদ্যুৎ মিটারসহ প্রতি গ্রাহক পরিশোধ করছেন ৫/৭ হাজার টাকা। উক্ত লাইনে প্রায় ৮শত গ্রাহকের বিপরীতে টাকা নেওয়া হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা বলেন, চেয়ারম্যান ও তার নিয়োজিত দালালরা গ্রাহক প্রতি ৫/৭ হাজার টাকা করে আদায় করছে। এছাড়া মিটার দেওয়ার সময় মিটার প্রতি ২ হাজার ৫শ টাকার দাবি তাদের। এভাবে ওই এলাকায় প্রায় আট শতাধিক পরিবার থেকে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেওয়ার নামে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন দালাল চক্রটি। ইউসুফ মেম্বার তার ওয়ার্ডে প্রতিটি গ্রাহক থেকে ৭/৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। প্রধান সড়কের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে দুটি দোকান দিয়ে বহাল তবিয়তে দালালী করে যাচ্ছেন তিনি। এলাকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের আলোকে রামগতি পল্লীবিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক কয়েকবার লোক দেখানো তদন্ত হয়েছে। কোন তদন্তেরই সুফল পায়নি জনগণ। স্থানীয়দের অভিযোগ দালালের নির্দেশনা ছাড়া পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারের লোকজন লাইন নির্মাণ এবং মিটার সংযোগ দেন না। বিদ্যুৎ সংযোগের কথা বলতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন দালালদের কাছে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন। একটি মিটার ‘সার্ভিস’ তার লাগাতে গেলে পল্লীবিদ্যুতের লোকজনকে ৫শ থেকে ১হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এসকল কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সচেতন সমাজের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে।
অন্যদিকে আলেকজান্ডার ইউনিয়নের এন ইসলাম সড়কের জনতা বাজার ও ওয়াপদা বাজার এলাকায় মহি উদ্দিন ও জমির আলীর বিরুদ্ধে ২/৩ শত পরিবারের কাছ থেকে ৩/৪ হাজার টাকা করে আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হারুন বাজারের সভাপতি দালাল নাজিম জানান, বিদ্যুৎ সংযোগে দিতে যে টাকা নিয়েছি সে বিষয়ে চেয়ারম্যান সবকিছু জানেন। যা টাকা নিয়েছি তা চেয়ারম্যানের কাছে আছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের মুঠোফেনে কথা বলতে চাইলে তিনি অসুস্থ বলে ফোন কেটে দেন।
লক্ষীপুর পল্লি বিদ্যুতের জিএম শাহাজাহান কবির জানান, দুর্নীতিবাজ সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল হক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।