পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাশিয়া বিশ্বমানের সঞ্চয়কারীতে পরিণত হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এত বেশি সোনা স্তূপীকৃত হয়েছে যে তারা গত বছর চীনকে অতিক্রম করে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ সোনা মজুদকারীতে পরিণত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রায়ই উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ভারি বোঝার জন্য জ্বালাতন করে থাকে। রাশিয়ার রয়েছে ৪৭২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ যা দেশের সরকারি ও বৈদেশিক ঋণের সম্মিলিত পরিমাণ ৪৫৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি যা আইএমএফ সুপারিশ করে ।
অর্থনীতিবিদরা সঞ্চয়ের এ সব চোখ ভোলানো অংকের কোনোটিকেই ভালো বলে বিবেচনা করছেন না। রাশিয়ায় বিনিয়োগ কিভাবে পিছিয়ে পড়েছে এবং পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞা কিভাবে তার অর্থনীতিকে নিষ্প্রভ করে দিয়েছে, এগুলো অংশত তারই প্রতিফলন। রাশিয়া যখন নীতি পরিবর্তন করছে ও বড় অবকাঠামো বিষয়ক প্রকল্পগুলোতে ১০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সে সময় এ নিষেধাজ্ঞার ভার রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির ভবিষ্যত কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করতে চলেছে।
রাশিয়ায় বেসরকারিকরণের অগ্রনায়ক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়েগর টি. গাইদারের নামে নামকরণকৃত এক অর্থনৈতিকি ফোরামে গত মাসে চালু হওয়া নতুন কার্যক্রম হচ্ছে রাশিয়ার প্রবৃদ্ধিকে স্থিতিশীল করার এক পুরোমাত্রার নির্মাণ ও ব্যয় উদ্যোগ। ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন ধনকুবেররাও যাদের প্রকাশ্য সমাবেশ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।
২০২৪ পর্যন্ত রুশ ফেডারেশনের জাতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নামের এ কর্মসূচিটিকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বলা হয় না। সোভিয়েত আমলে পঞ্চবার্ষিকী কর্মসূচিই ছিল কেন্দ্রীয় হাতিয়ার এবং অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও সরাসরি ব্যয় নির্বাহের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন এর উপরই নির্ভরশীল ছিল। তবে বর্তমান কর্মসূচিও পাঁচ বছর মেয়াদি হবে এবং এ বছরের প্রথমার্ধেই তার প্রথম ব্যয় বরাদ্দ ঘোষণার আশা করা হচ্ছে।
হায়ার স্কুল অব ইকনোমিকস -এর এক অধ্যাপক আলেকসান্দর আব্রামভ বলেন, এখন কেউই এটা লুকাচ্ছে না। ‘২০১৯-এর অর্থনৈতিক প্রতিপাদ্য হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ব্যয়।’
গোল্ডম্যান শ্যাকস-এ প্রধান রুশ অর্থনীতিবিদ ক্লিমেন্স গ্রেফ একে ‘অত্যন্ত ভিন্ন এক উন্নয়ন মডেল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়া কয়েক বছর ধরে এ মডেল অনুসরণ করছে। তিনি বলেন, সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির সাথে ভোক্তা ব্যয় উৎসাহিত করার পরিবর্তে সড়ক, বন্দর ও হাসপাতালে অর্থ ঢালার পথে যাচ্ছে।
২০১৪ সালে বিতর্কিত ক্রিমিয়া অন্তর্ভুক্তির পর পাশ্চাত্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তখন থেকে রাশিয়া মন্দার শিকার বা প্রবৃদ্ধির পরিমাণ অতি সামান্য। রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা সোমবার জানায়, ২০১৮ সালে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ২.৩ শতাংশ।
একই সময়ে রাশিয়া সরকার ও কোম্পানিগুলো বিশাল সঞ্চয় পুঞ্জীভূত করেছে। আইন অনুযায়ী অর্থনীতিকে যা ভাসিয়ে রেখেছে সেই তেলের রফতানি কর অবশ্যই সঞ্চিত রাখতে হবে যখন তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৪০ ডলারের উপর উঠবে। তাই এ অর্থ সার্বভৌম সম্পদ তহবিলে যাচ্ছে।
আমেরিকান ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার সঞ্চয়কারী ব্যাংকগুলোকে বসিয়ে দিয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা দেশের বৃহত্তম ব্যাংকগুলো ও তেল কোম্পানিসমূহকে পাশ্চাত্যের ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ গ্রহণ বন্ধ করেছে । তাই কোম্পানিগুলোকে সময় অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ‘ডেলিভারেজিং’ নামের একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। গ্রেফ বলেন, এর ফল হয়েছে সঞ্চয় স্তূপীকৃত হওয়া ও কম বিনিয়োগ। তিনি বলেন, তারা অর্থনীতির বাইরে সম্পদ স্তূপীকৃত করছে।
নতুন কর্মসূচির লক্ষ্য মূলধন বিনিয়োগকে জিডিপির ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে বর্ধিত করা। পুতিন এটা চাইছেন এবং তার অর্থমন্ত্রী অ্যান্টন জি. সিলুয়ানভ গাইদর ফোরামে অর্থনীতিবিদদের এক সভায় বলেন যে রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার নতুন পদ্ধতি কার্যকর করছে।
সিলুয়ানভ বলেন, আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি ছয় বছর আগের চেয়ে ভিন্ন এই অর্থে যে আমরা এখন উল্লম্ব সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি তৈরি করছি। এটা একেবারে উপর থেকে আসবে ও নীচে যাবে।
কর, পেনশন ও বাজেট নীতির উপর থাবা বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোর তহবিল যোগাবে। রাশিয়া গত বছর অবসর গ্রহণের সময় পাঁচ বছর বৃদ্ধি করে পেনশন ব্যয় কমিয়েছে এবং এ বছরের শুরুতেই মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ২ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করেছে।এ উভয় পদক্ষেপের অর্থ অবকাঠামো ব্যয়ের জন্য অর্থ উন্মুক্ত করা। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ব্যবসার মালিকদের সাথে আলোচনা করেছেন ও বিশদ পরিকল্পনার অনুরোধ জানিয়েছেন। এটা মসৃণভাবে কাজ করবে নাকি ভীতি ও জোরাজুরি দিকে এগোবে তা স্পষ্ট নয়।
ক্রেমলিন চায়, সম্পদশালী ব্যবসায়ীরা তার নীতির প্রতি সাড়া প্রদান করুক যাকে তারা দেশপ্রেম বলে আখ্যা দিয়েছে। কারো কারো জন্য এর বিরোধিতা করা আর্থিক ও ব্যক্তিগত ভাবে বিপর্যয়কর হয়েছে। এক সময়ে রাশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মিখাইল বি. খোদরকোভস্কি পুতিনের রাজনৈতিক বিরোধীদের অর্থায়ন এবং তেলের উচ্চ করের প্রতিবাদ করে দশবছর কারাগারে কাটিয়েছেন।
গাইডার ফোরামের একেবারে পূর্বমুহূর্তে রাশিয়ান ইস্পাত কোম্পানি সেভারস্টাল-এর প্রধান শেয়ারহোল্ডার ও চেয়ারম্যান আলেক্সেই এ. মোরদাশভ রাশিয়ার ব্যবসা সংবাদপত্র ‘ভেদোমস্তি’তে এক মন্তব্য নিবন্ধে লিখেছিলেন যে, তার ও সহযোগী শিল্পপতিদের স্বেচ্ছায় এতে যোগদান করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, তাদের বিদেশী সমস্যার কথা উল্লেখ করা এবং ভালো সময় না আসা পর্যন্ত আপনাদের কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও রূপান্তরে বিলম্ব করা উচিত হবে না।
মোরদাশভ তার ইস্পাত কারখানাগুলোতে বার্ষিক ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। অন্য রুশ শিল্পপতিরা সন্তর্পণে তাদের ব্যয় পরিকল্পনা বৃদ্ধি করেন যাতে বোঝা যায় যে, হাতের মোচড় কাজ করছে। অর্থনীতিবিদরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন যে, অর্থনীতিতে সরকারের বৃহত্তর সংশ্লিষ্টতা রাশিয়ার জন্য হবে মই দিয়ে ডলার মতো যা রাশিয়া আগেও করেছে। রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্স-এর গবেষণা ফেলো ইউরি দানিলভ বলেন, তারা বলে, সরকারের টাকা আছে। সরকার সব কিছুর জন্য টাকা দেবে। এটা ক্ষতিকর চিন্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।