পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ৪৮ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনে আওয়ামী লীগে মোট ১৪ জন প্রার্থী নিজেরাই নিজেদের প্রতিদ্ব›িদ্ব । এর মধ্যে দক্ষিণ খান ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বন-পরিবেশ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন, দক্ষিণ খান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুজ্জামান মিঠু, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, যুবলীগের ঢাকা উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মুকুল, আমিনুল ইসলাম হান্নান, বরাদুল আলম চান্দুসহ সকল প্রার্থীই স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা।
শুধু এই ওয়ার্ডই নয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই দলের প্রার্থী ৬ থেকে ১০ জন প্রার্থী। যারা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, বিলুপ্ত ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দল সমর্থক বর্তমান চেয়ারম্যান।
এছাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনেও একেকটিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ থেকে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও সমান সংখ্যক প্রার্থী রয়েছে দলের। যারা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি। নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্ব›িদ্ব হয়েছে।
সূত্র জানায়, টানা তিনবারে ক্ষমতার দীর্ঘ সময়ে প্রত্যেক প্রার্থীই নিজ নিজ বলয় তৈরী করে এলাকায় রাজনীতি করছেন। সবাই বিত্তশালী; কেউই কাউকে ছাড় দিতে প্রস্তুত নন। দলের সমর্থন পেতে সবাই চেষ্টা করে চলছেন। তারা মনে করছেন, দলের মনোনয়ন পাওয়া মানেই নির্বাচনে জয়লাভ করা। কারণ মনোনয়ন পেলে সকল নির্বাচনী প্রশাসন তার পক্ষে কাজ করবে বলে মনে করছে প্রার্থীরা। দলের মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেন প্রার্থীরা। তবে কিছুটা শঙ্কা থাকছে এ ধরণের মানসিকতার প্রার্থীদের।
এ রকম প্রায় বিশ জন প্রার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা ইনকিলাবকে জানান, গত নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে আমাদের লড়াই হয়েছে। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করেছে। কিন্তু এবার প্রার্থী তো আওয়ামী লীগেরই সবাই। দলের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা ও মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে প্রভাবিত করার শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।
দলের মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করার কারণ হিসেবে প্রার্থীরা বলছেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে যে প্রার্থী তালিকা পাঠানো হয়েছে তা উপজেলা ও জেলা নেতারা নিজের মত করে প্রার্থীদের নাম দিয়েছেন। তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। আর যেহেতু কেন্দ্রে নাম যায়নি তাই তাদের মনোনয়ন পাবারও সম্ভাবনা নেই। তাই ক্ষোভ থেকেই নির্বাচন করবেন, দল থেকে বারণ করা হলেও তা তারা মানবেন না। এসব বিষয়ে নিয়ে ধানমন্ডির দলের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তৃণমূল থেকে প্রায় সাত’শ অভিযোগ জমা পড়েছে গত এক সাপ্তাহে।
এমনাবস্থায় দলের ঐক্য সংহত রাখা নিয়ে হাইকমান্ড কিছুটা চিন্তিত। প্রার্থিতা বা ভোটে জয় নিশ্চিত করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়ায় কি না সে বিষয়ে আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করছেন শীর্ষ নেতারা।
কারণ হিসেবে দলের বিশ্লেষণ, মনোনয়নে আগ্রহী বেশিরভাগই দলের ত্যাগী নেতা। আবার অনেকেই অভিমান করে দলের মনোনয়ন চাননি, তারা নির্বাচন করছেন। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্ররাও মূলত দলেরই প্রার্থী। ঘুরেফিরে পক্ষে বিপক্ষে প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দলটির স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, প্রতিটি পদে দলের একাধিক প্রার্থী আছেন। আমরা চেষ্টা করছি একক প্রার্থী নির্ধারণে। এ নিয়ে আমরা একাধিক বৈঠকও করেছি।
এ নিয়ে গতকাল দলীয় সভানেত্রীর (শেখ হাসিনা) নেতৃত্বে দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে সংয়বাদ সম্মেলনে দলের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
সূত্র জানায়, শক্তিশালী প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় নির্বাচন অর্থবহ ও উৎসবমুখর করতে দলের অন্য প্রার্থীদের ভোটের মাঠে রাখা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিলেও বিদ্রোহীদের ব্যাপারে এবার নমনীয় থাকবে দলটি। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৩৮টি ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে দলীয় সমর্থন দেয়া হবে না। তবে ঢাকা সিটির ওয়ার্ডগুলোতে অনেক প্রার্থীকে দলের গ্রিন সিগনাল দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে উপজেলাতে একজন করে প্রার্থী দেয়া হলেও দলের মধ্যে ব্যাপক লড়াই হবে বলে জানা গেছে। কারণ দলের মনোনয়নের বাইরেও প্রার্থীরা কেউ এমপির অনুসারি, আবার কেউ জেলার প্রভাবশালী নেতাদের অনুসারি। কেউই কাউকে ছাড় দেয়ার মত অবস্থায় নেই। অনেক উপজেলায় বর্তশান চেয়ারম্যানের নামও তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি।
এমনাবস্থায় দলের মনোনয়ন সকল প্রার্থী স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কারণ দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হলে দলের সমর্থকদের ভোট না পাবার সম্ভাবনা বেশি। আরেকদিকে বিএনপির যেহেতু প্রার্থী নেই তাই তাদের ভোটগুলো যেন পান। এ নিয়ে ইতোমধ্যে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অফার দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। নেতাদের মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করছেন তারা।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনে করছেন, দলের ভোট একাধিক প্রার্থীর মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। বিএনপির ভোট যে যত বেশি টানতে পারবে সে প্রার্থীই নির্বাচনে জয়লাভ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।