রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সরকার বিনামূল্যে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছে নতুন বই। কিন্তু বছর শুরু হলেও বিগত বছরগুলোর মতো এবারো নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ের অবাধ বাণিজ্যের কারণে অভিভাবক-শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা উদ্বিগ্ন। নিষিদ্ধ এসব নোট-গাইড বইয়ের বাণিজ্যের সঙ্গে এক শ্রেণির শিক্ষকদের সহায়তায় সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে মনে করেন অভিভাবকরা। তাদের ধারণা, ওই সিন্ডিকেটের কারণেই বন্ধ করা যাচ্ছে না অসাধু এই ব্যবসা। ফলে শিক্ষকদের সহায়তায় গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটটি প্রতিবছরই হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
কুষ্টিয়াতে এইসব নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রয় জন্য করা হয়েছে একটি কমিটি। এই কমিটির মাধ্যমেই সিন্ডিকেট করে বিক্রয় করছে নিষিদ্ধ গাইড বই। কমিটিতে সভাপতি খন্দকার রহমত আলী ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ফারুক। তাদের ছত্রছায়ায় ঢাকার বিভিন্ন প্রকাশনীর এজেন্টরা দেদারছে এসব গাইড বিক্রি করছে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ৫০% কমিশনে ওইসব নিষিদ্ধ গাইড বই ঢাকা থেকে কিনে নেয় কুষ্টিয়াতে ১৫% কমিশনে বিক্রয় করছে ওই সিন্ডিকটি।
১৯৮০ সালে একটি আইনে এসব বই ছাপা ও বাজারজাত করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে এ আইন কার্যকর হচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নোট-গাইড বই। এবছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন পরবর্তীতে নির্বাচিতদের শপথ, মন্ত্রিসভা গঠনসহ নানাবিধ কারণে ব্যস্ত সরকারসহ আইন-শৃক্সক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে চক্রটি বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে বিক্রি শুরু করেছে এসব নোট-গাইড বই।
শিক্ষার্থীরা বলছে, স্কুল থেকেই এসব বই কিনতে অনেক সময় শিক্ষকরা উদ্বুদ্ধ করেন। শিক্ষকরা ক্লাসে এসে বুকলিস্ট দিয়ে দেন। ওই লিস্ট অনুযায়ী নোট, গাইড, গ্রামার ও ব্যাকরণ বই কিনতে বলা হয়। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই কিনতে হয় নির্দিষ্ট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের এসব সহায়ক বই। অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষকদের পরামর্শ অনুযায়ী ছেলে-মেয়েদের ভালো ফলের আশায় বুকলিস্ট অনুযায়ী বই কিনতে হচ্ছে। এসব নোট বা গাইড বই কেনার সময় ভাবারও অবকাশ থাকে না নিষিদ্ধ কিনা। মূলত এক ধরনের বাধ্যবাধকতা থেকেই এসব বই কেনা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ মার্কেটের পুথিঘর, পপি লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন লাইব্রেরিতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বই। এসব লাইব্রেরিতে গ্যালাক্সি, লেকচার, অনুপম, জননী, জুপিটার, আদিল, দিগন্ত, ক্যামব্রিয়ান, গেøাবাল, ক্লাস ফ্রেন্ড, অ্যাপোলো, সংসদ, ক্যাপ্টেন, সুপার, ছাত্রকণ্ঠসহ অন্তত ৫০টি পাবলিকেশন্সের বই বিক্রি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছরের শুরুতেই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষকদের আকৃষ্ট করতে নানাভাবে প্রস্তাব দেয়। কখনো বিভিন্ন উপহার দিয়ে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বই কিনতে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিতে বলা হয়। কখনো কখনো ঘুষ দেয়া হয় নগদ টাকা। টাকার পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভেদে ২০ হাজার থেকে লাখও ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়কে আসবাবপত্র দিয়ে থাকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, সারাদেশে প্রায় একই চিত্র বিরাজ করছে। নোট-গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা এসব বই পড়াবে তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘অবৈধ নোট ও গাইড বই বন্ধের দায়িত্ব আমাদের নয়। এমনকি অনুমোদনহীন বই পড়ানোর বিষয়ে তদারকি ব্যবস্থা বা বন্ধের কার্যক্রম এনসিটিবিতে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।