বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গত দুই বছরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৮১২ জন। গত দুই বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ১০ হাজার ৭৭৪ জন।
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড.এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, যদি ব্যাংকে দুই বছরে ১০ হাজার কোটিপতি আমানতকারী বাড়ে তাহলে বাস্তবে কোটিপতির সংখ্যা হয়তো আরও বেড়েছে। ফলে সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। কোটিপতিদের একটা বড় অংশ কালো টাকার মালিক।
তিনি বলেন, সমাজে একটি বিশেষ শ্রেণি ধনী হয়ে যাচ্ছে। অন্য শ্রেণি পেছনে পড়ে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো না থাকায় কোটিপতিদের আমানত বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর শেষে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন এক হাজার ৪৩ জন। ২০১৭ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৯৪১ জন।
ব্যাংকে এককোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ৫৭ হাজার ২৩৯ জন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৯৭০ জন। এই হিসাবে একবছরের ব্যবধানে এককোটি টাকার ওপরে আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ২৬৯ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, দুই বছরে ১০ হাজার কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে যাওয়ার তথ্যই বলে দেয় টাকাওয়ালাদের কাছে ব্যাংকিং খাত এখন জিম্মি। এভাবে ব্যাংকে কোটিপতি বেড়ে যাওয়া কোনও ভালো লক্ষণ নয়। এটা হয়েছে মূলত কল্যাণ অর্থনীতির নীতি থেকে সরে যাওয়ার কারণে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই সময় পর্যন্ত পুরো ব্যাংক খাতে হিসাবধারী রয়েছেন ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার ২৭৮ জন।
প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ৪০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন ৩৭৯ জন। ৩৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২১২ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৩২৩ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৫০৯ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৮৫৮ জন। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১ হাজার ৩১৬ জন। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২ হাজার ৬৯৭ জন। পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৮ হাজার ২৩৬ জন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচজন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জনে। জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে হয় ১৯ হাজার ১৬৩ জন। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ হাজার ১৩০ জনে। ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা হয় ২৯ হাজার ৫৩৭।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।