Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্ন : ক্ষমাশীল ব্যক্তিকে কি আল্লাহ বিশেষ পুরস্কার দেবেন?

উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

উত্তর : হিংসা, অহংকার, ক্রোধ, জিদ, রাগ কিংবা উত্তেজনা মানুষকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু কাউকে ক্ষমা করলে কিংবা কারো প্রতি উদারতা প্রদর্শণ করলে, আল্লাহ তায়ালা জগত-সংসারে ঐ ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। ক্ষমাশীলতার গুণে গুণান্বীত হয়ে, একজন সাধারণ মানুষ অসাধারণ মানুষে পরিণত হয়ে যায়। ক্ষমা করা কিংবা উদারতা প্রদর্শণ করা একটি স্বর্গীয় গুণ। ক্ষমাশীল ব্যক্তিই হলো সর্বোত্তম সবরকারী। যিনি ক্ষমা করেন, তিনি ধৈর্য্য ও সৎকর্মশীলদের অর্ন্তভ‚ক্ত। আল্লাহ নিজে দয়াশীল ও ক্ষমাশীল বলে, তিনি ক্ষমাশীল ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যারা সুসময়ে ও দু:সময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সম্বরণ করে মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান:১৩৪)।

সংসার ও সমাজ জীবনে মানুষ একে অপরের রুঢ় বা কটু কথা-বার্তা কিংবা আচার-আচরণের বিনিময়ে মনে কস্ট পেয়ে থাকেন। রুঢ় আচরণকে কেন্দ্র করে, জগত-সংসারে একে অপরের সাথে মতবিরোধ তৈরী হয়। মতানৈক্য ও মতবিরোধকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে দ্ব›দ্ব, সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারীমের মাধ্যমে মানুষদেরকে একে অপরকে ক্ষমা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ কর, কিংবা গোপন কর অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’ (সূরা নিসা:১৪৯)।

ক্ষমাশীল ব্যক্তি আল্লাহর নিকট থেকে বিশেষ পুরস্কার পাবেন। যে ব্যক্তি পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিস্পন্ন করে দেয়, তিনি আল্লাহর নিকট থেকে পুরস্কার পাবেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে,‘ আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপোস নিস্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা শুরা:৪০)।

দান-সাদাকা যেমন সম্পদ কমাতে পারেনা। তেমনি কাউকে ক্ষমা করলে বা কারো প্রতি উদারতা প্রদর্শণ করলে, ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা কখনও কমেনা। বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, সাদাকা করাতে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম: ২৫৮৮)।

উদারতা হলো মুসলমানের বৈশিস্ট্য। কোমলতা মুসলমানের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসূল (সা:) যখন হযরত মুয়াজ (রা:) ও হযরত মূসা (রা:) কে ইয়ামেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন যে, লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দিবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না। (বোখারি:৩০৩৮)। পরিবার সমাজ সংসারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরস্পরের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো, একে অপরকে ক্ষমা করে দেয়া। পরস্পরের ভ‚ল-ক্রুটি গুলোকে শুধরিয়ে দেয়া। ধৈর্য্য ধারণের জন্য পরামর্শ দেয়া। আল্লাহ তায়ালা সকলকে ক্ষমাশীল হওয়া বা উদারতা প্রদর্শণ করার তৌফিক দান করুক। আমীন।



 

Show all comments
  • সোহান ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:০৩ এএম says : 0
    যদি রাস্তার কোনো পাগল(মেয়ে),যার স্বাভাবিক কোনো জ্ঞান বুদ্ধি নেই,তার সাথে যদি কেউ জোর করে অনৈতিক কাজ করে,আর তাতে যদি তার পেটে সন্তান এসে যায় এবং সে সন্তান জন্মগ্রহণ করে....তবে ইসলাম ওই সন্তান কে কি ভাবে দেখে??স্বীকৃতি দেয় কিনা???
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশ্ন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ