পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে এক মামলায় জামিন নিলে অন্য আরেকটি মামলায় জামিন বাতিল করা হয়েছে, হাইকোর্ট জামিন দিলে আপিল বিভাগ আবার জামিন স্থগিত করেছে, পরে আপিল বিভাগ জামিন দিলে নিম্ন আদালত আরেকটি মামলায় জামিন আটকে দিয়েছে, এমনি করে পার হয়ে গেছে একটি বছর। যেসব মামলায় অন্যরা জামিনে রয়েছেন সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। এমনকি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বেগম জিয়াকে চিকিৎসা সেবা পর্যন্ত দিতে সুযোগ দিচ্ছে না সরকার। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বেগম জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সম্পূর্ণ চিকিৎসা না দিয়ে তাঁকে আবার কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে সরকারের নির্দেশে। বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, একতরফা নির্বাচন করার জন্য বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে বিগত সময় ধরে সরকার একের পর এক তৈরি করা হয়েছে ‘স্লেভ ল’ । এই দাসত্বের আইনগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে শুধুমাত্র ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্সটিটিউশনগুলোকে ধ্বংস করে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে নির্মূল করার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় দেশকে অন্ধকার যুগের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দেয়া, প্রশাসন, বিচার, নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেয়া এবং ৩০ ডিসেম্বর ভূয়া ভোটের নির্বাচন অনুষ্ঠান একই সূত্রে গাঁথা।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ দলীয়করণের মাধ্যমে প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিকে কিভাবে কারা দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে তা কি দেশের মানুষকে ভোলানো সম্ভব হয়েছে ? দেশের গণমানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক বছর স্যাঁতসেতে অন্ধকার পরিবেশে একটি পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। কতটা নৃশংস, কতটা নিষ্ঠুর, কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ, কতটা হিংস্র আর বিষাক্ত মানসিকতার হলে ৭৩ বছরের একজন মহিয়সী নারীকে এভাবে জিঘাংসা চরিতার্থ করতে কতটা উন্মত্ত হওয়া যায়, সেই চিত্রটাই দেশবাসী লক্ষ্য করছে। ক্ষমতার অন্ধলিপ্সায় ন্যুনতম মনুষ্যত্বটুকুও সরকার হারিয়ে ফেলেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সম্মানিত বয়স্কা জনপ্রিয় নেত্রীকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জ্বলে-পুড়ে এমনভাবে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়ার দেয়ার কোন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে নেই।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অপরাধ মাত্র একটাই-সেটা হলো জনগণের মাধ্য তাঁর অপরিসীম ও অভাবনীয় জনপ্রিয়তা। এই অবৈধ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যে মিথ্যা মামলায় একটি বছর সম্পুর্ন জবরদস্তি করে জেলে আটকে রেখেছে তাতে তিনি জামিন পেয়েছেন। তারপরও হরেক কিসিমের টালবাহানা করে তাকে কারাগার থেকে বের হতে দিচ্ছে না। দেশের আনাচে কানাচে আওয়ামী অজ্ঞাত-অখ্যাত কর্মীদের দায়ের করা গায়েবী ঠুনকো মামলায় বেগম জিয়ার জামিন নিয়ে ‘মঞ্জুর-নামঞ্জুর’ এর এক অভিনব দৃশ্য দেখছে দেশের জনগণ।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বর্ণনা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম জিয়া প্রচন্ড অসুস্থ। চোখেও প্রচন্ড ব্যথা, তাঁর পা ফুলে গেছে। অথচ তাঁকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। কিছুদিন যাবত নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের নিচ তলায় ছোট একটি কক্ষে অস্থায়ী ক্যাংগারু আদালত সাজিয়ে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানে টেনে এনে জোর করে বিভিন্ন ভুয়া মামলায় শুনানি করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে আমার আহবান-এবার ক্ষান্ত দেন। একজন গুরুতর অসুস্থ বয়স্ক নেত্রীর ওপর আর জুলুম করবেন না। একটি বছর কারারুদ্ধ করে রেখে অত্যাচার করছেন। এবার মুক্তি দিন। ইতিহাস পড়ুন, ইতিহাস বড় নির্মম। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।
তিনি বেগম খালেদা জিয়াসহ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, খায়রুল কবির খোকন, এ্যাড: শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, একরামুল হক বিপ্লব, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মাদ শামীম, হযরত আলী, মোঃ আবুল হাশেম বকর, মিয়া নুর উদ্দিন অপু, মনোয়ার হোসেনসহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।
বিএনপির এই নেতা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা গতকাল বলেছেন-সংসদ নির্বাচনের মতো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। সিইসি’র বক্তব্য দেশ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার গভীর নীলনকশা। একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। নির্বাচনের আগের রাতেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রেখেছেন, ভোটের দিন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি, বিরোধী দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে, এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি, বিএনপিসহ বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সারাদেশের কারাগারগুলোতে এখনও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তারপরও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের রাতেই নির্বাচন সম্পন্ন করে এখন একই ধরণের নির্বাচন আগামীতেও হবে বলে সিইসি যে বক্তব্য রেখেছেন তা জাতির সঙ্গে আবারও একটি প্রতারণা করারই ইঙ্গিত দিলেন। মহাভোট ডাকাতির আয়োজক প্রধান নির্বাচন কমিশনার পুনরায় একইভাবে উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে একজন নিষ্ঠুর ভাঁড়ে পরিণত হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।