Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিইপিজেডের অধিগ্রহণকৃত জমি দখলের অভিযোগ তদন্তে ভূমি অফিস

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ডিইপিজেডের অধিগ্রহণকৃত প্রায় ৫১ শতাংশ জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে ওই জমিটি দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এক অভিযোগের ভিত্তিত্বে তদন্তে দখলের প্রমান পেয়েছে স্থানীয় ভূমি অফিস। এছাড়া বিষয়টির ব্যপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সুপারিশ জানিয়ে আবেদন করেছেন বেপজা কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, সাভারের আশুলিয়া থানার গণকবাড়ী মৌজায় প্রতি শতাংশ জমির দাম প্রায় ২০ লাখ টাকা। সেই অনুযায়ী ৫০.৫০ শতাংশ জমির দাম হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
অধিগ্রহণকৃত জমি স্থানীয় ভ‚মি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে ভ‚মিদস্যুরা তাদের নামে নামজারি ও খাজনা খারিজ করে আশুলিয়া সাব রেজিস্টার অফিসে এস্ট্রো এস্টেড নামে একটি কোম্পানীর কাছে বিক্রির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ডিইপিজেড নতুন জোন সংলগ্ন গণকবাড়ি মৌজায় দুটি দাগে মালিকানা সম্পত্তি ২ একর ২৯ শতাংশ। এরমধ্যে ৯০৭ দাগে পৈত্রিক সূত্রে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে তাহাজ উদ্দিন ২১ শতাংশ জমির মালিক। বাকি ২ একর ৮শতাংশ সম্পত্তি আবু বকর সিদ্দিক গংদের। সাভারের ভ‚মি অফিস সূত্রে জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে ৯আগষ্ঠ সরকার জমি অধিগ্রহণ করে এবং ৭টি চেকের মাধ্যমে সরকার জমির ম‚ল্য আবু বকর গংদের পরিশোধ করেন।
২০১৩ সালে আবু বকর গংদের নামে অধিগ্রহনকৃত জমিসহ ব্যক্তি মালিকানা ২ একর ৫৭ শতাংশ জমি ভ‚মি অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাযোশ করে নামজারি ও খাজনা খারিজ নেন। পরে ওই ভ‚মিদস্যুরা জোরপ‚র্বক ৩ একর জমির ওপর সীমানা প্রাচির নির্মাণ করে ওই জমি এস্ট্রো এস্টেট লিঃ নামে একটি কোম্পানীর কাছে ভ‚মিদস্যু আবু বকরগংরা আনুমানিক ২৮ কোটি টাকায় বিক্রি করেন।
এস্ট্রো এস্টেড লিমিটেড এর পক্ষে আবুল কালাম আজাদ আশুলিয়ার গণকবাড়ী মৌজায় ব্যক্তিমালিকানাসহ দুটি দলিলে (নং-৩৩৫৯ ও ৫৯৩০) ৫০.৫০ শতাংশ অধিগ্রহণকৃত জমি সাবকবলা রেজিস্ট্রি করার কথা স্বীকার করেছেন তখনকার সাব-রেজিস্ট্রার মো. সামসুল আলম। তিনি বলেন, বিক্রেতা এবং ক্রেতাগণ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দু’টি দলিল এক মাসের ব্যবধানে সম্পাদন করেন। দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রেও মূল্য কম দেখিয়ে সরকারের কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (বেপজা) মহাব্যবস্থাপক মো. মেহবুব আলী স্বাক্ষরিত এক পত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) অধিগ্রহণকৃত ৫০.৫০শতাংশ জমিতে যাতে কোন জটিলতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে খারিজ বাতিলের মামলা (নং-৪০৪/১৮) করা হলে তদন্ত করেন আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের কানুনগো (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ লুৎফর রহমান। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, অধিগ্রহণকৃত জমি ব্যক্তি মালিকানার নামে খারিজ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। বাতিল করে মূল জোতভুক্ত করারও সুপারিশ করেন তিনি।
জমির মালিক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বাইপাইল এলাকার তাহাজ উদ্দিনের নিকট থেকে দুটি দলিলে ২১ শতাংশ জমি তিনি ক্রয় করেন। পরে আবু বকর ও তাদের সহযোগীরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকার বিনিময়ে সেই জমি খারিজ করিয়ে বিক্রি করে। এরমধ্যে তার জমিসহ অধিগ্রহণকৃত জমিও রয়েছে। এ ঘটনায় রেজিস্ট্রিকৃত দুটি দলিল বাতিল চেয়ে তাহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যা বিচারাধীন রয়েছে। এমনকি আশুলিয়া থানায় তিনি একটি সাধারন ডাইরীও করেছেন।
মামলার বাদী তাহাজ উদ্দিন মামলাটি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলিল দিয়ে ব্যাংক ঋণসহ সবধরনের লেনদেন ও কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে আশুলিয়ার বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার বুলবুল আহাম্মেদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ