Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এমপির পছন্দে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হত্যা মামলার আসামি

মো. শামসুল আলম খান | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামির নাম প্রস্তাব করেছেন দলীয় এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন।
স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে নিজেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক দাবি করে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ২ ফেব্রæয়ারি তৃণমূল পর্যায়ের ভোটের আয়োজন করে একক প্রার্থী হিসেবে নিজ দাবিকৃত কমিটির যুগ্ম আহবায়ক হাসান মাহমুদ জুয়েলের নাম ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠিয়েছেন। তবে এই পুরো প্রক্রিয়াটিকেই অবৈধ বলে অভিযোগ করেছেন নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এই প্রতিবেদকের কাছে তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের কমিটিকে বৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই হিসেবেই আমরা গত ৩১ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহজাহান কবির সুমনের নাম চূড়ান্ত করেছি। গত শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের কাছে এই তিন প্রার্থীর নাম পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের এই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম.এ.সালাম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন তুহিন ও যুগ্ম আহবায়ক হাসান মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বাধীন দাবিকৃত কমিটিকে প্রায় দেড় বছর আগেই অবৈধ ঘোষণা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না বলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও এই আদেশও লঙ্ঘন করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা চালিয়ে হাসান মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বে আমার বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর ভূইয়াকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এই মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি হচ্ছেন জুয়েল। কিন্তু এরপরেও এমপি নিজের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করতেই অবৈধভাবে কথিত তৃণমূলের নামে জুয়েলের নাম জেলার নেতাদের কাছে প্রস্তাব করেছেন। সংসদ সদস্য তুহিন প্রভাব খাটিয়ে চার্জশিট থেকে জুয়েলসহ কয়েক আসামিকে বাদ দিয়েছেন। আমি নারাজি দিবো।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ জুয়েল বলেন, সংসদ সদস্য তুহিন ও আমার নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বৈধ। হত্যা মামলার আসামির বিষয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছিলো। সিআইডি মামলার তদন্ত করে আমাকে নির্দোষ হিসেবে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের বৈধ-অবৈধ কমিটি ও প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন কমিটিই বৈধ। তারা আমাদের কাছে নাম প্রস্তাব করে পাঠিয়েছেন। এই বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ তবে এসব বিষয়ে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন তুহিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ