পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমান সরকার সারাদেশে এমন একটা ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারো নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যখন ফ্যাসিবাদ চলে, তখন সর্বপ্রথম কাজটা কী করে থাকে? একটা ভয় সৃষ্টি করা, ত্রাস সৃষ্টি করা, সমস্ত জনগণের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে দেওয়া। এই ভীতিতে বাসে বসেও কেউ কথা বলতে চান না, রেস্টুরেন্টে বসেও কেউ কথা বলতে চান না। এভাবে তারা একটা ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে যে এখন আর কেউ কথাই বলতে চায় না।
গতকাল (শনিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়াজ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে সহিংসতা ও নারী : বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকাল টেলিভিশনের টক শোগুলোতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী যান, তারা ওই জিনিসগুলো বেশি বলতে থাকেন কোথাও বিএনপি ভুল করল, কোথায় ঐক্যফ্রন্ট ভুল করল। আর আওয়ামী লীগ যে শুধু ভুল নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিল, সে বিষয়ে কথা বলার সাহস কারও নেই।
তিনি বলেন, এভাবে কোনোদিন একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালিত হতে পারে না। আজকে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, দেশের আপামর জনসাধারণ বলছে। ইকনোমিস্টের মতো পত্রিকা ক্যাপশন করছে, গণতন্ত্রের মৃত্যুর সংবাদ দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীর মিডিয়া জানে, বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে মনে করেন, এখন তো বিএনপিকে ধরছে, ঐক্যফ্রন্টকে ধরছে, ওদেরই ধরুক, আমরা বাঁচব। এবার তো কেউই বাঁচল না, কেউ বাঁচে না। সারাদেশে আসামির সংখ্যা এখন ২৭ লাখ, মামলার সংখ্যা ৯৮ হাজার।
এই পরিস্থিতিতে সবাইকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কেন আমরা মরার আগে মরে যাচ্ছি? কেন আমরা ভয়ে ভীত হয়ে, সন্ত্রস্ত হয়ে সবাই ঘরে ঢুকে থাকার চেষ্টা করছি? ঘরে ঢুকে থেকে তো আমরা বাঁচব না। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে একটা বড় কাজ হয়েছে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। জনগণের জয় হয়েছে, তারা পরাজিত হয়েছে। আপনারা ভয় পাবেন না, সারাদেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে। আমাদের আফরোজা আপা (মির্জা আব্বাসের স্ত্রী) আমাদের সামনে একটা অনুপ্রেরণা। আমরা দেখেছি যে নির্বাচনের সময়ে অনেক বাঘা বাঘা পুরুষরা কেউ বেরুতে পারেননি, তখন কিন্তু তিনি লড়াই করে চলেছেন।
নারীর উপর সহিংসতা প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন একজন বলেছেন, রাজনীতির বাইরে থেকে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। কে করবে, কে দেখবে, কে বিচার করবে, কে শাস্তি দেবে? কারা বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে। একজনের ৯ বছরের মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে, তার মামলা করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিতে হচ্ছে। কোথায় যাবেন আপনারা, সাধারণ মানুষের যাওয়ার কোথাও জায়গা নেই। ভোটের পর নির্বাচনী সহিংসতায় নোয়াখালীর সুর্বণচরে পারুল বেগমসহ নোয়াখালীর কবিরহাট, ঢাকার ফতুল্লা ও খুলনায় নারী নির্যাতনের ঘটনার তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে, অন্যায়কে পরাজিত করতে হবে, ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে আটকে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে ‘আওয়াজ’র সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন প্রফেসর শাহিদা রফিক নারী নির্যাতনের অতীত ও বর্তমান পরিসংখ্যান তুলে ধরে এর ব্যাপকতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার প্রবন্ধে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে একটি আলাদা মন্ত্রণালয় স্থাপন, আইনের কঠোর প্রয়োগ, জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়নসহ ১১ দফা সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন।
আওয়াজের সভানেত্রী বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও বিলকিস ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তাজমেরী এস ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরী আরা সাফা, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মহিলা দলের নেত্রী রাশেদা বেগম হীরা, সেলিনা রউফ চৌধুরী, লায়লা বেগম, রাশেদা ওয়াহিদ মুক্তা, সাদিয়া হক, রাফিকা আফরোজা, নুরজাহান মাহবুব, প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমূখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।