Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সশবজিতে স্বস্তি, বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, গাজর, টমেটো, মুলা, শালগম, শিম, নতুন আলু, লাল শাক, পালং শাকসহ বিভিন্ন রকমের শাক-সবজিতে ভরপুর রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো। আর এতে অনেক বাজারেই মাত্র ১০ টাকা কেজি মিলছে বেশির ভাগ সবজি। সবজির দামে এমন স্বস্তি থাকলেও সাধারণ মানুষকে ভোগাচ্ছে মাছ ও মাংসের দাম। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ বাদে সব মাছই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। গরু ও খাসির মাংসের চড়া দামের মধ্যে ফার্মের মুরগি কিছুদিন স্বস্তি দিলেও দুই সপ্তাহ ধরে সব ধরনের মুরগির দাম চড়া। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, সেগুন বাগিচা কাঁচাবাজার, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রামপুরা বাজারে আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়। লাল কক মুরগি ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা।
একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে খিলগাঁও ও মালিবাগ হাজীপাড়াতে। এ অঞ্চলের বাজারগুলোতে গরুর ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস আগের মতোই ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। রুই মাছ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি। পাবদা মাছ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, পাঙ্গাস মাছ ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, বোয়াল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।
মাছ ও মাংসের দাম এমন চড়া হলেও কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে শাক-সবজির দাম। পাশাপাশি ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ ও নতুন আলুর দাম। গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো বাজারে সব থেকে দামি সবজি তালিকায় রয়েছে করলা। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এ সবজিটির দাম একই ছিল। করলার পরেই রয়েছে লাউ। বাজার ও মান ভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এর পরেই রয়েছে ধুন্দল। এ সবজিটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এই তিন সবজি বাদ দিলে বাকিগুলোর দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই আছে। গত সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে বেশিরভাগ বাজারে ১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য কিছু কিছু বাজারে এখনো বেগুন ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বেগুনের পাশাপাশি ১০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে শালগম, মুলা ও পেঁপে। বিচিবিহীন শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। বিচিসহ শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি।
ফুলকপি ১০ থেকে ২০টাকা পিস এবং বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজি দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটো ও নতুন আলুর। আগের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা। নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের। আগের সপ্তাহের মতো নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আটি। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। সরিষা শাক ৫ থেকে ৫ থেকে ১০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে।
তবে কারওয়ানবাজারে এর থেকেও কম দামে সবজি পাওয়া যাচ্ছে। বাজারটি শিমের পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অর্থাৎ এক কেজি শিমের দাম পড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। ৮ থেকে ১০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে টমেটোও। ৬০ থেকে ৬৫ টাকা পাল্লা বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু।
বাজারটির সবজি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন দুই-একটি বাদে সব সবজির দাম বেশ সস্তা। আরও বেশ কয়েক দিন সবজির দাম এমন সস্তায় থাকবে। এবার বৃষ্টি বা বন্যা না হওয়ার কারণে ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি, এ কারণেই ক্রেতারা কম দামে সবজি কিনতে পারছেন।
রামপুরার মাছ ব্যবসায়ী সুবল বলেন, এবার সব ধরনের মাছের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। সহসা মাছের দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। এর কারণ এবার বৃষ্টি কম হয়েছে, আবার বন্যা হয়নি। বৃষ্টি বেশি হলে বা বন্যা হলে বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়ে যায়, ফলে দাম কিছুটা কম থাকে।
খিলগাঁওয়ের মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, বেশ কয়েক মাস মুরগির দাম তুলনামূলক কম ছিল। তবে দুই সপ্তাহ ধরে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। এক মাস আগে ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, এখন তা ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি এক মাস আগে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ২২০ টাকায়। ছোট পাকিস্তানি কক মুরগি এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, এখন তা ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ