Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৪ জুন ২০২৪, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নদী নিয়ে ‘কানামাছি’ বন্ধ করুন : দেশের ৪৫০ নদ-নদী আক্রান্ত : হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:১০ এএম

নদী দখল ও উচ্ছেদ নিয়ে ‘কানামাছি খেলা’ হচ্ছে মন্তব্য করে হাইকোর্ট বলেছে এই খেলা বন্ধ হওয়া উচিৎ। তুরাগ নদীর অবৈধ স্থাপনা দখলমুক্ত করার নির্দেশনা চেয়ে করা একটি রিট মামলার রায় ঘোষণার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এই পর্যবেক্ষণ আসে।
তুরাগ নদ রক্ষার রায় ঘোষণাকালে হাইকোর্ট বলেছেন, দেশে শত শত নদ-নদী রয়েছে। এসব নদী দখলকে কেন্দ্র করে পৃথক পৃথক মামলা হয়, পৃথক পৃথক আদেশ হয়। দখলদাররা ফের গিয়ে নদী দখল করে, এমনটি চলতে দেয়া যায় না। আমরা সবগুলো একটি ছাতার নিচে নিয়ে আসতে চাই। নদ-নদী নিয়ে এসব কানামাছি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত। শুধু যে তুরাগ নদ আক্রান্ত তা নয়; পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ৪৫০টি নদী অবৈধ দখলদারদের দ্বারা আক্রান্ত।
এর আগে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করা এক রিটে তুরাগ নদের অবৈধ দখলদারদের নাম ও স্থাপনার তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেছিল বিচার বিভাগীয় একটি তদন্ত কমিটি। ওই তদন্ত কমিটির দেওয়া তালিকায় আসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা পরে এ মামলায় পক্ষভুক্ত হন। পরে উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বুধবার রায় ঘোষণা শুরু করেন। আগামী রোববার পযন্ত রায় ঘোষণা চলবে।
আদালত রায়ে বলেন, আমাদের দেশের নদীগুলো জীবন্ত সত্তা। মানবজাতি টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নদী। বিভিন্ন দেশের সরকার আইন প্রণয়ন করে নদীকে বেদখলের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। ঢাকার আশপাশে বহমান চার নদী রক্ষায় এরই মধ্যে আদালত নানা গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু সেসব রায়ের নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়নে বিবাদীরা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তা নেওয়া হলে তুরাগ নদ রক্ষায় হাইকোর্টে আরেকটি মামলা করার প্রয়োজন হতো না। শুধু যে তুরাগ নদ আক্রান্ত তা নয়; আরো ৪৫০টি নদী আক্রান্ত।
এ সময় আদালত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, সাংবাদিকদের তথ্যবহুল প্রতিবেদনের আলোকেই আমরা সমাজের অনিয়মের কথা জানতে পারি। সাংবাদিকরা বংশীবাদকের মতো। নদী দখলসহ সব ধরনের অনিয়মের কথা সাংবাদিকরাই তুলে ধরেন। আমাদের দেশের সাংবাদিকতার অনেক উন্নয়ন দরকার।
আদালত যুক্তরাষ্ট্রের রেফারেন্স দিয়ে বলেন, দুই সাংবাদিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আলোকে সে দেশের সরকার পতন হয়েছিল। আমাদের দেশেও সেই ধরনের এফেক্টিভ জার্নালিজম হওয়া দরকার। এতে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।
রায়ে হাইকোর্ট আরো বলেন, অবৈধ দখলদারদের দ্বারা প্রতিনিয়তই দেশের কমবেশি নদী দখল হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা তৈরি করায় সংকুচিত হয়ে পড়ছে নদী। নাব্যতা ও বেদখলের হাত থেকে নদী রক্ষা করা না গেলে বাংলাদেশ তথা মানবজাতি সংকটে পড়তে বাধ্য। এসব বিষয় বিবেচনা করে তুরাগ নদকে লিগ্যাল/জুরিসটিক পারসন হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
রায়ের বিষয়ে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত রায়ে আমাদের দেশের নদীগুলোকে জীবন্ত সত্তা, জুরিসটিক পারসন বা লিগ্যাল পারসন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে মানুষের মতো দেশের নদ-নদীর কিছু আইনি অধিকার স্বীকৃত হবে।



 

Show all comments
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    আইন আদালত নিয়ে যেমন কানামাছি খেলা হয়, ঠিক তেমনটাই হচ্ছে নদ-নদী খালে বিলে! আশ্চর্য হবার তো কিছু নেই। সবাই fish ক্যাচ করে, without টাচিং water!
    Total Reply(0) Reply
  • সাদ বিন জাফর ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    কোনো কমিশনই কাজে আসবেনা যদি ক্ষমতার রাজনীতির সদিচ্ছা না হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • mohammad rahman ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    হাইকোর্টের কাজ নির্দেশ দেওয়া নির্দেশ বাস্তবায়ন না হলে তলব করা - হাইকোর্টের কাজ কি উপদেশ দেয়া ?
    Total Reply(0) Reply
  • নুরুল আবছার ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    দখলবাজরা কৌশলে তুরাগ দখল করছে।তুরাগ তীরে,বেড়িবাঁধে গড়ে উঠেছে একাধিক ধর্মীয় স্হাপনা। কয়েক বছর আগেও যেখানে বর্ষাকালে গভীর পানি দেখেছি,এখন সেখানে গড়ে উঠেছে স্হাপনা। মিরপুর দিয়াবাড়ির কাছে তুরাগের অপর পাড়ে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে এখনও
    Total Reply(0) Reply
  • সিহাব সুমন ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    দক্ষলদারদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Amirul Islam ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    মহামান্য হাইকোর্ট, এদের প্রশয়দাতা হলো আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আর তাই এই কানামাছি খেলা বন্ধ হবে না,যেমন হয় না ফুটপাত দখল্মুক্ত,যেমন হয় না সরকারি সম্পদ দখলমুক্ত,যেমন বন্ধ হয় না বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরণের হয়রানি!যেমন বন্ধ হয় না মাদকের ছড়াছড়ি! ইত্যাদি ইত্যাদি এই নেতারা ভাল না হলে দেশ ভাল হবে না,প্রসাশন ভাল হবে না, কোন কিছুই ভাল হবে না,!
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Amir ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    Dokhol dar kara.. Ami gonomaddom gulo k bolse real news tule doron pls amra apnader bissas kori pls deshtake bachan pls pls real chitro tule doron pls
    Total Reply(0) Reply
  • Maan Barua ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    শুধু লেখালেখি বলাবলি হবে বাস্তবে কোন সুফল আসবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Arshad Mojumdar Rashed ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    ওরা তো সরকার দলীয় লোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ