Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ময়লার আগুনে গাছ পুড়ে ছাই

ময়লা আবর্জনায় ভরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ভ্যানে করে ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে। শুধু তা-ই নয়, সড়কের পাশের গাছের গোড়ায় রাখা ময়লায় ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আগুন। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকার-চট্রগ্রম মহাসড়কের চান্দিনায় দেখা যায় এ দৃশ্য।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার দাউদকান্দি, গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ ও চান্দিনা এলাকা জুড়ে রয়েছে ময়লার স্তুপ। ওই ময়লাগুলো কোথাও সরিয়ে না নিয়ে দেওয়া হচ্ছে আগুন। আর ওই আগুনে পুড়ে মরছে মহাসড়কের পাশে পরিবেশ বান্ধব অনেক গাছ। দীর্ঘদিন এমন অবস্থা চলতে থাকায় অধিকাংশ গাছ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। ক্রমশই গাছগুলো মরে মহাসড়কের ওপর ভেঙ্গে পড়ছে গাছের ডাল-পালা। এতে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে মহাসড়কের চলাচলরত গাড়ি চালক ও যাত্রীরা। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এভাবে বর্জ্যে আগুন দেওয়ায় মরে গেছে অন্তত ১০০ টির বেশি মহামূল্যবান গাছ। স্থানীয় বাসিন্দা জামাল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বছরের পর বছর এলাকার সব গৃহস্থালি বর্জ্য ভ্যান ও ভটভটিতে করে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে ফেলা হয়। পরে ওই আগুন দিয়ে বর্জ্য পোড়ানো হয়। এ কারণে বহু গাছ মরে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহাদ উল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলে গাছ মেরে ফেলার বিষয়টি ভীষণ উদ্বেগজনক। কোনোভাবে সড়কের ওপর ময়লা ফেলা যাবে না। শিগগিরই তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। বলেন, এরই মধ্যে যেসব ময়লা ফেলা হয়েছে, তা অপসারণ করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। চিপসের মোড়ক, কাগজ, কলার খোসা, কোমল পানীয়’র পরিত্যক্ত বোতল। এরকম বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। রয়েছে ময়লার স্তুপ। গাছের গোড়ায় ফেলা ময়লায় আগুন দিতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে সড়কের পাশের অনেক গাছের ডালে পাতা নেই। গাছ শুকিয়ে হলুদ হয়ে গেছে। সড়কের পাশে ময়লা ফেলার সময় কথা হয় পরিচ্ছন্নতাকর্মী রনি ও তমালের সঙ্গে। এক বছর ধরে তারা নিয়মিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছেন। রনি ও তমাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, স্থানীয় উদ্যোগে বাসাবাড়ি থেকে গৃহস্থালি বর্জ্য সংগ্রহ করে সব ময়লা ভ্যানে করে এনে এসব জায়গায় ফেলা হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বর্জ্য স্তুপ করে রাখা হয়েছে, বর্জ্য রেখেই আগুনে পোড়ানো হচ্ছে। এতে একদিকে বর্জ্যরে বিষাক্ত ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ বিপন্ন হয়ে উঠছে অন্যদিকে বর্জ্যরে দুর্গন্ধে মহাসড়ক ধরে চলাচলকারী পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। এই সড়কে চলাচলকারী মোহনা হাসপাতালের ডা: শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলায় উক্ত স্থান দিয়ে চলাচলের সময় আমাদের নাক চেপে রাখতে হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে চান্দিনার যে অংশে ময়লা ফেলা হয়, তার পাশে একটি বাসায় বসবাস করেন আবদুল মতিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ময়লা ফেলার কারণে ওই এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর থেকে প্রশাসনের সামনে সড়কে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আগুন দিয়ে গাছ মেরে ফেলা হচ্ছে। অথচ কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। আগুনে পুড়ে যাওয়া গাছের গোড়া আগুনে পুড়ে যাওয়া গাছের গোড়া সড়কের ওপরে ময়লা ফেলায় যান চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। বাসচালক আবদুর রহমান বলেন, সড়কের ওপর ময়লা ফেলায় গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়। ময়লা ফেলা বন্ধ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাসড়ক

৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ