Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইনি বাধা না থাকলেও খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৫ পিএম
 বেগম খালেদা জিয়ার জামিন পেতে আইনি কোন বাধা না থাকলেও তাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এখনও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা চলছে। ২৯ ডিসেম্বরের রাতের ভোটের সরকার সকল সরকারী শক্তি দিয়ে বেগম জিয়াকে কারাগারে আটকিয়ে রাখছে। তাঁর জামিন পেতে আইনী কোন বাধা নেই। তাঁকে আটকিয়ে রাখতে আইনের ফাঁক দিয়ে বেআইনী রাস্তায় নানা চক্রান্ত চলছে। দেশজুড়ে ব্যর্থতা ঢাকতেই বিশেষভাবে ২৯ ডিসেম্বর নিশীথে মহাভোট ডাকাতির মহা কেলেঙ্কারী আড়াল করতেই বেগম জিয়াকে এখনও মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি চাই। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 
বিএনপি নেতাদের আটকের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার  পাশাপাশি নির্বাচনকে একতরফা করার জন্য অন্যায়ভাবে আটক বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, খায়রুল  কবির খোকন, এ্যাড: শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মীর সরফত আলী সপু, আনিসুজ্জামান খান বাবু, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মাহবুবুল হক নান্নু, ডাঃ শাহাদৎ হোসেন, এ্যাডঃ রফিক শিকদার, মামুনুর রশিদ মামুন, নিপুন রায় চৌধুরী, শেখ মোহাম্মাদ শামীম, হযরত আলী, মোঃ আবুল হাশেম বকর, মিয়া নুর উদ্দিন অপু, মনোয়ার হোসেন। তিনি দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দবি করেন।

বর্তমান সরকারকে রাতের আধারের ভোটের সরকার মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণ ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোটারবিহীন ব্যালট বাক্স পূর্ণ হয়েছে। সুতরাং নির্বাচনোত্তর সরকার নিজেকে যে নামেই অভিহিত করুক, সেটি অবৈধ সরকার। এই সরকার রাতের আঁধারের ভোটের সরকার। অথচ আওয়ামী লীগ বলছে-তাদের প্রার্থীরা নাকি লাখ লাখ ভোটে বিজয়ী হয়েছে। প্রকৃত ভোটার’রা এই কথায় নিজেদের অধিকার হারিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে।তিনি বলেন, রাষ্ট্র এমন এক ভয়াবহ একদলীয় রুপ ধারণ করেছে যেখানে অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার কোন জায়গা নেই। এত বড় মহাভোট ডাকাতি ও মহাভোট জালিয়াতির নির্বাচন গোটা জাতির সামনে সংঘটিত হলো, অথচ নির্বাচন কমিশন জানালো যে, ‘নির্বাচনে কোন অনিয়ম হয়নি’। 
প্রধান নির্বাচন কমিশানারসহ অন্যান্য কমিশনারদের মনে কোন অনুশোচণা নেই। তাহলে অধিকারহারা ভোটার’রা প্রতিকার কার কাছ থেকে চাইবে। সরকার ও তাদের একনিষ্ঠ অনুগ্রহভাজন নির্বাচন কমিশন ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে যে ভূমিকা রেখেছে তাতে গোটা জাতি হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রভূত সাংবিধানিক ক্ষমতার অধিকারী হলেও সেই ক্ষমতা প্রয়োগ না করে শুধু মনিবের কথা রাখতে গিয়ে গোটা নির্বাচনকেই ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে বিক্রি করে দিয়েছে। ন্যুনতম বিবেক-বুদ্ধি এবং মর্যাদার কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র কমিশনের উচ্চ পদের চেয়ার ধরে রাখতে এক মহা প্রশ্নবিদ্ধ ও নজীরবিহীন জালিয়াতি ও সহিংস ভোট ডাকাতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে তারা দ্বিধা করলো না। 

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আসলে ৩০ ডিসেম্বরের মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের ছদ্দনাম নুরুল হুদা কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের জন্যই গণতন্ত্রের সংকট আরও গুরুতর রুপ ধারণ করলো। কারণ নির্বাচন হচ্ছে-গণতন্ত্রের প্রধান অনুশীলণ। সরকার সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকেই চূড়ান্তভাবে ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে, আর এই ভোট ডাকাতির নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের তকমা দিয়েছে এই নির্বাচন কমিশন। ভোটার’রা স্বাধীন ইচ্ছায় তাদের পছন্দমতো ব্যক্তিকে ভোট দেয়ার দিন শেষ হয়ে গেল। এই দেশে একটি উন্নতর গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করে দিলো এই নির্বাচন কমিশন। 
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে মহাভোট ডাকাতিতে নিয়োজিত থাকায় তারা সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের বদলে এখন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়াতে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতিশীল হয়েছে। সমাজ জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। কারণ সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিধানে প্রশাসন ও পুলিশ অপরাধীদের যদি দমন করতে না পারে তাহলে সমাজে দূর্বৃত্তদের উৎপাত বিভৎস রুপ ধারণ করবে। অপরাধীরা যদি রাজনৈতিক কারণে রেহাই পেতে থাকে তাহলে শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা ভয়াবহ সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে। 


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ