বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শহর ও গ্রামের তারতম্য কমিয়ে আনতে ‘গ্রাম হবে শহর’ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। গ্রামে নগরের সুবিধা পেলে শহরমুখী হবে না মানুষ। ফলে শহরে মানুষের চাপ কমে আসবে। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের যৌথ উদ্যাগে আয়োজিত ‘গ্রামীণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও গ্রাম উন্নয়ন নীতিমালা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি সজল চৌধুরী, সঞ্চালনা করেন পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল। বক্তব্য রাখেন-বুয়েটের স্থাপত্য অনুষদের ডীন অধ্যাপক ফরিদা নিলুফার, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন, ইষ্ট-ওয়েস্ট বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রশিদ, প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক দেলোয়ার জাহান ও পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহানপ্রমুখ।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, এক সময় নগর রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ। তাই ভূমির সঠিক ব্যবহারের জন্য ভূমি নীতিমালা তৈরির সময় এসেছে। গ্রাম হবে শহর, এ ইশতেহার বাস্তবায়নে দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে এখনই কাজ শুরু করা দরকার। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে নীতিমালা তৈরি করতে হবে, তাহলে মানুষ আইন সম্পর্কে জানবে। ফলে আইন মানার প্রবণতা তৈরি হবে।
বক্তারা বলেন, গ্রাম উন্নয়নে গ্রামের সাধারণ মানুষদের জীবনযাত্রার সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। সেই সাথে অঞ্চলভেদে বৈচিত্র্যপূর্ণ যে গ্রামীণ ইকোসিস্টেম বজায় রয়েছে তা যাতে কোন ভাবেই বিঘিœত না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণবৈচিত্র্যের বসবাসের জন্য শহর অপেক্ষা গ্রাম অধিক উপযোগী এবং শান্তিময়। সুতরাং গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার কোন পরিকল্পনা গ্রহণ অপেক্ষা আমাদেরকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, গ্রামে যেসব সুযোগ সুবিধার অভাব রয়েছে তা দূর করা। শহরকেন্দ্রিক সব সুযোগ সুবিধা অল্পপরিসরে হলেও গ্রামগুলোতে থাকা প্রয়োজন। এক কথায় শহর ও গ্রামের মধ্যে সুযোগ সুুবিধার বৈষম্য কমানো দরকার।
বক্তারা আরও বলেন, গ্রামীণ উন্নয়নে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষি খাতের উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। কৃষিকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। গ্রামে কৃষিজাত পণ্য-দ্রব্য সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। প্রান্তিক কৃষকের সমস্যাগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে সেগুলো সমাধানের টেকসই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার জন্য এবং কৃষিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিটি গ্রামে কমপক্ষে একজন কৃষককে “আদর্শ চাষী সম্মানী” প্রদান করা যেতে পারে। একটি গ্রামে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর নাগরিক প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে সুযোগ সুবিধা এবং অবকাঠামো থাকা অতি প্রয়োজন। যেমন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, পাঠাগার, খেলার মাঠ, ব্যায়ামাগার, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইত্যাদি। বক্তারা বলেন, গ্রামের হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। সার্বক্ষণিক পর্যাপ্ত ডাক্তার এবং ঔষুধের সরবরাহ থাকতে হবে। গ্রামে ‘ক্লিন এনার্জি’ যেমন, বাতাস, সৌরশক্তি, বায়োগ্যাস, মাইকো-হাইড্রো এর ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে স্থানীয়ভাবে সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। গ্রামগুলোতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরী করতে হবে, বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হবে। সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে বাংলাদেশের গ্রামগুলোর জন্য প্রয়োজন “টেকসই গ্রাম উন্নয়ন পরিকল্পনা” নীতিমালা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।