বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশে তেল বীজের আবাদ ও উৎপাদন কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন না করায় এখনো ভোজ্য তেলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে প্রতি বছর শুধুমাত্র ভোজ্য তেল আমদানিতেই ব্যয় হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। এমনকি দেশে যে প্রতিবছর দেড় লাখ টনের মত সয়াবিন তেল বীজ উৎপাদিত হচ্ছে, তার প্রায় পুরোটাই চলে যাচ্ছে পোল্ট্রি ফিড তৈরীর কারখানায়। এছাড়া মালয়েশিয়া থেকে আমদানিকৃত পাম তেলের গাছের উৎপাদিত বীজ কোন কাজে আসছেনা। কারণ বীজ বাজারজাতকরণসহ তেল উৎপাদনের প্রযুক্তিগত সহায়তার অভাবে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ৮ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা, সয়াবিন, চীনা বাদাম, তিল, তিসি ও গর্জন তিল আবাদের মাধ্যমে ১০ লাখ ৫৬ হাজার টন ভোজ্য তেল বীজ উৎপাদনের কর্মসূচি অনুমোদন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এসব তেল বীজ আবাদ প্রায় শেষ। উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বাসন্তি রঙের সরিষার ফুলে ভরে গেছে। অনেক এলাকাতেই সরিষার সহায়ক হিসেবে মৌমাছি পালন করে মধুও উৎপাদিত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫ লাখ ৭০হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের মাধ্যমে ৭ লাখ ৩৫ হাজার টন সরিষা তেল বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছেন কৃষকরা। এছাড়াও চলতি মৌসুমে ৮১ হাজার হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন সয়াবিন তেলবীজ উৎপাদনের কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে কোন ভোজ্য তেলকল প্রতিষ্ঠান দেশে উৎপাদিত সয়াবিন তেল বীজ কৃষক বা পাইকারী পর্যায়ে না কেনায় উৎপাদিত প্রায় দেড় লাখ টন সয়াবিন তেল বীজের পুরোটাই চলে যাচ্ছে পোল্ট্রি ফিডের কারখানায়। বিভিন্ন পোল্ট্রি ফিড কারখানার নিয়োজিত ফরিয়ারারা বরিশালসহ উপক‚লীয় এলাকার মাঠ পর্যায়ে সয়াবিন তেল বীজ কিনে নিচ্ছে অনেকটা পানির দরে। চলতি মৌসুমে দেশে যে ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হচ্ছে তার মধ্যে ১৫ হাজার হেক্টরই হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে ২৫ হাজার ৫শ টনের ওপরে।
অপরদিকে দেশে দুটি মৌসুমে চীনা বাদামের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি শীত মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে দেড় লাখ টনেরও বেশী চীনা বাদাম উৎপাদনের কর্মসূচি রয়েছে। এরমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে চীনা বাদামের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টন।
অপ্রচলিত তেলবীজ হিসেবে এবারো দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৬ হাজার টন সূর্যমূখী উৎপাদনের কর্মসূচি রয়েছে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই’র। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফলন সংকটসহ বিপনন ব্যবস্থার অভাবে স¤প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বিপণন সুবিধা না থাকায় কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এটি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।
চলতি মৌসুমে সারাদেশে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে দু হাজার হেক্টর হ্রাস করে মাত্র ৩ হাজার হেক্টর জমিতে সূর্যমূখীর আবাদ লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। তবে গতবছর বাস্তবে মাত্র ২ হাজার ৪৯ হেক্টর জমিতে এ তেল বীজের আবাদ হয়। ফলে গোটা দেশে ১০ হাজার টন সূর্যমুখী তেল বীজ উৎপদন লক্ষ্যে পৌছানোও সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাবার মত প্রচুর জমি রয়েছে দেশে। শুধুমাত্র উন্নত জাতের তেল বীজের আবাদ স¤প্রসারেনের লক্ষ্যে কৃষকদের কাছে বীজসহ এর সঠিক বালাই ও বীজ ব্যবস্থাপনা এবং আবাদ প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।