পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়, বাংলাদেশের প্রকৃত জনমত মসজিদ থেকে আলেমদের মাধ্যমে গঠন হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পত্র পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের জনমত তৈরি হয় না। প্রকৃত জনমত হয় মসজিদে। আলেম সমাজ এই জনমত গঠনের বিরাট কারিগর। বাংলাদেশের ৮ কোটি লোক সপ্তাহে একদিন অন্তত একঘণ্টা মসজিদে থাকেন। ৮ কোটি লোক ৫ মিনিটের জন্য একবার সিজদাহরত হয়। বছরে দুই লাখের উর্ধ্বে বড় বড় মাহফিল হয়। এসব একেকটি মাহফিলে হাজার থেকে লাখ লাখ লোক হয়। সেখানেই তারা জনমত তৈরি করেন।
শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মহাখালিস্থ গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে সংবর্ধনা ও বিশেষ দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন সেটি তৈরিতে আলেম সমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মন্তব্য করে সংগঠনটির সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, জাতীয় ঐক্য করার জন্য রেডিমেট ফোর্স দরকার। জমিয়াতের নেতৃত্বে রেডিমেট ফোর্স অর্থমন্ত্রী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর পেছনে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী যেটা চাচ্ছেন- মাদকমুক্ত, অপরাধমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করতে আপনারা (অর্থমন্ত্রী-ধর্ম প্রতিমন্ত্রী) এই ফোর্সকে সেই ক্ষেত্রে পাশে পাবেন। কারণ সারাদেশের আলেম সমাজ সম্মিলিতভাবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাথে আছে। দরবারের পীর সাহেব, মসজিদের ইমাম, খতিব, শিক্ষক, কর্মচারী নানাবিধভাবে জমিয়াতের সাথে আছেন। আর জমিয়াতুল মোদার্রেছীন প্রধানমন্ত্রীর সাথে আছে। প্রধানমন্ত্রী যে সমাজ দেখতে চান আমরা সকলে মিলে তাকে সহযোগিতা করবো।
দুদক, পুলিশ-র্যাব দিয়ে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হবে না জানিয়ে জমিয়াত সভাপতি বলেন, যত উন্নয়ন করেন দুর্নীতি দূর করতে না পারলে কোন কাজে আসবে না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিয়ে দুর্নীতি দূর হবে না। দুদক দুর্নীতি বাড়াচ্ছে, আরও বাড়াবে। পুলিশ-র্যাব দিয়ে গ্রেফতার করেও দুর্নীতি দূর করতে পারবেন না। এটা করতে পারে দেশের আলেম সমাজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে মানুষের গরু-ছাগল, শস্য ক্ষেতসহ অন্যান্য সম্পদ এমনি খোলামেলা পরে থাকে। সারাদেশের মাহফিলগুলোতে যে বয়ান হয়, সেখানে বলা হয় চুরি করা মহাপাপ, এই ছোট্ট কথাতেই মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। আর শহরে অনেক নিরাপত্তা প্রহরী, ক্যামেরা লাগিয়েও চুরি-ডাকাতি ঠেকানো যায় না। কারণ আমাদের (শহরে) আশেপাশে বার-ক্লাব ভর্তি। এগুলোতে নীতি, নৈতিকতা, ধর্মীয় শিক্ষা, ইসলামী মূল্যবোধের প্রভাব কম। তাই ইসলামী মূল্যবোধ, ইসলামী আদর্শের প্রভাব সমাজের সর্বস্তরে কাজে লাগাতে হবে।
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে মাদরাসা শিক্ষকদের এই নেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত বলেন, আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কারণ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে তার হাতে একটি পুস্তিকা তুলে দিয়েছিলাম। তিনি এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন। এটা প্রতিষ্ঠা করার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি যুক্তিগুলো তুলে ধরেন। কোন কিছু না বুঝে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় এটা (আরবি বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। ভবিষ্যত সমাজ গঠন করার জন্য, একটা সোসাইটি করার জন্য এটা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার একজন অর্থমন্ত্রী হলেন, যিনি মনে করেন উন্নয়ন করতে হবে মানুষের জন্য। কারণ স্ট্রাকচার চিরস্থায়ী না। স্ট্রাকচার থাকবে না। স্ট্রাকচার আজকে আছে কালকে থাকবে না। কিন্তু স্ট্রাকচারের পেছনে মানুষগুলো (আদর্শিকভাবে, নীতিবান) যদি তৈরি করে দেয়া যায়। তাহলে দেশ ও জাতি দীর্ঘদিন উপকৃত হবে। আর সেই চিন্তাই সার্বক্ষণিক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ, ধর্ম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি বজলুল হক হারুন এমপি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।