পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আট জেলার ১১ হাসপাতলে মোট রোস্টার ডিউটি বণ্টনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা ২৩০ জন। কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত পাওয়া যায় ৯২ জন চিকিৎসককে। যা মোট চিকিৎসকের ৪০ শতাংশ। উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর অবস্থা আরো নাজুক। এতে অনুপস্থিতির হার প্রায় ৬২ শতাংশ। এসব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীর্ষ কর্মকর্তারাও মাসের বেশির ভাগ সময়ই অনুপস্থিত থাকেন। অনেকেই সপ্তাহে দুই-এক দিন এসে হাজিরা খাতায় সই করে পুরো মাস অনুপস্থিত থাকেন। দুদকের অভিযানে এসব তথ্য উঠে এসছে।
সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই। দুর্নীতি দমন কশিনের হট লাইনে অভিযোগ করেন এমন কয়েকজন ভোক্তভোগী। এসব অভিযোগের আমলে নিয়ে গতকাল সোমবার দুদকের একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। দুদক বলছে, স্বাস্থ্য সেক্টরে এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা না থাকলে চিকিৎসা সেবা পরিত্যাগ করা উচিৎ। যাঁদের হাসপাতালে পাওয়া যায়নি, তাঁদের বিষয়ে চিঠি দেবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাত তাদের নজরদারিতে থাকবে। দায়িত্বে অবহেলায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্রাচার্য্য ইনকিলাবকে বলেন, চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কারণে রোগীরা হয়রানির শিকার এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক অভিযান চালিয়েছে। এতে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
দুদক সূত্রে জানা যায়, দেশের আট জেলার ১১ টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের ১১ টি এনফোর্সমেন্ট টিম। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত পরিচালিত এসব অভিযানে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নানান অনিয়ম চিহ্নিত হয়।
অভিযান চালানো হাসপাতালগুলো হলো: ঢাকার ফুলবাড়িয়ার কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতাল, নাজিরা বাজারের মা ও শিশু সদন। এছাড়াও ঢাকা বাইরে রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, পাবনা মোট ১১ টি সরকারি হাসপাতাল একযোগে এই অভিযান পরিচালনা করে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।এ ছাড়া ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে পরিদর্শনে দেখা যায়, আট জেলার ১১ হাসপাতলে মোট রোস্টার ডিউটি বণ্টনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা ২৩০ জন থাকলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত পাওয়া যায় ৯২ জন চিকিৎসককে, যা মোট চিকিৎসকের ৪০ শতাংশ।
এই হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ঢাকার বাইরের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর অবস্থা অধিকতর নাজুক। ঢাকার বাইরের আট জেলার মোট হাসপাতালে রোস্টার ডিউটি বণ্টনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৩১ জন থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৮১ জন। এক্ষেত্রে অনুপস্থিতির হার মোট চিকিৎসকের প্রায় ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ।
অভিযান পরিচালনার সময় দুদকের কর্মকর্তারা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হলেও তাঁরা অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে সময় দিচ্ছেন। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে অভিযানকালে জরুরি বিভাগের এক কর্মচারী (স্ট্রেচার বিয়ারার) দায়িত্বরত অবস্থায় রোগীর স্বজনদের নিকট হতে অনৈতিক অর্ধ আদায়কালে দুদক টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন। দুদক টিমের সুপারিশক্রমে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। ভুক্তভোগী রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পর্যাপ্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ দেয়া হলেও তারা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে বাইরে প্রাইভেট প্রাকটিসে সময় প্রদান করছেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শীর্ষ কর্মকর্তারা মাসের বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন না। এ সুযোগে কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসাররাও কর্মস্থলে ঠিকমতো হাজির থাকেন না। অনেকে সপ্তাহে দু›একদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে পুরো মাস অনুপস্থিত থাকেন এবং পুরো মাসের বেতন উত্তোলন করেন। এ প্রসঙ্গে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়ক দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য সেক্টরে এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা না থাকলে চিকিৎসা সেবা পরিত্যাগ করা উচিৎ। তবে দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে দুদক কঠোর অবস্থান নেবে। সারাদেশের স্বাস্থ্যসেক্টর দুদকের নজরদারি থাকবে। এসব অভিযোগের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে দুদকের মহাপরিচালক বলেন, যাঁদের হাসপাতালে পাওয়া যায়নি, তাঁদের চিঠি দেবে দুদক। আপাতত কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও পরে একই অবস্থা পাওয়া গেলে গ্রেফতার করা হবে। এ ক্ষেত্রে চাকরিও চলে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।