পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের গার্মেন্ট শিল্পে বিপুল সংখ্যক নারী শ্রমিক কাজ করে। এই সেক্টরে তৈরী পোশাক বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। এই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আত্মতুষ্টির শেষ নেই। গার্মেন্টস দেশের ‘নারী শ্রমিকদের’ কর্মসংস্থানের সুযোগও করে দিয়েছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য এটা প্লাসপয়েন্ট। সেই গার্মেন্টস খাতে চলমান অসন্তোষ নিরসনে ছয়টি গ্রেডের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং পোশাক শিল্পের মালিক প্রতিনিধিদের বৈঠকের পর গত রোববার শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশোধিত বৃদ্ধি মজুরি ঘোষণা করা হয়। এতে গ্রেডভেদে শ্রমিকদের মূল মজুরি বেড়েছে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫২৪ টাকা।
গার্মেন্টসে কর্মরত শ্রমিকদের সাতটি গ্রেডে ভাগ করা হয়েছে। সমন্বিত মজুরি বিশ্লেষণে দেখা যায়, গ্রেড ৭-এ মূল ও মোট মজুরি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালে এ গ্রেডের মূল মজুরি ছিল তিন হাজার টাকা। ২০১৮ সালে পর্যালোচনার পর মূল মজুরি নির্ধারণ হয় চার হাজার ১০০ টাকা। নতুন সংশোধনীতেও মূল মজুরি চার হাজার ১০০ টাকাই পুননির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে মোট মজুরি আট হাজার টাকা অপরিবর্তিত আছে।
গ্রেড ৬-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল তিন হাজার ২৭০ টাকা। ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপনে মূল ও মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে- চার হাজার ৩৭০ ও আট হাজার ৪০৫ টাকা। নতুন সংশোধনীতে মূল ও মোট মজুরি চার হাজার ৩৮০ ও আট হাজার ৪২০ টাকা পুননির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ পূর্বঘোষিত কাঠামোর তুলনায় মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে ১০ ও ১৫ টাকা।
গ্রেড ৫-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল তিন হাজার ৫৩০ টাকা। ২০১৮ সালে মূল ও মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে চার হাজার ৬৭০ ও আট হাজার ৮৫৫ টাকা। এবার তা সংশোধনের মাধ্যমে মূল ও মোট মজুরি যথাক্রমে চার হাজার ৬৮৩ ও আট হাজার ৮৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ হিসাবে ২০১৮ সালের ঘোষিত কাঠামোর তুলনায় এই গ্রেডের শ্রমিকদের মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে- ১৩ ও ২০ টাকা।
গ্রেড ৪-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল তিন হাজার ৮০০ টাকা। ২০১৮ সালে পর্যালোচনার পর মূল ও মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে চার হাজার ৯৩০ ও ৯ হাজার ২৪৫ টাকা। সংশোধনের পর মূল ও মোট মজুরি হয়েছে যথাক্রমে- চার হাজার ৯৯৮ ও ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা। অর্থাৎ পূর্বঘোষিত কাঠামোর তুলনায় সংশোধনিতে মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে ৬৮ ও ১০২ টাকা।
গ্রেড ৩-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল চার হাজার ৭৫ টাকা। ২০১৮ সালে মূল ও মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে পাঁচ হাজার ১৬০ ও ৯ হাজার ৫৯০ টাকা। নতুন ঘোষিত সংশোধনীতে মূল ও মোট মজুরি যথাক্রমে পাঁচ হাজার ৩৩০ ও ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা পুননির্ধারণ করা হয়েছে। এতে পূর্বঘোষিত মজুরি কাঠামোর তুলনায় মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে ১৭০ ও ২৫৫ টাকা।
গ্রেড ২-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল সাত হাজার টাকা। ২০১৮ সালে মূল মজুরি আট হাজার ৫২০ ও মোট মজুরি ১৪ হাজার ৬৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। নতুন সংশোধনীতে মূল ও মোট মজুরি যথাক্রমে ৯ হাজার ৪৪ ও ১৫ হাজার ৪১৬ টাকা পুননির্ধারণ করা হয়েছে। এ হিসাবে সংশোধনীতে মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে ৫২৪ ও ৭৮৬ টাকা।
গ্রেড ১-এ ২০১৩ সালে মূল মজুরি ছিল আট হাজার ৫০০ টাকা। ২০১৮ সালে মূল ও মোট মজুরি নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ১০ হাজার ৪৪০ ও ১৭ হাজার ৫১০ টাকা। নতুন সংশোধনীতে মূল ও মোট মজুরি হয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৯৩৮ ও ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা। এ হিসাবে মূল ও মোট মজুরি বেড়েছে যথাক্রমে- ৪৯৮ ও ৭৪৭ টাকা।
২০১৮ সালের নভেম্বরে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হয়। এতে অসঙ্গতির অভিযোগ এনে ডিসেম্বরেই বিক্ষোভ ও শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয় বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে শ্রমিক অসন্তোষ কিছুটা স্তিমিত থাকলেও ৬ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে বিক্ষোভ-কর্মবিরতির ঘটনা বাড়তে থাকে। গত কয়েকদিন থেকে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে।
সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে ঘোষিত মজুরি কাঠামোয় মোট সাতটি গ্রেডের মধ্যে চারটিতে (৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর) কর্মীদের মূল মজুরি বেড়েছে। তবে ৩ নং গ্রেডে মূল মজুরি না বেড়ে ৪০ টাকা কমেছে। একইভাবে ২ নং গ্রেডে ৪১২ ও ১ নং গ্রেডে ৪০৫ টাকা কমেছে। তবে নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ মূলত ৩, ৪ ও ৫ নং গ্রেডের শ্রমিকদের।
গ্রার্মেন্টস শ্রমিকদের অসন্তোষের মাত্রা বাড়তে থাকলে ৮ জানুয়ারি গ্রার্মেন্ট সেক্টরের ত্রিপক্ষীয় ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট-বিষয়ক ‘কোর কমিটির’ বিশেষ জরুরি সভায় নতুন মজুরি কাঠামো পর্যালোচনায় ত্রিপক্ষীয় একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি এ কমিটির প্রথম সভায় ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডের মজুরি বৈষম্য নিয়ে শ্রমিক প্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি আমলে নেয়া হয়। এর মধ্যে গত শনিবার অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠকে কমিটি ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডে মূল মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্যে পৌঁছে। ওইদিন রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ পোশাক শিল্পের মালিক প্রতিনিধিরা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডের সঙ্গে ১ ও ২ নং গ্রেডের মজুরি সমন্বয়ের নির্দেশ দেন।
গার্মেন্টস মালিকদের পক্ষে এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে বেতন-ভাতা বাড়ানো নিয়ে শ্রমিকরা আন্দোলন করতে পারেন। সেই আন্দোলন কখনো ধ্বংসাত্মক হতে পারে না। এবারের আন্দোলনে যারা গার্মেন্টস সেক্টরে ভাঙচুর চালিয়েছেন, তিনি তাদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান। শ্রমিক প্রতিনিধিদের পক্ষে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমরা নভেম্বরে ঘোষণার সময়ও মেনে নিয়েছিলাম। এখন আবারো তার নির্দেশনা মেনে নিচ্ছি। বেআইনি কর্মকান্ডে জড়িত শ্রমিকদের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি নিরপরাধ শ্রমিকদের যেন কোনো হয়রানি ও ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।