Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির শর্ত শিথিল

চালক সংকট কাটাতে বিআরটিএ’র উদ্যোগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

মধ্যম ও ভারী মোটরযানের লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত ৬ মাসের জন্য শিথিল করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে, যা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এখন থেকে তিন বছরের পরিবর্তে মাত্র এক বছরের অভিজ্ঞতা দিয়েই মধ্যম ও ভারী মোটরযানের লাইসেন্স পাবেন চালকরা। বিআরটিএ-এর কর্মকর্তারা চালক সংকট কাটাতে সাময়িকভাবে এমন উদ্যোগ নেয়ার কথা বললেও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমে অদক্ষ চালকদের বৈধতা দেয়া হলো।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরযান আছে প্রায় ৩৮ লাখ। এর বিপরীতে বিআরটিএ-এর লাইসেন্সধারী চালকের সংখ্যা ১৯ লাখ। অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ঢাকা মহানগরীতে ২০ লাখ নিবন্ধিত মোটরযানের বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালক রয়েছেন ১৪ লাখ। একইভাবে লক্ষাধিক ভারী মোটরযানের বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালকের সংখ্যা মাত্র ২১ হাজার এবং সাড়ে ৫ লাখ হালকা মোটরযানের বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালক আছেন চার লাখের সামান্য বেশি। চালক সংকট থাকলেও মধ্যম ও ভারী মোটরযান রাস্তায় ঠিকই চলছে। এগুলোর বড় একটা অংশ চালাচ্ছেন অদক্ষ চালকরা, যাদের সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালানোর লাইসেন্সই নেই। এ অবস্থায় বৈধ চালক সংকট মেটাতে গত ২৬ ডিসেম্বর বিআরটিএর সংস্থাপন অধিশাখা থেকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং পরীক্ষার পর চালককে প্রথমে হালকা মোটরযানের (ওজন ২৫০০ কেজির নিচে) পেশাদার লাইসেন্স প্রদান করা হয়। তিন বছর হালকা মোটরযান চালানোর পর একজন চালক মধ্যম শ্রেণীর মোটরযান (২৫০০-৬৫০০ কেজি) চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠেন। একইভাবে তিন বছর হালক মোটরযান চালানোর পর চালককে ভারী মোটরযান (৬৫০০ কেজির উপরে) চালানোর জন্য পেশাদার লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এ নিয়মই শিথিল করে হালকা ও মধ্যম শ্রেণীর মোটরযান চালানোর অভিজ্ঞতা তিন থেকে কমিয়ে এক বছর নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ- যা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এ প্রসঙ্গে একজন পরিচালক বলেন, চালক সংকট মোকাবেলায় হালকা ও মধ্যম শ্রেণীর লাইসেন্সধারী চালকদের যথাক্রমে মধ্যম ও ভারী মোটরযান চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সে মধ্যম বা ভারী মোটরযান-সংশ্লিষ্ট শর্ত ছয় মাসের জন্য শিথিল করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ৩০ জুন থেকে লাইসেন্স প্রদানের নিয়ম আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। এ সময়ের মধ্যে যেসব নতুন চালক মধ্যম ও ভারী মোটরযান চালানো শুরু করেছেন, তাদের মধ্যম ও ভারী মোটরযানের লাইসেন্স করে নিতে হবে।
অবশ্য বিআরটিএর এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের ভারী মোটরযান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নেই, তাদের সেই মোটরযানের লাইসেন্স দেয়ায় সড়ক পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা আরো দীর্ঘস্থায়ী হবে। পড়বে সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রভাব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত যখন লাইসেন্সবিহীন চালকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে, তখন দেখা যায়, বেশির ভাগ ভারী মোটরযান চালকের প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নেই। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে চালকরাও পাল্টা হুমকি দেন ঈদের সময় যানবাহন বন্ধ রাখার। এখন লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সেই চালকদের সঙ্গেই সমঝোতা করল বিআরটিএ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিআরটিএ-এর এটি চরম ব্যর্থতা।



 

Show all comments
  • Khalid Saif ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    যাদের বিদেশী ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে, তারা কি ভাবে দেশের লাইসেন্স পেতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম রনি ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    ইশ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলাম না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Sabir Bin Abdullah ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    Kintu phone use korte gele registration kora lagbe
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    Good Initiative,
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Mobarok Hissain ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    হালকা মাধ্যম বা ভারি লাইসেন্স এর সাময়ক সময় ও শিথিলতা দিয়ে কি হবে। যে দেশে একটি লাইসেন্স নবায়ন করতে ১থেকে দের বছর সময় লাগে সেখানে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে কিভাবে? এমন হাস্যকর সিদ্ধান্তে কি লাভ।একজন পেশাজিবি ড্রাইভার যার এই লাইসেন্স ই একমাত্র জিবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন তার যদি লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরানোর এক বছর পরও বি আর টি এ লাইসেন্স এর নবায়ন পরিক্ষার তারিখই দিতে পারে না সেখানে কি ভাবে?বি আর টি এ অফিস হলো দালালদের অফিস এখানে কোন ড্রইভার সরাসরি নিজে কোন ভাবেই লাইসেন্স করা বা নবায়ন করতে পারে না করতে গেলে ঘুরতে ঘুরতে অবস্হা খারাপ শেষে সেই দালালের সরনাপর্ণ না হয়ে উপায় থাকে না।আপনাদের গেজেটে উল্লেখ করলেন ১ বছরের অভিঙ্গতা দিয়ে মাধ্যম বা ভারি করা যাবে ৫বছরের অভিঙ্গতা থাকার পর ও হালকা হতে মাধ্যাম রতে গিয়ে নতুন করে লার্নার করে পরিক্ষার তারিখ দেয় ৮ মাস পরে। পরীক্ষা দিয়ে পাশ করার পর নবায়নের জন্য পুনরায় আবেদন করে আবার ৪ মাস পরে নবায়ন পরিক্ষার তারিখ পড়লে কি করে লাইসেন্স করা সম্ভব সঠিক ভাবে।ঘুষ আর দালাল ছাড়া বি আর টি এ অফিস কিছুই বুঝে না। আমি উক্ত মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা ও মন্ত্রী মহোদ্বয়ের দৃস্টি আর্কষন করে অনুরোধ করে বলছি লাইসেন্স করতে বা নবায়ন করতে সাধারন পেষাদার মানুষদের এ নরকিয় নাজেহাল হতে অব্যাহতি দানে আপনারা দয়া করে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • MD. FORHAD HOSSAIN ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:৪৪ পিএম says : 0
    আসসালামু আলাইকুম। আমার হালকা পেশাদার লাইসেন্স এর বয়স প্রায় ৪বছর ৮/৯মাস, আমি আমার লাইসেন্স হালকা থেকে ভারি করার জন্য লানার করছি, পরিক্ষা দিযেছি, ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছি সবকিছু করেছি, কিন্তু আমি ফিঙ্গা দিতে গেলে আমাকে বলে আপনি htv পাবেন না। আমি যদি না পাই তাহলে আমার লানার করার সময় বল্লেইতো হতো,, মিরপুর বিআরটিএ, স্যার আমি আপনার পরামর্শ কামনা করছি।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআরটিএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ