Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নাব্য সঙ্কটে ঢাকা-পটুয়াখালী নৌ-রুট

অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের অভিযোগ

পটুয়াখালী থেকে মো. জাকির হোসেন | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঢাকা-পটুয়াখালী নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ৫টি পয়েন্টে প্রায় প্রতিদিনই ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আটকা পরে থাকায় লঞ্চে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম ভোগান্তীর শিকার হচ্ছেন।

পটুয়াখালী নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী নদী বন্দর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১৮৫ নটিক্যাল মাইল এবং রাঙ্গাবালী ও গলাচিপা থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টি যাত্রীবাহী বিশাল লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে ঢাকার পথে ৪টি এবং গলাচিপাও রাঙ্গাবালীর লঞ্চগুলিকে ৫টি পয়েন্টে এ ভোগান্তীর শিকার হতে হচ্ছে। প্রতিদিন বিকেল ৪-৩০ মিনিট থেকে ৫-১৫ মিনিটের মধেই পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়, অনেক সময় বিকেলে লঞ্চ বন্দর ত্যাগ করার সময় লঞ্চের পিছনের অংশ চড়ায় আটকে পড়ে ঘাট ত্যাগ করতে বিলম্বের শিকার হয়।

এ ছাড়াও পটুয়াখালী নদীবন্দর সংলগ্ন লোহালিয়া হতে লাউকাঠী নদীর মোহনা হয়ে লাউকাঠী খেয়াঘাট পর্যন্ত চ্যানেল, কবাই হতে কারখানা পর্যন্ত, ঝিলনার মোড়ে টেকের চড় পর্যন্ত চ্যানেল, লাউকাঠীর নদীর মোহনা হতে জৈনকাঠীর মোড় পর্যন্ত চ্যানেল, ভুড়িয়া লঞ্চ ঘাট হতে কলাগাছিয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত এ ৫টি পয়েন্টে ড্রেজিংএর চাহিদা সংবলিত পত্র ১১-১০ ২০১৮ ইং তারিখে চিঠি প্রধান প্রকৌশলী ড্রেজিং বরাবর প্রেরন করা হলে ১১ -১১-২০১৮ তারিখ থেকে সরকারিভাবে একটি ড্রেজার কারখানা পয়েন্টে কাজ শুরু করলেও স্থানীয় লোকজনের মামলা জটিলতার কারনে কাজে ব্যাঘাত হয়, ওই পয়েন্টেই প্রতিদিন লঞ্চ আটকা পড়ে থাকছে ডুবো চড় সহ নাব্যতা সঙ্কটের কারনে।এ ছাড়াও পটুয়াখালী নদীবন্দর সংলগ্ন লোহালিয়ার মোড়ে প্রায় ২ মাস পর্যন্ত ঠিকাদারের মাধ্যমে নিযুক্ত ড্রেজারের মাধ্যমে বালু কেটে নদীতেই ফেলা হচ্ছে, সেই বালুই আবার জোয়ারে এসে চ্যানেল বন্ধ করে দিচ্ছে বলে জানান পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি রাসেলের মাষ্টার মো: ফোরকান মাহমুদ, তিনি বলেন পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে ২৫০-৩০০ গজ দূরে লোহালিয়ার মোড়ে গত সোমবার বিকেলেও তার লঞ্চ ডুবোচরে ধাক্কা খায়, বালু কেটে নদীর মধ্যে ফেলার কারনেই এ সঙ্কটের সমাধান হচ্ছেনা ।একই অবস্থা কারখানা নদীতেও।

পটুয়াখালী জেলা আ.লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাাদক এবং পটুয়াখালী চেম্বার অফ কমার্সের সাবেক সহ-সভাপতি গাজী হাফিজুর রহমান শবীর জানান, গত ৪ জানুয়ারি লঞ্চযোগে ঢাকা যাওয়ার পথে কারখানা নদীতে এমভি সুন্দরবন -৯ লঞ্চে কারখানার ডুেবাচরে সাড়ে তিনঘন্টা আটকে থাকেন তিনি সহ দুটি লঞ্চের দু সহস্রাধিক যাত্রী। তিনি বলেন আগামী দিনের সম্ভাবনাময় পায়রা বন্দরসহ পটুয়াখালী-ঢাকা রুট নৌপথকে চলাচলের উপযোগী করার জন্য এখনই দীর্ঘ্য মেয়াদী মাষ্টার প্ল্যান করা উচিৎ পরিকল্পিতভাবে। তিনি অভিযোগ করেন, ছোট ড্রেজার দিয়ে নদীর নাব্যতা সঙ্কট নিরসনের জন্য বালু কাটা হচ্ছে, এটা হচ্ছে কাটার জন্য কাটা, বালু কেটে নদীতেই বালু ফেলা হচ্ছে হচ্ছে এটাকে তিনি আই-ওয়াশ বলে মনে করেন, পরিপূর্নভাবে কাটার পর দুতিন বছর চ্যানেল চালু থাকবে এরকম কোন পরিকল্পনা করে বালু কাটা হচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত হুমকীর পড়ে যাচ্ছে পটুয়াখালী ঢাকা-নৌরুট সহ আগামীদিনের সম্ভাবনাময় পায়রা বন্দরের নৌরুট। এদিকে এ লঞ্চগুলি ডুবোচড়ে আটকে যাওয়ায় ঢাকা পৌছতে অনেক বিলম্ব হওয়ায় যাত্রীসাধারনকে ঢাকায় সদরঘাটে নেমে গন্তব্যে পৌছতে যানজটের ভোগান্তীর শিকার হতে হয়।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী নদীবন্দরের কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান, এ মৌসুমে নাব্যতা সঙ্কটের কারনে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।সমস্যা সমাধানের লক্ষে বিআইডবিøউটিএর প্রকৌশল বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালীতে এসেছিলেন, কারখানা নদীতে বিভাগীয় আরও অতিরিক্তি একটি ড্রেজার গত ৭ জানুয়ারী থেকে কাজ শুরু করছে, এ ছাড়াও পটুয়াখালী নদীবন্দর সংলগ্ন এলাকার জন্যও আরও একটি ড্রেজার আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ